News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৮:২৭, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

“বাংলাদেশে নির্বাচন আস্থা ফেরানোই চ্যালেঞ্জ”

“বাংলাদেশে নির্বাচন আস্থা ফেরানোই চ্যালেঞ্জ”

ফাইল ছবি

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে অবস্থানকালে বলেছেন, দেশের মানুষ ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন নিয়ে সংশয়ে থাকলেও সরকার চাইলে সেই সময়ে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন সম্ভব। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে অংশ নিতে প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী হিসেবে তিনি বর্তমানে নিউইয়র্কে রয়েছেন।

সময় সংবাদকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, বাংলাদেশে মাত্র তিন মাসের ব্যবধানে অনেক নির্বাচন হয়েছে। কাজেই নির্বাচন আয়োজন কোনো বড় সমস্যা নয়। মূল বিষয় হলো রাজনৈতিক সদিচ্ছা। সরকার যদি চায়, তাহলে ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন দেওয়া সম্ভব।

মির্জা ফখরুল আরও উল্লেখ করেন, প্রায় দুই দশক ধরে দেশের মানুষ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি। শেখ হাসিনার অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি। বর্তমান সরকারের পরিবর্তনেও জনগণের মধ্যে আস্থাহীনতা রয়ে গেছে। এই আস্থাহীনতা দূর করতে অন্তর্বর্তী সরকারের আরও কার্যকর ও দৃশ্যমান উদ্যোগ প্রয়োজন।

তিনি বলেন, নির্বাচন আয়োজনের সক্ষমতা সরকারের আছে, তবে জনগণের আস্থা ফেরানো এখন বড় চ্যালেঞ্জ। মানুষ এখন নির্বাচনমুখী। সরকারের উচিত নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের জন্য মনোনিবেশ করা।

নির্বাচন প্রশ্নে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রস্তুতি নিয়ে কিছু রাজনৈতিক দলের সন্দেহ থাকলেও মির্জা ফখরুল সেগুলোকে বড় প্রতিবন্ধকতা মনে করেন না। 

তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা আন্তরিকভাবে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন চান। সেই বার্তাই বিশ্ববাসীকে পৌঁছে দিতে রাজনীতিকদের জাতিসংঘ সফরে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

এদিকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে দেশে ফেরার বিষয়ে রয়েছে নানা আলোচনা। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানিয়েছিলেন, কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই তারেক রহমান দেশে ফিরবেন।

আরও পড়ুন: ফুলগাজী উপজেলা বিএনপির সদস্য হলেন খালেদা জিয়া

মির্জা ফখরুল তারেক রহমানের দেশে ফেরার বিষয়ে বলেন, যেই মুহূর্তে সব আইনি সমস্যা শেষ হবে, যেই মুহূর্তে আমরা মনে করব রাজনৈতিকভাবে সময় তৈরি হয়েছে, তখনই তারেক রহমান দেশে আসবেন। 

তিনি এই মন্তব্য করেছেন বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে সাংবাদিক খালেদ মুহিউদ্দীনের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে।

আওয়ামী লীগকে দণ্ড প্রদানের বিষয়ে বিএনপির অবস্থান জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, আমি পরিষ্কার করে বলি, আমরা কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করার পক্ষে নই। তবে যদি কোনো দল গণহত্যার সঙ্গে জড়িত হয়, দেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ভেঙে দেয়ার দায়ে দোষী হয়, তবে অবশ্যই তাদের শাস্তি পেতে হবে।

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা বিষয়ে তিনি বলেন, নিউইয়র্কে আসার পর ড. ইউনূসের সঙ্গে একটি ইভেন্টে দেখা হয়েছে। ব্যক্তিগতভাবে কোনো কথা হয়নি। জামায়াতে ইসলামের নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরের সঙ্গে আজই কথা হয়েছে। পাশাপাশি এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেনের সঙ্গে দেখা হয়েছে।

জমায়াতের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক বিষয়ে তিনি বলেন, রাজনীতিতে শেষ বলে কোনো কথা নেই। প্রত্যেক দলের নিজস্ব নীতি রয়েছে। সব সময় একই রকম থাকবে না। জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক খারাপ হয়নি। দল করতে হলে সবার সঙ্গে সম্পর্ক ভালো রাখতে হবে।

ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে কি না- সেই প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, অবশ্যই নির্বাচন হবে, ফেব্রুয়ারিতেই হবে। তবে যে অবিশ্বাস মানুষের মাঝে তৈরি হয়েছে, তা দূর করে আস্থা ফিরিয়ে আনতে সবাইকে কাজ করতে হবে। 

তিনি বলেন, ড. ইউনূসও নির্বাচনে সহযোগিতার বিষয়ে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে বৈঠকের পর এটা নিশ্চিত হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো এবং সেনাবাহিনীর প্রশাসনও জানে যে নির্বাচন হবে।

মির্জা ফখরুলের মতে, বর্তমান সময়ে মানুষের মধ্যে ভোটাধিকার প্রয়োগের আকাঙ্ক্ষা জাগ্রত। তাই সরকারের উচিত নির্বাচনকে নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য করে তোলা।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়