News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১০:০১, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

যাত্রাবিরতিতে ছাগল-কাণ্ডের মতিউরের ‘গোপন বৈঠক’, ১১ পুলিশ বরখাস্ত

যাত্রাবিরতিতে ছাগল-কাণ্ডের মতিউরের ‘গোপন বৈঠক’, ১১ পুলিশ বরখাস্ত

ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক কর্মকর্তা মতিউর রহমানকে আদালত থেকে কারাগারে ফেরত আনার পথে এক ব্যক্তির সঙ্গে গোপন বৈঠকের সুযোগ করে দেওয়ার অভিযোগে কিশোরগঞ্জ জেলা পুলিশের এক এসআই ও ১০ কনস্টেবলকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

শনিবার (০৬ সেপ্টেম্বর) কিশোরগঞ্জ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরীর অফিস আদেশের মাধ্যমে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। 

বরখাস্ত হওয়া পুলিশ সদস্যরা হলেন—এসআই আবুল কাশেম এবং কনস্টেবল মনিরুজ্জামান, মো. কবির হোসেন, ইমরান, নির্জন খান, শামীম আলম, মো. রনি হোসেন, শরীফুল ইসলাম, তানভীর রহমান, মো. আবু সাইদ মিয়া ও রবীন্দ্র দাস। তাদের সবাইকে কিশোরগঞ্জ পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে।

গত বছর কোরবানি ঈদের আগে একটি ছাগলকে ১৫ লাখ টাকায় কেনা দেওয়ার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর সাবেক এনবিআর কর্মকর্তা মতিউর রহমানকে গত ১৪ জানুয়ারি স্ত্রীসহ গ্রেফতার করা হয়। দুর্নীতির মামলার শুনানির জন্য গত ১২ আগস্ট তাকে কিশোরগঞ্জ কারাগার থেকে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে হাজির করা হয়।

শুনানি শেষে ফিরতি পথে গাড়িটি নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সৈয়দনগর এলাকায় অবস্থিত ‘নিরালা হাড্ডি হোটেল অ্যান্ড রেস্তোরাঁ’-য় যাত্রাবিরতির জন্য থামে। 

অভিযোগ অনুযায়ী, পুলিশ সদস্যরা ওই রেস্তোরাঁর একটি কেবিনে একটি ব্যক্তির সঙ্গে মতিউর রহমানের গোপন বৈঠকের সুযোগ করে দেন এবং বিভিন্ন সুবিধার শর্তে উৎকোচ গ্রহণ করেন।

আরও পড়ুন: ক্যাসিনোকাণ্ডে আলোচিত সেলিম প্রধানসহ গ্রেপ্তার ৯

ঘটনার সঠিকতা জানার পর অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটি তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দাখিল করে। 

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, হাজতি মতিউর রহমানকে আদালতে হাজিরা দেওয়ার পর ফেরত আনার পথে স্কর্ট দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরা তাকে আলাদা কক্ষে বসিয়ে খাবার খাওয়ান, অন্য পুলিশ সদস্যরা সাধারণ স্থানে খাবার গ্রহণ করেন। এটি স্পষ্টভাবে স্কর্ট ডিউটির শৃঙ্খলার পরিপন্থি এবং ইনচার্জের দায়িত্ব পালনে শৈথিল্যের প্রমাণ বহন করে। যদিও অনিয়ম প্রতিরোধ করার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও তারা তা করেননি।

অফিস আদেশে বলা হয়েছে, এই ধরনের কার্যকলাপ বিভাগীয় নিয়ম-শৃঙ্খলার পরিপন্থি, অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, অসদাচরণমূলক এবং জনসম্মুখে পুলিশের ভাবমূর্তিকে ক্ষুণ্ন করার শামিল। তাই পুলিশ রেগুলেশন অব বেঙ্গল ১৯৪৩ এর প্রবিধান ৮৮০ মোতাবেক এ পুলিশ সদস্যদের ‘চাকরি হতে সাময়িক বরখাস্ত’ করা হয়েছে। বরখাস্ত থাকা অবস্থায় তারা বিধি মোতাবেক বেতন ও ভাতাদি পাবেন, পাশাপাশি পুলিশ লাইন্সে সার্বক্ষণিক হাজিরা দিয়ে সাদা পোশাকে নিয়মিত রোলকল ও প্যারেডে অংশগ্রহণ করবেন।

কিশোরগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী বলেন, বিষয়টি জানার পরই তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি অনুসন্ধানে ঘটনার সত্যতা পেয়েছে। এ ভিত্তিতে পুলিশ সদস্যদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

জেল সুপার রিতেশ চাকমা জানান, সাবেক এনবিআর কর্মকর্তা মতিউর রহমানকে ১১ এপ্রিল কিশোরগঞ্জ কারাগারে আনা হয়। এর মধ্যে তাকে ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে তিনবার হাজির করা হয়েছে। সর্বশেষ তাকে ১২ আগস্ট হাজির করতে কিশোরগঞ্জ থেকে ঢাকায় নেওয়া হয়েছিল এবং একই দিন ফেরত আনা হয়। পরে ২৬ আগস্ট তাকে কিশোরগঞ্জ থেকে কাশিমপুর-২ কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তর করা হয়।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়