ভাষাসংগ্রামী আহমদ রফিক আর নেই
ভাষাসংগ্রামী আহমদ রফিক। ফাইল ছবি
ভাষাসংগ্রামী, প্রাবন্ধিক ও সংস্কৃতিকর্মী আহমদ রফিক আর নেই।
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) রাত ১০টা ১২ মিনিটে রাজধানীর বারডেম হাসপাতালে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৬ বছর।
দীর্ঘদিন বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন তিনি। ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ক্রনিক কিডনি ফেইলিওর, আলঝেইমারস, পারকিনসন্স, ইলেকট্রোলাইটস ইমব্যালেন্স, বেডসোর ও ফুসফুসের সংক্রমণে আক্রান্ত হয়ে সম্প্রতি লাইফ সাপোর্টে ছিলেন।
তার স্বাস্থ্য সম্পর্কে নিয়মিত খোঁজ রাখছিলেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ইসমাইল সাদী। চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে তিনি জানান, আহমদ রফিক বারডেম হাসপাতালে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন।
এর আগে, গত ১১ সেপ্টেম্বর আহমদ রফিককে হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ১২ সেপ্টেম্বর সেখানেই তিনি কাটান জীবনের শেষ জন্মদিন—তার ৯৭তম জন্মবার্ষিকী। এর আগে এক মাসে দুই দফা ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। গত ২৯ সেপ্টেম্বর তাকে বারডেম হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
১৯২৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শাহবাজপুর গ্রামে জন্ম নেন আহমদ রফিক। মুন্সিগঞ্জের হরগঙ্গা কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাসের পর ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়নে। ফজলুল হক হলে আবাসিক সুবিধা না পেয়ে পরে ভর্তি হন ঢাকা মেডিকেল কলেজে।
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের সময় তিনি ছিলেন মেডিকেলের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। ফজলুল হক হল, ঢাকা হল ও মিটফোর্ড মেডিকেলের ছাত্রদের সঙ্গে আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন। ১৯৫৪ সালে ভাষা আন্দোলনের কারণে ঢাকার মেডিকেল কলেজের ছাত্রদের মধ্যে একমাত্র তার নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়। ১৯৫৫ সালের শেষদিকে প্রকাশ্যে এসে পড়াশোনা শেষ করে এমবিবিএস ডিগ্রি অর্জন করলেও চিকিৎসা পেশায় যুক্ত হননি।
আরও পড়ুন: বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’, আঘাত হানতে পারে যেসব এলাকায়
লেখালেখিতেই নিজেকে সম্পূর্ণভাবে নিয়োজিত করেন আহমদ রফিক। ১৯৫৮ সালে প্রকাশিত হয় তার প্রথম প্রবন্ধের বই ‘শিল্প সংস্কৃতি জীবন’। সাহিত্য ও সংস্কৃতির নানা ধারা নিয়ে অর্ধশতাব্দীরও বেশি সময় কাজ করেছেন তিনি। পেয়েছেন একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, রবীন্দ্রত্ত্বাচার্য উপাধিসহ বহু সম্মাননা।
বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির জন্য তার অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এসবি








