ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় টর্চ লাইট জ্বালিয়ে সংঘর্ষ, আহত ৩০

ছবি: সংগৃহীত
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে টর্চলাইট জ্বালিয়ে ভয়াবহ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
বুধবার (২২ অক্টোবর) রাতে সদর উপজেলার উত্তর সুহিলপুর এলাকায় আজিজ গোষ্ঠী ও উকিল গোষ্ঠীর মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়। এতে অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাত সাড়ে আটটার পর থেকে সংঘর্ষ শুরু হয়ে তিন ঘণ্টাব্যাপী চলে। এ সময় দাঙ্গাবাজরা কুমিল্লা–সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে, ফলে সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সংঘর্ষে অংশগ্রহণকারীরা টেটা-বল্লম ও বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র ব্যবহার করে একে অপরের ওপর হামলা চালায়। ইটপাটকেল নিক্ষেপ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া আর আতঙ্কে পুরো এলাকায় চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়।
স্থানীয়রা জানান, ঘটনাটির সূত্রপাত প্রায় পাঁচ দিন আগে। ওই সময় আওয়ামী লীগ-বিএনপি নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্কের এক পর্যায়ে উকিল গোষ্ঠীর সাদ্দাম, আজিজ গোষ্ঠীর আক্তারকে চড় মারেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। বুধবার বিকেলে বিষয়টি মীমাংসার জন্য স্থানীয়ভাবে একটি সালিশ বৈঠক বসে, তবে আলোচনায় কোনো সমাধান না আসায় রাতেই উভয় গোষ্ঠীর লোকজন মহাসড়কে মুখোমুখি হয়।
আরও পড়ুন: টেকনাফে মানবপাচার চক্রের আস্তানায় বিজিবির অভিযান, ৬ জিম্মি উদ্ধার
সংঘর্ষে অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন বলে স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে। আহতদের অনেককেই ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল ও আশপাশের বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজহারুল ইসলাম বলেন, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আজিজ গোষ্ঠী ও উকিল গোষ্ঠীর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় বুধবার সন্ধ্যার পর দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালায়। পরে যৌথ বাহিনীর সহযোগিতায় সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।
ওসি আরও জানান, বর্তমানে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে যাতে নতুন করে কোনো সংঘর্ষ না ঘটে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও তিনি নিশ্চিত করেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে দুই গোষ্ঠীর আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এলাকায় টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। মাঝেমধ্যেই ছোটখাটো সংঘর্ষ ও হামলার ঘটনা ঘটছে। বুধবারের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করেছে।
পুলিশ জানায়, সংঘর্ষের ঘটনায় দায়ীদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে। পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তবে পুরো এলাকায় টহল জোরদার করা হয়েছে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি