News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ২১:৫৮, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

জলবায়ু সংকটের প্রভাব বিশ্বকে জানাতে হবে: প্রেস সচিব

জলবায়ু সংকটের প্রভাব বিশ্বকে জানাতে হবে: প্রেস সচিব

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব প্রতিনিয়ত দেশের প্রতিটি খাতকে আঘাত করলেও সেই বাস্তবতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যথাযথভাবে পৌঁছায় না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মো. শফিকুল আলম। 

তিনি বলেন, এই ঘাটতির ফলে প্রয়োজনীয় তহবিল সংগ্রহ ও আন্তর্জাতিক সমর্থন পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে।

সোমবার (০৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) অডিটোরিয়ামে আয়োজিত ‘নেভেগেটিং ক্লাইমেট ফাইন্যান্স: মিডিয়া রিপোর্টিং’ শীর্ষক তিন দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। কর্মশালাটি যৌথভাবে আয়োজন করেছে পিকেএসএফ ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। সভাপতিত্ব করেন পিকেএসএফ চেয়ারম্যান জাকির আহমেদ খান। আরও বক্তব্য রাখেন ইআরডি সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী, পিকেএসএফ ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফজলুল কাদের এবং ইআরডি অতিরিক্ত সচিব একেএম সোহেল।

প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশ। আমাদের ১৮ কোটি মানুষ সরাসরি জলবায়ু ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। সাইক্লোন, বন্যা, জলোচ্ছ্বাস ও নোনাজলের বিস্তার প্রতিনিয়ত বাড়ছে। কিন্তু আমাদের নিজেদের গল্পগুলো আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে পৌঁছায় না।

তিনি উল্লেখ করেন, সিলেটের পানির সংকট, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের লবণাক্ততা এবং ভবদহের জলাবদ্ধতা জলবায়ু পরিবর্তনের সরাসরি প্রভাব। ভবদহে কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে থাকে, কিন্তু মৌসুম শেষে এই সংকট সংবাদ থেকে হারিয়ে যায়। 

তিনি বলেন, এভাবে হাজারো গল্প রয়েছে যেগুলো আমাদের সংবাদ কভারেজের বাইরে থেকে যাচ্ছে।

আরও পড়ুন: দুর্যোগ মোকাবিলায় বছরে ২৯ বিলিয়ন ডলার দরকার: অর্থ উপদেষ্টা

শফিকুল আলম আরও বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব শুধু প্রাকৃতিক দুর্যোগেই সীমাবদ্ধ নয়; বরং স্বাস্থ্য, অর্থনীতি ও সামাজিক অস্থিতিশীলতার সঙ্গেও এটি জড়িত। উদাহরণ হিসেবে তিনি ডেঙ্গুর বিস্তার, মাতৃস্বাস্থ্য সংকট ও উর্বরতার হার পরিবর্তনের কথা তুলে ধরেন।

সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, জলবায়ু সাংবাদিকতা এখন এক গুরুত্বপূর্ণ শাখা। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সাংবাদিক বিল ম্যাককিবেন ও এলিজাবেথ কোলবার্টের মতো অনুসন্ধানী প্রতিবেদন তৈরি করতে হবে আমাদের সাংবাদিকদের।

অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, জলবায়ু সংকট মোকাবেলায় বিজ্ঞানী, নীতিনির্ধারক, প্রতিষ্ঠান, অর্থায়নকারী এবং জনগণের সমন্বিত উদ্যোগ ছাড়া কার্যকর সমাধান সম্ভব নয়। 

তিনি জানান, বাংলাদেশে প্রতিবছর জলবায়ু অভিযোজন ও দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রায় ৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রয়োজন, কিন্তু আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর কাছ থেকে প্রয়োজনীয় অর্থ সংগ্রহ অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়েছে।

তিনি বলেন, স্থানীয় জনগণ দুর্যোগে প্রথম সাড়া দেয়। তাদের অভিজ্ঞতা ও সক্ষমতা কাজে লাগাতে হবে।

ড. সালেহউদ্দিন আরও বলেন, জাপানে স্কুল পর্যায় থেকেই দুর্যোগ প্রস্তুতির শিক্ষা দেওয়া হয়। আমাদেরও এমন উদ্যোগ নিতে হবে।

ইআরডি সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী বলেন, বাংলাদেশের জলবায়ু ক্ষয়ক্ষতির গল্পগুলো আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে তুলে ধরতে হবে। এখানে সাংবাদিকদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি জানান, ইআরডি উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে সেতুবন্ধনের কাজ করে এবং সঠিক তথ্য ও প্রতিবেদন আন্তর্জাতিক আলোচনায় প্রভাব ফেলে।

এই তিন দিনব্যাপী কর্মশালায় দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমের ৬০ জন সাংবাদিক অংশগ্রহণ করছেন। কর্মশালার উদ্দেশ্য হলো জলবায়ু অর্থায়ন ও রিপোর্টিং বিষয়ে সাংবাদিকদের দক্ষতা বৃদ্ধি করা এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের জলবায়ু সংকটের গল্পগুলো তুলে ধরার সক্ষমতা তৈরি করা।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়