জিএম কাদের ও তার স্ত্রীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

ছবি: সংগৃহীত
জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের ও তার স্ত্রী শেরীফা কাদেরের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) ঢাকা মহানগর ভারপ্রাপ্ত সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক ইব্রাহিম মিয়া দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের প্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন।
দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, গত ১ সেপ্টেম্বর দুর্নীতির অভিযোগে চলমান অনুসন্ধান কর্মকর্তা ও দুদকের উপপরিচালক রেজাউল করিম আদালতে আবেদন করেন। সেই আবেদনের ভিত্তিতে আদালত এ আদেশ দেন।
দুদকের আবেদনে বলা হয়, জিএম কাদের ও তার স্ত্রী শেরীফা কাদেরের বিরুদ্ধে অবৈধ উপায়ে দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত বিপুল সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অনুসন্ধান চলছে। অভিযোগ সংশ্লিষ্ট গোলাম মোহাম্মদ কাদের ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে দেশের বিভিন্ন স্থানে এবং দেশের বাইরে স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ রয়েছে।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, তারা বিদেশে পালিয়ে স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ হস্তান্তরের চেষ্টা করছেন। বিদেশে পালালে অনুসন্ধান কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই তাদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া একান্ত প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: আপিল বিভাগে খালাস পেয়েছেন তারেক রহমানসহ সব আসামি
আদালতের আদেশে বলা হয়, অভিযুক্তরা দেশ ত্যাগ করলে অনুসন্ধান কার্যক্রম দীর্ঘায়িত বা ব্যাহত হতে পারে। অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তার প্রার্থিত মতে দরখাস্ত মঞ্জুরযোগ্য হওয়ায় জিএম কাদের ও তার স্ত্রী শেরীফা কাদেরের বিদেশ গমন নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা হলো। একই সঙ্গে বিশেষ পুলিশ সুপার (ইমিগ্রেশন-প্রশাসন), স্পেশাল ব্রাঞ্চ, বাংলাদেশ পুলিশ মালিবাগ, ঢাকাসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়।
দুদকের অভিযোগে আরও বলা হয়, ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর সংরক্ষিত নারী আসনে দলীয় মনোনয়ন দিতে ১৮ কোটি ১০ লাখ টাকার ঘুষ গ্রহণ করা হয়, যার মূল সুবিধাভোগী ছিলেন তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জিএম কাদের। চুক্তি অনুযায়ী অর্থ পরিশোধ না করায় অধ্যাপক মাসুদা এম রশীদ চৌধুরীকে দলীয় পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় এবং তার স্থলে জিএম কাদেরের স্ত্রী শেরীফা কাদের সংসদ সদস্য হন।
এছাড়া অভিযোগে বলা হয়, জিএম কাদের জালিয়াতির মাধ্যমে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হন এবং দলীয় পদ ও মনোনয়ন বাণিজ্যের মাধ্যমে বিপুল অর্থ সংগ্রহ করেন, যা পরে বিদেশে পাচার করা হয়। জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি ৩০১ সদস্যবিশিষ্ট হলেও বর্তমানে ৬০০ থেকে ৬৫০ জনকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা পদ বাণিজ্যের প্রমাণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে দাখিল করা হলফনামা অনুযায়ী, জিএম কাদেরের নামে নগদ ৪৯ লাখ ৮৮ হাজার টাকা, ব্যাংকে ৩৫ লাখ ৯৫ হাজার টাকা এবং ৮৪ লাখ ৯৮ হাজার টাকা মূল্যের একটি জিপ গাড়ি রয়েছে।
তার স্ত্রী শেরীফা কাদেরের নামে নগদ ৫৯ লাখ ৫৯ হাজার টাকা, ব্যাংকে ২৮ লাখ ৯ হাজার টাকা এবং ৮০ লাখ টাকার একটি জিপ গাড়ি রয়েছে। এছাড়া তার স্থাবর সম্পদের মধ্যে লালমনিরহাট ও ঢাকায় জমি ও ফ্ল্যাট অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি