News Bangladesh

|| নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১১:৩৭, ২২ মার্চ ২০১৫
আপডেট: ১৯:১২, ১৭ জানুয়ারি ২০২০

১০ সমস্যায় বস্তিবাসী দারিদ্র্য মুক্ত হচ্ছে না

১০ সমস্যায় বস্তিবাসী দারিদ্র্য মুক্ত হচ্ছে না

ঢাকা:  ১০ সমস্যার কারণে বস্তিবাসী নিজেদের দারিদ্র্য মুক্ত করতে পারছে না বলে জানিয়েছে যুক্তরাজ্যের সাসেক্স বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন প্রতিষ্ঠান (আইডিএস)।

রোববার রাজধানীর একটি হোটেলে একশনএইড-বাংলাদেশ ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সহায়তায়  আইডিএস ‘নগর জনপদে অপ্রাতিষ্ঠানিক কাজ ও জীবনমান’ গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করে।


ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে সাসেক্স বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন প্রতিষ্ঠানের ফেলো ড. ডলফ টি লিনটেলো বলেন, “গবেষণা করতে গিয়ে  দেখেছি, নগর বস্তিবাসীদের জীবনমান অত্যন্ত খারাপ। তাদের জীবনমান উন্নয়নে সরকারের কোন উদ্যোগ নেই। জীবন বাঁচাতে বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষার মত মৌলিক চাহিদা পূরণে সরকারের কাছ থেকে কোনো সহযোগিতা পান না বস্তিবাসীরা।”

সুপেয় পানির অভাব, ল্যাট্রিন সুবিধা না থাকা, বাসস্থলে থাকার অনিশ্চয়তা, শিশুদের বিদ্যালয়ে যাওয়ার সুযোগ না থাকা, সুরক্ষা ও নিরাপত্তার অভাবের মত ১০টি বিষয়ের কারণে মানসম্পন্ন জীবন অর্জনে ব্যর্থ হচ্ছেন বস্তিবাসীরা। এই ১০টি অগ্রাধিকার পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় বস্তিবাসীরা দারিদ্র্য থেকে মুক্ত হতে পারছে না। নগর বাস্তিবাসীদের সমস্যা সমাধানে সরকারের নীতি ও  পরিকল্পনা না থাকায় এমন অবস্থা বলে গবেষণা তথ্যে উঠে এসেছে।

জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ও ভারতে ২০১৪ সালে ‘নগর জনপদে অপ্রাতিষ্ঠানিক কাজ ও জীবনমান’ বিষয়ে গবেষণাটি পরিচালিত হয়। বাংলাদেশের বগুড়া, চট্টগ্রাম ও ঢাকা নগরীর সাতটি বস্তিতে গবেষণার জন্য জরিপ করা হয়। জরিপ ও দলীয় আলোচনার মাধ্যমে ৭০৯ জন পুরুষ এবং ৭৫৫ জন নারীর নিকট থেকে এ গবেষণার তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।


অনুষ্ঠানের সঞ্চালক একশনএইড-বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ্ কবির বলেন, “ঘরে থাকতে পারবে কি না, খাবার জুটবে কিনা, সন্তান শিক্ষা পাবে কি না তা নিয়েই চিন্তার অন্ত নেই বস্তিবাসীদের। তাদের স্বপ্ন দেখার সুযোগ নেই। ভবিষ্যৎ বলতেও কিছু নেই। গবেষণার মাধ্যমে আমরা সেখানকার পরিস্থিতি তুলে এনেছি। এখন সরকার যদি পরিকল্পনা ও নীতির মাধ্যমে উদ্যোগ নেয়, তবে বস্তিবাসীর জীবনমানের উন্নয়ন হবে।”

অনুষ্ঠানের সভাপতি তত্ত্ববধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এম হাফিজউদ্দিন খান বলেন, “দারিদ্র দূরীকরণে সরকারের যতো পরিকল্পনা, নীতি, কৌশল সব পল্লী বা গ্রামকেন্দ্রিক। নগরের দারিদ্র্য দূর করতে সরকারের কোনো পরিকল্পনা ও প্রচেষ্টা নেই।”

সেন্টার ফর আরবান স্টাডিজের কোষাধ্যক্ষ ড. সালমা শাফি বলেন, “বস্তিবাসীদের সেবা নেওয়ার জন্য কোনো জায়গা নেই। সরকারের উচিৎ ছিল তাদের কাছে সেবা নিয়ে যাওয়া। সরকার এখনও সে নীতি নিতে পারেনি।”

গবেষণায় দেখা যায়, শহরের বস্তিতে বসবাসরত এই মানুষগুলো বেশিরভাগই যেমন অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমের সাথে জড়িত, তেমনি এদের অল্প-বিস্তর পাওয়া সেবাগুলো তারা পায় অপ্রাতিষ্ঠানিক উৎস থেকে। ফলে তাদের বেশি পয়সা দিয়ে মৌলিক সেবাসমূহ কিনতে হয়, বাধ্য হয়েই। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বস্তিবাসীরা থাকে সরকারি খাস জমিতে যা কি না কোনো প্রভাবশালী ব্যক্তির আয়ত্বে থাকে। তাই বাসস্থান, বিদ্যুৎ, পানি পেতে তাদের জমির মালিকের সাথে মৌখিক চুক্তিতে যেতে হয় চড়া দামে। এতে জীবনযাত্রার খরচ বেড়ে যায়। ফলে তারা দারিদ্র্য থেকে মুক্তি পায় না।”

গবেষণার নীতিগত ফলাফল তুলে ধরে একশনএইড-বাংলাদেশের পরিচালক ড. তারিকুল ইসলাম বলেন, “বস্তিবাসীর জীবনমান উন্নয়নে তাদের প্রয়োজনীয় অগ্রাধিকারগুলোকে গুরুত্ব দিতে হবে।”

নিউজবাংলাদেশ.কম/টিআইএস/কেজেএইচ
 

নিউজবাংলাদেশ.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়