News Bangladesh

জেলা সংবাদদাতা || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৬:৩২, ৯ নভেম্বর ২০২৫
আপডেট: ১৬:৪৯, ৯ নভেম্বর ২০২৫

সোনাদিয়া দ্বীপে জীববৈচিত্র্য ফিরিয়ে আনতে সরকারের উদ্যোগ

সোনাদিয়া দ্বীপে জীববৈচিত্র্য ফিরিয়ে আনতে সরকারের উদ্যোগ

ছবি: সংগৃহীত

ছোট্ট দ্বীপ সোনাদিয়া- আয়তন মাত্র ৯ বর্গকিলোমিটার। কক্সবাজার শহর থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে বঙ্গোপসাগরের মোহনায় অবস্থিত এ দ্বীপে একসময় ছিল লাল কাঁকড়ার সারি, ডিম পাড়তে আসা মা কচ্ছপ, আর প্যারাবনে শতাধিক প্রজাতির পাখির কোলাহল। এখন সেই সৌন্দর্য অনেকটাই হারিয়ে গেছে।

দ্বীপের হারানো রূপ ও জীববৈচিত্র্য ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ‘প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও জলবায়ু সহনশীলতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়, পরিবেশ অধিদপ্তর এবং বন অধিদপ্তরের সক্ষমতা বৃদ্ধি’ প্রকল্পের আওতায় সোনাদিয়া দ্বীপে শুরু হয়েছে পুনর্গঠন কার্যক্রম।

এ উদ্যোগটি পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের বিশেষ আগ্রহে নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের অংশ হিসেবে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ, খালের মুখ ও বাঁধ অপসারণ, জোয়ারের পানি প্রবাহ নিশ্চিত, বালিয়াড়ি পুনরুদ্ধার ও সৈকত সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হবে। পাশাপাশি কেওড়া, কেয়া, নিশিন্দা, নারকেল ও তালগাছসহ ম্যানগ্রোভ ও নন-ম্যানগ্রোভ গাছের চারা রোপণ করা হবে।

পরিদর্শন শেষে পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের উপপরিচালক খন্দকার মাহমুদ পাশা বলেন, ‘দ্বীপের হারানো পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য ফিরিয়ে আনতে আমরা কাজ করছি। স্থানীয়দের জীবনমান উন্নয়নেও কী করা যায়, সে বিষয়ে পরামর্শ নেওয়া হয়েছে।’

পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, একসময় সোনাদিয়ায় ছিল ৫৬৭ প্রজাতির উদ্ভিদ, ১৫২ প্রজাতির শামুক, ২১ প্রজাতির কাঁকড়া, ২০৭ প্রজাতির মাছ ও ২০৬ প্রজাতির পাখি। জলবায়ু পরিবর্তন ও মানবসৃষ্ট কারণে এখন এ জীববৈচিত্র্যের বড় অংশ বিলুপ্তির মুখে।

নেচার কনজারভেশন ম্যানেজমেন্টের (নেকম) কক্সবাজার ব্যবস্থাপক আবদুল কাইয়ূম জানান, ২০২০ সাল পর্যন্ত সোনাদিয়ায় বছরে ১০ হাজারের বেশি কচ্ছপের ডিম সংগ্রহ হতো, যা এখন নেমে এসেছে প্রায় এক হাজারে। প্লাস্টিক বর্জ্য ও পর্যটকের অনিয়ন্ত্রিত আনাগোনা এর বড় কারণ।

বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের তথ্য বলছে, তিন দশক আগে যে জীববৈচিত্র্য ছিল, তার ৯০ শতাংশ ইতোমধ্যেই ধ্বংস হয়ে গেছে।

আরও পড়ুন: প্রকৃতি রক্ষায় যুক্ত হবে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা: রিজওয়ানা হাসান

পরিবেশবাদীরা সরকারের নতুন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। ইয়ুথ এনভায়রনমেন্ট সোসাইটি (ইয়েস) কক্সবাজারের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মুজিবুল হক বলেন, ‘বিশ্বে মাত্র ৩০০টির মতো চামচঠুঁটো কাদাখোঁচা পাখি আছে, যার একটি বড় অংশ একসময় দেখা যেত সোনাদিয়ায়। এখন সেই দৃশ্য বিরল। দ্বীপ রক্ষায় সরকারের পদক্ষেপ অবশ্যই প্রশংসনীয়।’

নিউজবাংলাদেশ.কম/এসবি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়