বিগ ব্যাশে রেকর্ড ১১ বাংলাদেশি

ছবি: সংগৃহীত
অস্ট্রেলিয়ার শীর্ষস্থানীয় ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টি প্রতিযোগিতা বিগ ব্যাশ লিগের (বিবিএল) আসন্ন মৌসুমের প্লেয়ার্স ড্রাফট অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ১৯ জুন, মেলবোর্নে। এবারের ড্রাফটে রেকর্ডসংখ্যক ১১ জন বাংলাদেশি ক্রিকেটার নাম লিখিয়েছেন, যা আগের যেকোনো বছরের তুলনায় সর্বোচ্চ। তবে মাঠে নামা নিয়ে রয়েছে একাধিক প্রশ্ন ও শঙ্কা।
বিবিএলের এবারের ড্রাফটে অংশগ্রহণকারী বাংলাদেশি ক্রিকেটাররা হচ্ছেন ১. মুস্তাফিজুর রহমান, ২. রিশাদ হোসেন, ৩. মেহেদী হাসান মিরাজ, ৪. তানজিম হাসান সাকিব, ৫. শেখ মেহেদী হাসান, ৬. তানজিদ হাসান তামিম, ৭. শামীম হোসেন পাটোয়ারি, ৮. তাওহীদ হৃদয়, ৯. তাইজুল ইসলাম, ১০. হাসান মাহমুদ, ১১. সৌম্য সরকার।
এই তালিকায় সবচেয়ে বড় আকর্ষণ মুস্তাফিজুর রহমান। জনপ্রিয় আইপিএল ও পিএসএলে নিয়মিত খেলা এই বাঁহাতি পেসার এবার প্রথমবারের মতো বিগ ব্যাশে খেলতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন এবং ড্রাফটে নামও লিখিয়েছেন। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে তাকে “ড্রাফটের অন্যতম আকর্ষণ” হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
এই ১১ জনের মধ্যে শুধু রিশাদ হোসেনের নাম বিগ ব্যাশের কোনও দলের সাথে আগেই যুক্ত ছিল। ২০২৪-২৫ মৌসুমে তাকে হোবার্ট হারিকেন্স দলে নিলেও, বিপিএলের সঙ্গে সূচি সাংঘর্ষিক হওয়ায় এবং বিসিবি থেকে এনওসি না মেলায় মাঠে নামতে পারেননি। এবারও চাইলে হোবার্ট তাকে দলে ধরে রাখতে পারে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, এখন পর্যন্ত শুধুমাত্র সাকিব আল হাসান-ই বাংলাদেশের একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে বিগ ব্যাশে খেলেছেন। তিনি দুই ভিন্ন মৌসুমে মেলবোর্ন রেনেগেডস এবং অ্যাডিলেড স্ট্রাইকার্স-এর হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের বিপক্ষে শক্তিশালী টেস্ট দল ঘোষণা করলো শ্রীলঙ্কা
বিবিএল শুরু হয় সাধারণত ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে। একই সময়ে বাংলাদেশের ঘরোয়া লিগ বিপিএল, পাশাপাশি আইএলটি-টোয়েন্টি ও এসএ-টোয়েন্টি-র সূচিও রয়েছে। ফলে যেসব বাংলাদেশি ক্রিকেটার বিগ ব্যাশে দল পেতে পারেন, তাদের অন্য লিগগুলোতে খেলা প্রায় অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। এনওসি না পাওয়া এবং সূচির সংঘাত—এই দুই কারণে আগের মৌসুমেও কেউ অংশ নিতে পারেননি।
বিশেষ করে বিসিবি যে পদ্ধতিতে এনওসি দেয় এবং বিপিএলকে প্রাধান্য দেয়, তা নিয়ে আগে থেকেই সমালোচনা রয়েছে। রিশাদ হোসেনের আগের মৌসুমের উদাহরণ সেই শঙ্কাকেই আরও স্পষ্ট করে।
এবারের ড্রাফটে ৩০টি দেশের ৬০০-এর বেশি ক্রিকেটার নাম লিখিয়েছেন। অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর তালিকায় রয়েছে— আফগানিস্তান, ভারত, পাকিস্তান, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, আয়ারল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, নামিবিয়া, নেদারল্যান্ডস, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, জিম্বাবুয়ে, সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ওমান— এমনকি জাপান, হাঙ্গেরি, রুয়ান্ডা, ইন্দোনেশিয়া, হংকং এবং গ্রিস-এর মতো দেশও।
এই পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের ১১ জনের অংশগ্রহণকে অনেকেই দেখছেন নতুন এক যুগের সূচনা হিসেবে। তবে বাস্তবতা হলো, খেলার সুযোগ পেলেও মাঠে নামতে পারবে কিনা, তা নির্ভর করছে বিসিবির সিদ্ধান্ত এবং ব্যক্তিগত চুক্তির ওপর।
১৯ জুনের ড্রাফটে বাংলাদেশের ১১ জন ক্রিকেটারের নাম থাকলেও, সেখান থেকে কারা দল পাবেন এবং আদৌ মাঠে নামতে পারবেন কিনা, তা নির্ভর করবে বিপিএল-ভিত্তিক সূচি ও এনওসি ইস্যুর ওপর। মুস্তাফিজুর রহমানকে ঘিরে উৎসাহ থাকলেও বাস্তবতা হলো— বিবিএল এখনও বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের জন্য পুরোপুরি উন্মুক্ত হয়ে ওঠেনি। সময়ই বলে দেবে, এই ড্রাফট বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের জন্য নতুন দিগন্ত খুলবে নাকি পুরনো সীমাবদ্ধতার পুনরাবৃত্তি হবে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি