বেআইনি ঘোষণার আগেই মঙ্গলসূত্র ত্যাগের অনুষ্ঠান শেষ!
গো-মাংস নিষিদ্ধের প্রতিবাদ জানাতে এবং হিন্দু বিবাহিত নারীদের ‘মঙ্গলসূত্র’ পরিধানকে দাসত্বের প্রতীক হিসেবে উল্লেখ করে তামিলনাডুতে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। তামিলনাডুর রাজধানী চেন্নাইতে আজ মঙ্গলবার এই অভিনব প্রতিবাদের আয়োজন করেছিল ‘দ্রাবিদাঢ় কাজাঘম’ নামে একটি সংগঠন। এদিকে, এই আয়োজনকে বেআইনি ঘোষণা করেছেন আদালত। এছাড়া, বেশ কয়েকটি হিন্দু সংগঠন এই অনুষ্ঠান আয়োজনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায়। সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়াতে পারে যুক্তি দেখিয়ে পুলিশও অনুষ্ঠানের অনুমতি বাতিল করে দেয়।
এর আগে, সোমবার সন্ধ্যায় মাদ্রাজ হাইকোর্টের একজন বিচারপতি দ্রাবিদাঢ় কাজাঘমের মত প্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব করা চলবে না উল্লেখ করে ওই নির্ধারিত অনুষ্ঠান হতে দিতে হবে বলে রায় দেন।
এই রায়ের বিরুদ্ধে তামিলনাডুর সরকার আপিল করলে জরুরি ভিত্তিতে দুই সদস্যের বিচারপতির বেঞ্চে মঙ্গলবার সকালেই শুনানির ব্যবস্থা করা হয়।
আদালতের নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে ধারণা করে দ্রাবিদাঢ় কাজাঘম আজ সকালেই ওই দম্পতিদের জড়ো করে মঙ্গলসূত্র ত্যাগের অনুষ্ঠান সেরে ফেলে। আদালতের রায় আসার আগেই স্থানীয় সময় সকাল পৌনে সাতটার দিকে অন্তত ২১জন মহিলা ওই অনুষ্ঠানে তাদের গলার মঙ্গলসূত্র খুলে ফেলেন। এর কিছুক্ষণ পর এই আয়োজনকে বেআইনি ঘোষণা করেন আদালত।
দ্রাবিদাঢ় কাজাঘম সংগঠনের প্রধান কে ভীরামনি বলেন, আমরা কোর্টের রায় উপেক্ষা করব না, তবে আমরা যে মত প্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব করার বিরোধী সেটাও জানিয়ে রাখতে চাই।
দ্রাবিদাঢ় কাজাঘম ঘোষণা করেছিল, গো-মাংস নিষিদ্ধের প্রতিবাদে ‘বিফ ব্যাঙ্কোয়েট’ বা গোমাংস ভোজের আয়োজন করা হবে এবং প্রায় ১৭০টি দম্পতির উপস্থিতিতে স্ত্রীরা তাদের মঙ্গলসূত্র খুলে ফেলবেন।
যুক্তিবাদী নেতা পেরিয়ারের আদর্শ প্রচার করে থাকে ‘দ্রাবিদাঢ় কাজাঘম’ নামের এই সংগঠনটি। মঙ্গলসূত্রকে হিন্দু ধর্মীয় রীতিতে বিবাহিত নারীদের শুভ হয় বলে একটি পবিত্র সুতোর মালা হিসেবে দেখা হয়ে থাকে। আজকের যুগে মঙ্গলসূত্র পরার প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে সম্প্রতি একটি তামিলনাডুর টেলিভিশন চ্যানেল বিতর্কের আয়োজন করা হলে ওই চ্যানেলের অফিসে বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। এই ঘটনার পরই দ্রাবিদাঢ় কাজাঘম মঙ্গলসূত্র ত্যাগের অনুষ্ঠান আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।
যুক্তিবাদী নেতা পেরিয়ারের আদর্শ প্রচার করে থাকে ‘দ্রাবিদাঢ় কাজাঘম’ নামের এই সংগঠনটি। তাদের বক্তব্য ছিল, আজকের দুনিয়ায় মঙ্গলসূত্র বিবাহিত নারীর ‘ক্রীতদাসত্বে’র প্রতীক।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এসজে
নিউজবাংলাদেশ.কম