News Bangladesh

আন্তর্জাতিক ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৩:০৫, ৩০ অক্টোবর ২০২৫
আপডেট: ১৩:০৬, ৩০ অক্টোবর ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের শুল্ক হ্রাস ও এক বছরের খনিজ চুক্তি সম্পন্ন

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের শুল্ক হ্রাস ও এক বছরের খনিজ চুক্তি সম্পন্ন

ছবি: সংগৃহীত

দক্ষিণ কোরিয়ার বুসান নগরে অনুষ্ঠিত শীর্ষ বৈঠকের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে এক বছরের বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। এই চুক্তি স্বয়ংক্রিয়ভাবে নবায়নযোগ্য হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। 

ট্রাম্প স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, আমাদের চুক্তি হয়ে গেছে।

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) বুসানে ট্রাম্প ও চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এর মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। 

বৈঠকের আনুষ্ঠানিক আলোচনায় যাওয়ার আগে দুই নেতার মধ্যে সৌজন্যমূলক আলাপ এবং কূটনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ কথোপকথন হয়েছে। ট্রাম্প ও শি একে অপরকে পুনরায় সাক্ষাৎ করার জন্য স্বাগত জানান। 

শি জিনপিং বলেন, আপনাকে আবার দেখে খুবই ভালো লাগছে। আপনার পুনর্নির্বাচনের পর আমরা ফোনে তিনবার কথা বলেছি, একে অপরকে বেশ কয়েকটি চিঠি পাঠিয়েছি এবং সবসময় ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ বজায় রেখেছি। 

তিনি আরও যোগ করেন, আমাদের দুই দেশের ভিন্ন জাতীয় বাস্তবতা রয়েছে। ফলে সব বিষয়ে একই দৃষ্টিভঙ্গি থাকার কথা নয়। বিশ্বের শীর্ষ দুই অর্থনীতির মধ্যে মাঝে মাঝে বৈরিতা হওয়াটাও স্বাভাবিক।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানিয়েছেন, চীনের পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক ৫৭ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৪৭ শতাংশ করা হয়েছে। এছাড়া চীনের ফেন্টানিল-সম্পর্কিত শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশ নামিয়ে আনা হয়েছে, যা অবিলম্বে কার্যকর হবে। 

তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি যে শি জিনপিং মারাত্মক মৃত্যুর প্রবাহ বন্ধ করতে কঠোর হবেন। ফেন্টানিল একটি ল্যাব-নির্মিত সিনথেটিক অপিওয়েড, যা হেরোইনের তুলনায় কয়েক দশ গুণ শক্তিশালী। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফেন্টানিলের অপব্যবহার প্রতিবছর হাজার হাজার আমেরিকানকে হত্যা করছে।

আরও পড়ুন: ক্যারিবীয় দ্বীপে ঘূর্ণিঝড় মেলিসার তাণ্ডবে নিহত অন্তত ৩০

চীনের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, তারা আন্তর্জাতিক মানের চেয়েও কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে, যাতে বিশাল ফার্মাসিউটিক্যাল সেক্টর থেকে মাদক ও তার উপাদান রপ্তানি কমানো যায়। ২০১৯ সালে বেইজিং ফেন্টানিলকে একটি নিয়ন্ত্রিত মাদক শ্রেণি হিসেবে নিয়ন্ত্রণে নেয়, যা সরাসরি চীনা ফেন্টানিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাহ উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়েছে।

দুপুরে বৈঠকের পর ট্রাম্প ঘোষণা করেন, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে দুর্লভ খনিজ সরবরাহ সংক্রান্ত এক বছরের চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। 

ট্রাম্প বলেন, সব দুর্লভ খনিজের বিষয়টি এখন মীমাংসিত এবং এটি পুরো বিশ্বের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, চীনের পক্ষ থেকে আর কোনো ‘রোডব্লক’ নেই। চুক্তিটি প্রতিবছর পুনর্বিবেচনা করা হবে।

ট্রাম্প জানিয়েছেন, আগামী এপ্রিল মাসে তিনি চীন সফর করবেন। এর পর শি জিনপিং যুক্তরাষ্ট্র সফর করবেন। এ ছাড়া চুক্তির অংশ হিসেবে বেইজিং আবার আমেরিকান সয়াবিন কেনা শুরু করবে এবং বিরল খনিজ রপ্তানি অব্যাহত রাখবে। এছাড়া চীনের ফেন্টানিলের অবৈধ বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করার শর্তও এতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

চলতি বছরের ২ এপ্রিল ট্রাম্প নির্বাহী আদেশে বিশ্বের ৫৭টি দেশের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেছিলেন। এরপর আলোচনার মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তি করতে তিন মাসের জন্য সিদ্ধান্ত স্থগিত করা হয়েছিল। চীন ও ভারতসহ গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি দেশের সঙ্গে চুক্তি তখনো হয়নি। এবার শুল্ক বিরতি এবং দ্বিপক্ষীয় চুক্তির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র চীনের সঙ্গে দ্রুত সমঝোতায় পৌঁছানোর চেষ্টা করছে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, চীনের ওপর শুল্ক কমানোর সিদ্ধান্ত এবং দুর্লভ খনিজ চুক্তি দুই দেশের বাণিজ্য উত্তেজনা প্রশমনে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি। এছাড়া এই চুক্তি বিশ্বের অর্থনীতির জন্যও প্রভাবশালী হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়