News Bangladesh

|| নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১১:৩২, ১৯ মার্চ ২০১৫
আপডেট: ০২:২৯, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০

আম্পায়ার ও ভারতের কাছে টাইগারদের হার

আম্পায়ার ও ভারতের কাছে টাইগারদের হার

ঢাকা: আম্পায়াররা যখন প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়ান, তখন ম্যাচের রাশ ধরে রাখাটা কঠিন। কারণ সেটা খেলোয়াড়দের আত্মবিশ্বাস নাড়িয়ে দেয়। বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে বিশ্বকাপের দ্বিতীয় কোয়ার্টার ফাইনালে ‘দুই প্রতিপক্ষ’ ভারত ও আম্পায়ারের বিপক্ষে পেরে ওঠেনি মাশরাফি মুর্তজা বাহিনী। হেরে গেছে ১০৯ রানের ব্যবধানে। ফলে সেমি ফাইনালে খেলার স্বপ্ন অধরাই থাকল কোটি বাংলাদেশির।

একটা দলের সবচেয়ে বড় প্রতিপক্ষ ভাবা হচ্ছিল আত্মতুষ্টি। অন্য দলটির প্রতিপক্ষ পুরনো ইতিহাস। একটা দলকে সম্ভাব্য চ্যাম্পিয়ন। অন্য দলটি টুর্নামেন্টের চিরআন্ডারডগ। কিন্তু বৃহস্পতিবারসীয় মহারণে ম্যাচ মাঠে গড়াতেই এসব কথা ফাঁপাবুলি বলে মনে হতে শুরু করল। ম্যাচের আয়ু বাড়ার সাথে সাথেই বল হতে উজ্জ্বল হয়ে উঠছিলেন রুবেল হোসেন-তাসকিন আহমেদরা। কিন্তু এই বিষয়টি যেন মেনে নিতে পারছিলেন না আম্পায়াররাও। তাই ভারতের ব্যাটিংয়ের সময় মাশরাফি পরিষ্কার এলবিডব্লিউয়ের আবেদন করলেও আম্পায়ার ইয়ান গৌল্ড তা প্রত্যাখান করেন।

৪০তম ওভারে ফের একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। ভারতের রোহিত শর্মা তখন ৯০ রানে ব্যাট করছিলেন। রুবেল হোসেনের বলে ডিপ মিড উইকেট ক্যাচ ওঠালেন তিনি। দারুণ একটা ক্যাচ নিলেন ইমরুল কায়েস। কিন্তু কী আশ্চর্য ‘নো’ বল কল করলেন ইয়ান গৌল্ড। বিস্মিত বাংলাদেশি ক্রিকেট ভক্তরা। বিশ্ব বাকি ক্রিকেট বিশ্বও। শুধু আম্পায়াররা ছাড়া! শেষ পর্যন্ত রায়না ও রোহিতের ওই দুটি ঘটনাই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে আবির্ভূত হয়। কেননা এক বার করে জীবন পেয়ে রোহিত ১৩৭ আর রায়না ৬৫ রান করেন।

এই দুই ইনিংস প্রথমে ধুকতে থাকা ভারতের ব্যাটিংয়ে অক্সিজেন সরবরাহ করে। ফলে স্লোক ওভারে দশের বেশি রান রেটের দেখা পায় টিম ইন্ডিয়া। এতে করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ৩০২ রান সংগ্রহ করে ধোনি বাহিনী। ১২৬ বলে ১৩৭ রান করে তাসকিনের বলে বোল্ড হন রোহিত। ৫৭ বলে ৬৫ রান করা রায়নাকে ফেরান মাশরাফি। দলটির পক্ষে তৃতীয় সর্বোচ্চ ৩০ রান এসেছে শিখর ধাওয়ানের ব্যাট থেকে। ৬৯ রান দিয়ে তাসকিন ৩টি উইকেট শিকার করেন। খালি হাতে ফেরেননি মাশরাফি, সাকিব ও রুবেলও।

এরপর ৩০৩ রানের পাহাড় টপকাতে শুরুটা যেমন হওয়ার দরকার ছিল তা করতে পারেনি বাংলাদেশ। ভালো কিছুর স্বপ্ন দেখিয়েও শীতের সকালের শিশিরের মতো শুরুতেই ঝরে পড়েছেন তামিম ইকবাল। ইনিংসের সপ্তম ওভারে ২৫ বলে ২৫ রান করে উমেশ যাদবের শিকার হন তিনি। এক বল বাদে সৌম্য সরকারের শিশুতোষ এক ভুলে রান আউটে সাজঘরে ফেরেন ইমরুল কায়েসও (৫)। দলের ৩৩ রানে পরপর বলে দুই উইকেট হারানোর পর আশা দেখাচ্ছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। কিন্তু তাকেও থামতে হয়েছে দ্রুতই।

ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টানা দুই সেঞ্চুরি করা ব্যাটসম্যান শিখর ধাওয়ানের দুর্দান্ত এক ক্যাচে সাজঘরে ফেরেন। যদিও মোহাম্মদ সামির করা ইনিংসের ১৭ ওভারের শেষ বলে রিয়াদের (২১) ওই ক্যাচ নিয়ে যথেষ্ঠ বিতর্ক আছে। তবে আউটের থেকেও বড় বিষয় হলো ওই আউটটি বাংলাদেশের অবশিষ্ট আত্মবিশ্বাসটুকুও যেন কেড়ে নেয়। সেজন্য গ্রুপ পর্বে ধারাবাহিকভাবে পারফর্ম করে আসা মিডল অর্ডার প্রয়োজনীয় প্রতিরোধ গড়তে পারেনি। সৌম্য দলীয় ৯০ রানে মহেন্দ্র ধোনির দুর্দান্ত এক ক্যাচে আউট হওয়ার পর সাকিব আল হাসানও ক্লিক করতে পারেননি। সৌম্য ২৯ আর সাকিব ১০ রান করেন।

স্কোরবোর্ডে আর ৩৫ রান যোগ করতেই আউট মুশফিকুর রহিমও (২৭)। ১৩৯ রানের সময়। এরপর সপ্তম উইকেটে নাসির হোসেন ও সাব্বির রহমান ৫০ রানের পার্টনারশিপ উপহার দেন। যা বাংলাদেশকে মোটামুটি সম্মানজনক একটা সংগ্রহের পথে টেনে নিয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ ৪৫ ওভারে ১৯৩ রানে অলআউট হয়। লোয়ার অর্ডারে সাব্বিরের ব্যাট থেকে এসেছে ৩০ রান। ভারতের উমেশ যাদব চারটি উইকেট শিকার করেন। দুটি করে উইকেট গেছে মোহাম্মদ সামি ও রবীন্দ্র জাদেজার দখলে।

নিউজবাংলাদেশ.কম/এফকে/এজে

নিউজবাংলাদেশ.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়