News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৩:৫১, ১৫ জুন ২০২৫

যারা খেলবে খেলুক, মাঠ নিরপেক্ষ রাখবে ইসি

যারা খেলবে খেলুক, মাঠ নিরপেক্ষ রাখবে ইসি

ছবি: সংগৃহীত

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন (ইসি) প্রস্তুতির গতি বাড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ. এম. এম. নাসির উদ্দিন। 

তিনি বলেন, নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা হবে রেফারির মতো। যারা খেলবে খেলুক, যারা জিতবে জিতুক। কিন্তু আমাদের দায়িত্ব হবে একটি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা।

রবিবার (১৫ জুন) সকালে ঈদুল আজহার পর প্রথম কর্মদিবসে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত কর্মকর্তা মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন সিইসি। 

সকাল সাড়ে ১০টায় শুরু হওয়া এই সভায় চারজন নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিব এবং অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

মতবিনিময় সভায় সিইসি নাসির উদ্দিন বলেন, আমরা অনেক কাজ ইতিমধ্যেই এগিয়ে নিয়েছি। এখন যতটুকু কাজ বাকি আছে, তা সবাইকে মিলে করতে হবে। আজকের এই ঈদের পর আমরা একটি শপথ নেব—তা হলো, জাতিকে একটি সুষ্ঠু, সুন্দর এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দেওয়া।

তিনি আরও বলেন, আমরা রমজানের সময়ও ওয়াদা করেছিলাম নিরপেক্ষভাবে কাজ করব। আজও সে অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করছি। আমি আপনাদের অনুরোধ করব—কোনো দলের প্রতি পক্ষপাতিত্ব নয়, আইন ও ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে কাজ করুন। নির্বাচন পরিচালনায় লেজুড়বৃত্তির কোনো স্থান নেই।

সিইসি বলেন, সরকার ও ইসি যৌথভাবে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মহলে—বিশেষ করে লন্ডন, জাপানসহ বিভিন্ন দেশে—এ নির্বাচনের গুরুত্ব ও গ্রহণযোগ্যতা তুলে ধরছে। বিশ্বনেতারা বারবার আমাদের বলছেন, তারা বিশ্বাস করেন আমরা একটি ঐতিহাসিক নির্বাচন জাতিকে উপহার দিতে পারব। এটি আমাদের ওপর তাদের আস্থার প্রতিফলন।

আরও পড়ুন: পাচার অর্থ ফেরাতে ব্রিটিশ আইনজীবী নিয়োগ: প্রধান উপদেষ্টা

তিনি জানান, আমাদের কার্যক্রমে এমন স্বচ্ছতা ও প্রস্তুতি থাকতে হবে, যাতে কোনো পক্ষ প্রশ্ন তুলতে না পারে।

সিইসি নাসির উদ্দিন অতীত নির্বাচন কমিশনগুলোর প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, হ্যাঁ, আমরা জানি, অতীতে কিছু কাজ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কিন্তু আমরা সেই ধারাবাহিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে চাই। বর্তমান কমিশনের লক্ষ্য একটাই—একটি ন্যায়সংগত, অংশগ্রহণমূলক, নিরপেক্ষ এবং আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত করা।

তিনি আরও বলেন, রেফারির ভূমিকায় আমরা কোনো পক্ষ নেব না। আমাদের ভূমিকা হবে নিয়ম মেনে খেলা পরিচালনা করা—যাতে প্রতিটি দল সমান সুযোগ পায়।

নির্বাচন এগিয়ে আনার সম্ভাবনা ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট
প্রসঙ্গত, প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস এর আগে নির্বাচন এপ্রিল ২০২৬-এর প্রথমার্ধে অনুষ্ঠানের কথা বললেও, সাম্প্রতিক রাজনৈতিক আলাপ-আলোচনায় নির্বাচনের সময় এগিয়ে আনার সম্ভাবনার কথাও উঠে এসেছে। 

বিশেষ করে, ১৩ জুন (শুক্রবার) লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠক শেষে দেওয়া এক যৌথ ঘোষণায় নির্বাচন রমজানের আগেই (যা ফেব্রুয়ারি ২০২৬-এ শুরু হতে পারে) আয়োজনের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। 

তবে, এর জন্য নির্বাচন পদ্ধতি ও বিচারসংক্রান্ত সংস্কারে “যথেষ্ট অগ্রগতি” শর্ত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রধান নির্বাচন কমিশনারের নেতৃত্বে বর্তমান ইসি একটি ঐতিহাসিক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে—এমন ঘোষণা যেমন দেশে আশাবাদ তৈরি করেছে, তেমনি আন্তর্জাতিক মহলেও আগ্রহ বাড়িয়েছে। তবে আগামী নির্বাচনে সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের জন্য এখন প্রয়োজন কঠোর নিরপেক্ষতা, ন্যায়বিচার এবং সর্বোচ্চ প্রশাসনিক প্রস্তুতি।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়