অক্টোবরে ১৫০ উপজেলায় মিড ডে মিল চালু: গণশিক্ষা উপদেষ্টা

ছবি: সংগৃহীত
প্রাথমিক শিক্ষায় একাধিক সংস্কারমূলক পরিকল্পনার ঘোষণা দিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার।
এর মধ্যে রয়েছে—স্কুল ক্যালেন্ডারে ছুটি কমানো, শূন্যপদে নতুন শিক্ষক নিয়োগ, বিদ্যমান শিক্ষকদের পদোন্নতি এবং আগামী অক্টোবর থেকে ১৫০টি উপজেলায় মিড ডে মিল চালু।
রবিবার (০৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর সচিবালয়ে আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান তিনি।
উপদেষ্টা বলেন, বছরে ৩৬৫ দিনের মধ্যে প্রাইমারি স্কুলে মাত্র ১৮০ দিন ক্লাস হয়। এতে বাচ্চাদের পড়াশোনায় ক্ষতি হচ্ছে। তাই অপ্রয়োজনীয় ছুটি কমিয়ে ক্লাসের সংখ্যা বাড়ানো হবে।
তিনি আরও জানান, ক্যালেন্ডারের ছুটি পুনর্বিন্যাসের কাজ চলছে। তবে সাপ্তাহিক দুই দিনের ছুটি অপরিবর্তিত থাকবে। পরিকল্পনা চূড়ান্ত হওয়ার পর তা জানিয়ে দেওয়া হবে।
বর্তমানে দেশে সাড়ে ৬৫ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকলেও এর মধ্যে প্রায় ৩২ হাজার স্কুলে কোনো প্রধান শিক্ষক নেই বলে উল্লেখ করেন বিধান রঞ্জন।
তিনি বলেন, সহকারী শিক্ষকদের পদোন্নতি দিয়ে এই গ্যাপ পূরণ করা হবে। যারা সারা জীবন সহকারী শিক্ষক হিসেবে কাজ করে অবসরে যাচ্ছেন, তারাও পদোন্নতির সুযোগ পাবেন।
তিনি জানান, ৩২ হাজার শিক্ষক পদোন্নতি পেলে সমসংখ্যক নতুন শিক্ষক নিয়োগের পথ খুলবে। এর মাধ্যমে দীর্ঘদিনের শূন্যপদ সংকট কাটবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
আরও পড়ুন: মাদরাসার জন্য জরুরি নির্দেশনা: অমান্য করলে এমপিও বাতিল
অধ্যাপক বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, একজন শিক্ষককে প্রায়ই শিক্ষাবহির্ভূত নানা কাজে লাগানো হচ্ছে। এতে বোঝা যায় শিক্ষা যেন কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। আমরা চেষ্টা করছি, এগুলো চিহ্নিত করে সমাধান করতে।
সংবাদ সম্মেলনে দেশের সাক্ষরতার হার নিয়েও কথা বলেন উপদেষ্টা।
তার ভাষায়, দেশে বর্তমানে সাক্ষরতার হার ৭৭ দশমিক ৯ শতাংশ হলেও প্রকৃত হার আরও কম হতে পারে। মাঠ পর্যায়ের ভিজিটে দেখা গেছে—অনেক শিক্ষার্থী এখনও স্বাক্ষর পর্যন্ত জানে না। আগের সরকার প্রকৃত তথ্য গোপন করেছিল।
তিনি বলেন, পিছিয়ে থাকা শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। প্রাথমিক শিক্ষার মূল লক্ষ্যই হলো শিশুদের প্রকৃত সাক্ষর করে তোলা। কিন্তু অনেকে প্রকৃত সাক্ষরতা অর্জন না করেই হাইস্কুলে চলে যাচ্ছে। এতে তাদের শিক্ষাজীবনে বড় ফাঁক তৈরি হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা জানান, ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের পুনরায় শিক্ষার আওতায় আনতে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা কর্মসূচি চালু করা হচ্ছে।
শিক্ষার্থীদের পুষ্টি নিশ্চিত করতে আগামী অক্টোবর থেকে দেশের ১৫০টি উপজেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মিড ডে মিল চালুর ঘোষণা দেন বিধান রঞ্জন।
তিনি বলেন, আমরা আশা করছি সেপ্টেম্বরের শেষ বা অক্টোবরের শুরুতেই এ কর্মসূচি চালু করতে পারবো।
প্রথম পর্যায়ে প্রতিদিন শিক্ষার্থীদের বান, ডিম, মৌসুমি ফল, দুধ ও বিস্কুট—এই পাঁচ ধরনের খাবার সরবরাহ করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানা উপস্থিত ছিলেন।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি