‘অস্বাস্থ্যকর’ বাতাস নিয়ে বিশ্বে দ্বিতীয় ঢাকা

ফাইল ছবি
বিশ্বের দূষিত শহরগুলোর তালিকায় আবারও শীর্ষে উঠে এসেছে ঢাকার নাম। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী বায়ুর গুণগত মান বিশ্লেষণের সূচক এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (AQI) অনুযায়ী, অনুযায়ী, বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা বিশ্বজুড়ে দূষিত শহরগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে।
রবিবার (১৫ জুন) সকাল ৮টা নাগাদ ঢাকার AQI স্কোর রেকর্ড করা হয় ১৪৪, যা জনস্বাস্থ্যের দৃষ্টিকোণ থেকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচিত।
বিশ্বব্যাপী এয়ার কোয়ালিটি পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা আইকিউএয়ার (IQAir) প্রতিদিন বাস্তব সময়ের বায়ুমান বিশ্লেষণ করে এ তালিকা প্রকাশ করে।
শনিবার (১৪ জুন ২০২৫) রাতে শুরু হওয়া এবং রবিবার (১৫ জুন) সকালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, একিউআই স্কোরে শীর্ষস্থান দখল করে নেয় ইন্দোনেশিয়ার শহর মেডান, যার স্কোর ছিল ১৫৩।
ঢাকার পরপরই তৃতীয় স্থানে রয়েছে কাতারের রাজধানী দোহা, যেখানে AQI স্কোর দাঁড়ায় ১২৮। চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে রয়েছে যথাক্রমে মিসরের কায়রো ও পাকিস্তানের লাহোর, যাদের উভয়ের স্কোর ১২৪।
একিউআই (Air Quality Index) মূলত বায়ুর গুণগত মান নির্দেশ করে। স্কোরের ভিত্তিতে তা জনস্বাস্থ্যের ওপর সম্ভাব্য প্রভাব তুলে ধরা হয়।
আরও পড়ুন: রবিবার থেকে টানা বৃষ্টি হতে পারে ৮ দিন
- ০–৫০: ভালো
- ৫১–১০০: সহনীয়
- ১০১–১৫০: সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর
- ১৫১–২০০: অস্বাস্থ্যকর
- ২০১–৩০০: অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর
- ৩০১+: ঝুঁকিপূর্ণ (জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি)
বিশ্বব্যাপী পরিবেশগত তথ্য বিশ্লেষণকারী সংস্থাগুলোর যৌথ উপাত্ত অনুসারে এই তালিকা প্রস্তুত করা হয়। একিউআই সূচকে প্রতিদিনের বাতাসের গুণমান, ধূলিকণার পরিমাণ (PM2.5, PM10), গ্যাস দূষণ (O₃, NO₂, SO₂), এবং অন্যান্য ক্ষতিকর উপাদানের ঘনত্ব পরিমাপ করা হয়।
ঢাকার ১৪৪ স্কোরটি ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ ও প্রায় ‘অস্বাস্থ্যকর’ সীমার মাঝে অবস্থান করছে, যার অর্থ হলো শিশু, বয়স্ক ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগীদের জন্য তাৎক্ষণিক স্বাস্থ্যঝুঁকি বিদ্যমান।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, যানবাহনের কালো ধোঁয়া, নির্মাণকাজের ধুলাবালি, শিল্প কারখানার নির্গমন এবং অপরিকল্পিত নগরায়ণ—এই চারটি প্রধান কারণ ঢাকার দূষণ পরিস্থিতিকে ক্রমাগত খারাপ করে তুলছে।
পরিবেশবিদরা সতর্ক করছেন—এই ধরনের AQI মান দীর্ঘ সময় ধরে বজায় থাকলে শ্বাসযন্ত্রের রোগ, হৃদরোগ ও ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়তে পারে, বিশেষত শিশু ও বয়স্কদের মধ্যে।
ঢাকাবাসীর জন্য পরামর্শ হচ্ছে—সম্ভব হলে বাইরে বের হওয়া এড়িয়ে চলা, বিশেষ করে সকাল ও সন্ধ্যায়; প্রয়োজনে বাইরে গেলে মাস্ক ব্যবহার করা এবং ঘরে থাকাকালীন দরজা-জানালা বন্ধ রাখা।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি