News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ২১:৩৫, ২০ আগস্ট ২০২৫

এসএসসি খাতা: মূল্যায়নে অবহেলা: কালো তালিকাভুক্ত ৭১ শিক্ষক

এসএসসি খাতা: মূল্যায়নে অবহেলা: কালো তালিকাভুক্ত ৭১ শিক্ষক

ফাইল ছবি

২০২৫ সালের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নে অবহেলা ও দায়িত্বহীনতার অভিযোগে ৭১ জন প্রধান পরীক্ষক ও পরীক্ষককে কালো তালিকাভুক্ত করেছে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড। এই শিক্ষকেরা আগামী পাঁচ বছর কোনো পাবলিক পরীক্ষায় প্রধান পরীক্ষক, পরীক্ষক বা নিরীক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না।

বুধবার (২০ আগস্ট) বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এস এম কামাল উদ্দিন হায়দার স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, উত্তরপত্র মূল্যায়নের ক্ষেত্রে দায়িত্বে অবহেলা শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ ক্ষতিগ্রস্ত করে। তাই শিক্ষকদের দায়িত্বশীলতা নিশ্চিত করতে এ ধরনের কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। 

তিনি আরও উল্লেখ করেন, ভবিষ্যতে উত্তরপত্র মূল্যায়নে অবহেলার ঘটনা প্রমাণিত হলে একইভাবে শাস্তি দেওয়া হবে।

সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, কালো তালিকাভুক্ত শিক্ষকদের নাম দ্রুত ই-এফটি (ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার) থেকে কর্তন করে বোর্ডকে অবহিত করার জন্য।

শাস্তিপ্রাপ্ত শিক্ষকদের মধ্যে রয়েছেন নারায়ণগঞ্জ, রাজবাড়ী, ফরিদপুর, মুন্সিগঞ্জ, মাদারীপুর, কিশোরগঞ্জ, টাঙ্গাইল, গোপালগঞ্জ, মানিকগঞ্জসহ একাধিক জেলার শিক্ষক। বিষয়ভিত্তিক হিসাবে দেখা যায়, সবচেয়ে বেশি শিক্ষক কালো তালিকাভুক্ত হয়েছেন ইংরেজি প্রথম ও দ্বিতীয়পত্রের। এর বাইরে বাংলা, গণিত, উচ্চতর গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, জীববিজ্ঞান, ইসলাম শিক্ষা, ব্যবসায় উদ্যোগ, হিসাববিজ্ঞান ও বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়সহ বিভিন্ন বিষয়ে মূল্যায়নে অবহেলার কারণে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন: ষষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তির ফল প্রকাশ, ৪১ হাজার শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশ

শিক্ষকদের মধ্যে কেউ কেউ সহকারী শিক্ষক, আবার অনেকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক ও অধ্যক্ষ। উল্লেখযোগ্য কিছু শিক্ষকের মধ্যে রয়েছেন টাঙ্গাইলের ঘাটাইলের মুরাইদ গড়বাজার আইডিয়াল হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. ইসহাক আলী, রাজবাড়ীর আরাবাড়িয়া হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. আবদুল মান্নান, নারায়ণগঞ্জের হাজী পান্ডে আলী হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক শিশির কুমার বালা, মানিকগঞ্জ সরকারি হাই স্কুলের শিক্ষক মো. মোস্তাক আহমেদসহ অনেকে।

ঢাকা বোর্ডের এই পদক্ষেপ শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষায় একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে। উত্তরপত্র মূল্যায়নে অবহেলা শিক্ষার্থীদের প্রাপ্য নম্বর থেকে বঞ্চিত হতে পারে, যা তাদের ভবিষ্যৎ শিক্ষাজীবন ও ক্যারিয়ারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে বোর্ডের এই কঠোর পদক্ষেপ শিক্ষকদের দায়িত্বশীলতা নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে।

শিক্ষাবিদরা মনে করেন, এই ধরনের পদক্ষেপ শিক্ষাব্যবস্থার মান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তবে, ভবিষ্যতে যাতে এমন ঘটনা না ঘটে, সে জন্য আরও কার্যকর মনিটরিং ও প্রশিক্ষণের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।

ঢাকা বোর্ডের এই পদক্ষেপ দেশের অন্যান্য শিক্ষা বোর্ডগুলোর জন্যও একটি উদাহরণ হতে পারে, যাতে তারা নিজেদের পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন প্রক্রিয়ায় আরও সতর্ক ও দায়িত্বশীল হয়।

এছাড়া, শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ ও মূল্যায়ন প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। এতে শিক্ষার্থীদের প্রতি দায়িত্বশীলতা বৃদ্ধি পাবে এবং শিক্ষাব্যবস্থার মান উন্নত হবে।

এই পদক্ষেপ শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নে একটি ইতিবাচক দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে, যা ভবিষ্যতে শিক্ষার মান উন্নয়নে সহায়ক হবে।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়