ধেয়ে আসছে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়

দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে একটি শক্তিশালী নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়েছে, যা আগামী ১২ থেকে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু বিষয়ক গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ এই আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন। 

বুধবার (১ অক্টোবর) ফেসবুকের ভেরিফায়েড আইডি থেকে একটি পোস্টে বিস্তারিত তথ্য শেয়ার করেছেন তিনি।

মোস্তফা কামাল পলাশের পোস্ট অনুযায়ী, আমেরিকার নৌবাহিনী কর্তৃক পরিচালিত জয়েন্ট টাইফুন ওয়ার্নিং সেন্টার এই নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেবার সম্ভাবনা সম্পর্কে সতর্কতা জারি করেছে। 

তবে তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন যে, ভারত ও বাংলাদেশের উপরে এখনও বর্ষা মৌসুম চলমান থাকায় বঙ্গোপসাগরে পূর্ণাঙ্গ ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হওয়ার জন্য অনুকূল পরিবেশ এখনও গড়ে ওঠেনি। ফলে নিম্নচাপটি সম্ভাব্যভাবে গভীর নিম্নচাপ হিসেবে অন্ধ্রপ্রদেশ ও ওড়িশা রাজ্যের উপকূল অতিক্রম করে স্থলভাগে প্রবেশ করতে পারে।

গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে আগামী সোমবার (৬ অক্টোবর) পর্যন্ত বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, ত্রিপুরা ও মেঘালয় রাজ্যে ভারি বৃষ্টির প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। পলাশ আরও জানিয়েছেন, যদি নিম্নচাপটি রেকর্ড ভঙ্গ করে শেষ পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়, তবে এর নাম হবে ‘শক্তি’।

আরও পড়ুন: দুর্গাপূজায় সারাদেশে বৃষ্টি, উপকূলে ঝড়ো হাওয়ার আশঙ্কা

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আগামী ৭২ ঘণ্টায় রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও ভারি (৪৪–৮৮ মি.মি./২৪ ঘণ্টা) থেকে অতি ভারি (>৮৮ মি.মি./২৪ ঘণ্টা) বর্ষণ হতে পারে। এর ফলে চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসের সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি, ভারি বৃষ্টির কারণে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে অস্থায়ী জলাবদ্ধতা দেখা দিতে পারে।

ভারি থেকে অতিভারি বৃষ্টি এবং ঝোড়ো হাওয়ার আশঙ্কায় দেশের চারটি সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সতর্কতা জারি করা হয়েছে। 

আবহাওয়া অধিদপ্তরের সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, পশ্চিম মধ্য-বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় সুস্পষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্রবন্দরগুলোর ওপর দিয়ে ভারি থেকে অতিভারি বৃষ্টি এবং দমকা/ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

এই অবস্থায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি, উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করার জন্য সতর্ক করা হয়েছে।