ঢাবিতে তরুণীর শ্লীলতাহানি: ব্যবস্থা নিতে আলটিমেটাম
ঢাকা: বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন পহেলা বৈশাখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে বর্ষবরণ করতে আসা তরুণীর শ্লীলতাহানিকারীদের বিরুদ্ধে ৭দিনের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়ার আলটিমেটাম দিয়েছে ছাত্র ইউনিয়ন। বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা না নিলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে পদত্যাগে বাধ্য করা হবেও বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে তারা। পাশাপাশি দায়িত্বে অবহেলার জন্য কর্তব্যরত পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ারও দাবি জানানো হয়েছে।
বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে এ প্রসঙ্গে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ছাত্র ইউনিয়ন নেতারা এ ঘোষণা দেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ছাত্র ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম জিলানী শুভ বলেন, “পহেলা বৈশাখে ৩০ থেকে ৩৫ জন যুবক প্রকাশ্যে নারীদের যে যৌন হয়রানি করেছে সেটি অত্যন্ত ন্যক্কারজনক। বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানানো হলেও তারা যথাযথ পদক্ষেপ নেয়নি। এতে পরিস্থিতি আরও নাজুক হয়ে যায়।”
তিনি বলেন, “এমন অপ্রীতিকর ঘটনা ঠেকাতে ছাত্র ইউনিয়ন ঢাবি সভাপতি লিটন নন্দী, রমনা থানার সাধারণ সম্পাদক অমিত দেসহ বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী এগিয়ে এলে তারাও আহত হন। তবুও ঢাবি প্রশাসন ও পুলিশ এতে নীরব ভূমিকা পালন করে।”
শুভ অভিযোগ করে বলেন, “এ বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশকে জানানোর পর তারা একে অপরের কাঁধে দায়ভার চাপানোর চেষ্টা করছেন এবং দায়সারা বক্তব্য দিয়েছেন। টিএসসি ও মিলন চত্বরে পুলিশের টহলরত অবস্থানের কাছাকাছি জায়গায় এ ঘটনা ঘটে যেখানে পুলিশের কন্ট্রোল রুম ও সিসি ক্যামেরা ছিল। তা সত্ত্বেও পুলিশ ব্যবস্থা নেয়নি। এটা খুবই দুঃখজনক।”
শ্লীলতাহানির ঘটনায় জড়িত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আগামী ৭দিনের মধ্যে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি। তা না হলে ছাত্র ইউনিয়ন কঠোর কর্মসূচি পালন করবে বলেও জানান এ নেতা।
এদিকে সংবাদ সম্মেলনের আগে প্রগতিশীল ছাত্রজোট ও ছাত্র ইউনিয়ন ঢাবি ক্যাম্পাসে পৃথক প্রতিবাদী বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি মধুর ক্যান্টিন থেকে শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে আবার মধুর ক্যান্টিনে এসে শেষ হয়।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসা কয়েকজন তরুণীকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গেট পেরিয়ে যাওয়ার সময় আনুমানিক ৩০ জন যুবক বিভিন্নভাবে যৌন হয়রানি করে। এ ঘটনায় ছাত্র ইউনিয়নের ঢাবি সভাপতি লিটন নন্দীসহ কয়েকজন প্রতিবাদ করলে যুবকরা তাদের ওপর আক্রমণ করে। পরে ওই যুবকদের হামলায় ছাত্র ইউনিয়ন ঢাবি শাখা সভাপতি লিটন নন্দীসহ কয়েকজন আহত হন।
এ প্রসঙ্গে ঢাবির ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর এম আমজাদ আলী জানান, পুলিশকে বলা হয়েছে জড়িতদের খুঁজে বের করতে। এ ঘটনায় জড়িতদের ভিডিও ফুটেজ দেখে শনাক্তের চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
তিনি আরও জানান, প্রয়োজনে আশপাশের কয়েকটি থানায় তাদের ফুটেজ দেওয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে পুলিশকে বলা হয়েছিল, বিকেল ৪টার মধ্যে উদ্যানের গেট বন্ধ করে দিতে। কিন্তু সেটা করা হয়নি। পুলিশ প্রশাসন তাদের দায়িত্বে অবহেলা করেছেন বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এমএ/এজে
নিউজবাংলাদেশ.কম