News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১১:০৬, ৩০ অক্টোবর ২০২৫

‘আসন্ন নির্বাচনে অপপ্রচার মোকাবিলায় ২ সেল গঠন’

‘আসন্ন নির্বাচনে অপপ্রচার মোকাবিলায় ২ সেল গঠন’

ফাইল ছবি

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি সংক্রান্ত উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়া অপপ্রচার ও মিথ্যা তথ্য মোকাবিলার জন্য দুটি নতুন সেল গঠনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে ছড়ানো অপপ্রচারের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য।

বুধবার (২৯ অক্টোবর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। বৈঠক শেষে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের ব্রিফিং দেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, বৈঠকে প্রধানত চারটি বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে — পদায়ন, কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ, নিরাপত্তা ইস্যু এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ডিসইনফরমেশন মনিটরিং। বৈঠকের একটি বড় উদ্বেগের বিষয় ছিল সোশ্যাল মিডিয়ায় কোনো অপপ্রচার ছড়ালে তা কীভাবে দ্রুত চিহ্নিত ও খণ্ডন করা যাবে। প্রায়শই অপতথ্য শনাক্ত করতে সময় লাগে, এবং ততক্ষণে ক্ষতি হয়ে যায়। এজন্য একটি সেন্ট্রাল ডিসইনফরমেশন মনিটরিং সেল এবং একটি সেন্ট্রাল কমিউনিকেশন সেল গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

শফিকুল আলম বলেন, শুধু শহর বা জেলা পর্যায়ে নয়, গ্রাম পর্যায়েও মানুষের কাছে ফ্যাক্টচেক করা তথ্য পৌঁছাতে হবে। এজন্য সচেতন প্রচার এবং দ্রুত প্রতিক্রিয়াকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।

অধ্যাপক ইউনূসের উদ্ধৃতিতে তিনি জানান, সোশ্যাল মিডিয়ায় অপপ্রচার আসবে। নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য দেশ-বিদেশ থেকে পরিকল্পিতভাবে বিভ্রান্তি ছড়ানো হবে। এআই ব্যবহার করে ছবি-ভিডিও তৈরি করে ছেড়ে দেওয়া হবে। তাই অপপ্রচার ছড়ানোর আগেই তা প্রতিহত করতে হবে।

আরও পড়ুন: ‘নির্বাচন বানচালের চেষ্টা, প্রস্তুত প্রশাসন ও নিরাপত্তা’

প্রেস সচিব আরও জানান, ইতোমধ্যে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় তথ্য মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়সহ অন্যান্য মন্ত্রণালয় কাজ শুরু করেছে।

বৈঠকে নির্বাচনী দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তাদের বদলি ও পদায়নের বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কর্মকর্তাদের দক্ষতা, এলাকার গুরুত্ব এবং পূর্বের নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের ইতিহাস অনুযায়ী বিভিন্ন এলাকায় বদলি ও পদায়নের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এছাড়া নির্বাচন কমিশন নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণও শুরু করেছে।

প্রেস সচিব বলেন, “কর্মকর্তাদের নিজ জেলা বা নিকটবর্তী জেলার কোনো প্রার্থী আত্মীয়-পরিজন হলে, তারা সেই নির্বাচনী এলাকায় দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থাকবেন। এছাড়া আগের তিনটি নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করা কর্মকর্তাদেরও বিরত রাখা হবে। যত দ্রুত সম্ভব পোস্টিং দেওয়ার মাধ্যমে তারা পর্যাপ্ত সময় পাবে প্রস্তুতি নেওয়ার এবং প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ শুরু করার জন্য।”

অধ্যাপক ইউনূস বৈঠকে বলেছেন, আগামী নির্বাচন সুন্দর ও উৎসবমুখর করতে হলে মানুষের কাছে নির্বাচনী নীতিমালা, ভোটকেন্দ্রের নিয়ম, ভোট প্রদান পদ্ধতি এবং কোথাও বিশৃঙ্খলা হলে কী করতে হবে—এসব বিষয়ে সচেতনতা পৌঁছানো প্রয়োজন।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান, মুখ্য সচিব মো. সিরাজ উদ্দিন মিয়া, নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদ, স্বরাষ্ট্র সচিব নাসিমুল গণি, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম, র‌্যাবের মহাপরিচালক এ কে এম শহিদুর রহমান, কোস্টগার্ড, আনসার এবং দেশের প্রধান গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআই, ডিজিএফআই ও এসবির প্রতিনিধি বৃন্দ

এই বৈঠকের মাধ্যমে নির্বাচন সংক্রান্ত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচার ও মিথ্যা তথ্য মোকাবিলায় একটি কেন্দ্রীয় কাঠামো তৈরির মাধ্যমে কার্যকর মনিটরিং ও তথ্য প্রচারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, যা দেশের শহর ও গ্রামাঞ্চলে জনগণকে সরাসরি তথ্য পৌঁছাতে সাহায্য করবে।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়