জামায়াতের অনুপস্থিতি নিয়ে প্রেস সচিবের ব্যাখ্যা

ছবি: সংগৃহীত
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় দিনের সংলাপে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর অনুপস্থিতিকে ‘বয়কট’ হিসেবে মানতে নারাজ প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
তিনি জানিয়েছেন, জামায়াতের শীর্ষ নেতারা কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানিয়েছেন যে তারা আগামীকাল বুধবার (১৮ জুন) সংলাপে যোগ দেবেন।
মঙ্গলবার (১৭ জুন) বিকেলে রাজধানীর বেইলি রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় ধাপের বৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে শফিকুল আলম এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, জামায়াতের নেতারা নিশ্চিত করেছেন যে তারা আগামীকাল বৈঠকে থাকবেন। তবে আজ কেন তারা আসেননি, সে বিষয়ে কোনো নির্দিষ্ট কারণ জানানো হয়নি। একদিন অনুপস্থিত থাকতেই পারে। কালকে তারা ভালোভাবে অংশ নেবেন।
তবে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের সকালেই সংবাদমাধ্যমকে জানান, আমরা অন প্রোটেস্ট আজকের বৈঠকে যাইনি।
কিন্তু একই সঙ্গে তিনি বলেছিলেন, আগামীকাল বৈঠকে যোগ দেব কি না, সেটি এখনই বলা যাচ্ছে না। আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টায় দ্বিতীয় ধাপের সংলাপ শুরু হলেও জামায়াতের কোনো প্রতিনিধিকে সেখানে দেখা যায়নি। ফরেন সার্ভিস একাডেমির সম্মেলন কক্ষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদের পাশের আসনটি জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. তাহেরের জন্য বরাদ্দ থাকলেও তা খালি ছিল।
মধ্যাহ্ন বিরতিতে ঐকমত্য কমিশনের বিশেষ সহকারী (ঐকমত্য) মনির হায়দার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, জামায়াতে ইসলামী প্রতীকী বয়কট করেছে।
আরও পড়ুন: ‘বহু বছর পর উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দেবে মানুষ’
লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের যৌথ বিবৃতির প্রতিবাদেই জামায়াত এই পদক্ষেপ নিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মনির হায়দার বলেন, বয়কটের কারণ আপনারা বুঝে নিন।
বিএনপির প্রতি সরকারের একপাক্ষিক আচরণ ও জামায়াত-এনসিপির উদ্বেগ সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রেস সচিব শফিকুল আলম সাফ বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ। জুলাই আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী সব দল ও পক্ষকেই সরকার সমান গুরুত্ব দিচ্ছে, কাউকে আলাদা করে দেখছে না।
তিনি আরও বলেন, আমরা মনে করি, আমরা সর্বোচ্চ নিরপেক্ষতা বজায় রেখেছি। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী সবাইকে আমাদের অংশীদার মনে করি। জামায়াত বা এনসিপি যে অভিযোগ তুলছে, তা ভিত্তিহীন।
লন্ডনে বিএনপি ও প্রধান উপদেষ্টার যৌথ বিবৃতি বিষয়ে জামায়াতের উদ্বেগ প্রসঙ্গে তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, মালয়েশিয়ার সরকারও বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেছে। এটি স্বাভাবিক রাজনৈতিক প্রক্রিয়া।
ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি ড. আলী রীয়াজ জানান, সরকার জামায়াতে ইসলামী নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে, তারা বুধবার আসবেন বলে জানিয়েছে।
প্রেস সচিব শফিকুল আলম নিশ্চিত করে জানান, আগামী জুলাই মাসেই বহুল আলোচিত ‘জুলাই সনদ’ প্রকাশ করা হবে। এই সনদের মাধ্যমে চলমান অন্তর্বর্তী প্রক্রিয়া ও জাতীয় নির্বাচনের পথনকশা নির্ধারিত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আজকের সংলাপে বিএনপি এবং এনসিপির প্রতিনিধিদল অংশ নেয়। বিএনপির পক্ষে স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ নেতৃত্ব দেন এবং তাদের তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল উপস্থিত ছিলেন। একইভাবে এনসিপির তিন সদস্যের প্রতিনিধিও আলোচনায় অংশ নেয়।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি