‘লালকেল্লা বিস্ফোরণে বাংলাদেশকে জড়ানো ভিত্তিহীন’
ছবি: সংগৃহীত
ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির ঐতিহাসিক লালকেল্লার কাছে ভয়াবহ গাড়ি বিস্ফোরণের ঘটনায় ভারতীয় কিছু গণমাধ্যম বাংলাদেশকে জড়িয়ে যেসব সংবাদ প্রকাশ করছে, তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সুযোগ পেলেই ভারতীয় গণমাধ্যম বাংলাদেশের ওপর দোষ চাপায়। যাই কিছু ঘটুক না কেন ভারতের গণমাধ্যমে দোষ চাপানোর চেষ্টা করে থাকে। এসব কথার কোনও ভিত্তি নেই, বিশ্বাসেরও কোনও কারণ নেই। কোনও বিবেকবান মানুষ এসব সংবাদ বিশ্বাস করবে না।
তিনি আরও বলেন, লালকেল্লায় হামলার সঙ্গে বাংলাদেশের কোনো সম্পর্ক নেই। ভারতের গণমাধ্যমের এমন মনগড়া ও দায়সারা প্রতিবেদন দুই দেশের সম্পর্কের জন্য ইতিবাচক নয়। বাংলাদেশ বরাবরই সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করে আসছে।
সোমবার (১০ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৬টা ৫২ মিনিটে দিল্লির লালকেল্লা এলাকায় মেট্রো স্টেশনের কাছে একটি চলন্ত গাড়িতে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে অন্তত ১৩ জন ভারতীয় নাগরিক নিহত এবং বহু মানুষ আহত হন। বিস্ফোরণের তীব্রতায় আশপাশের গাড়িতেও আগুন ধরে যায় ও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সড়কে ছড়িয়ে ছিল মানব শরীরের অংশ-অঙ্গ।
আরও পড়ুন: দিল্লির লাল কেল্লায় শক্তিশালী বিস্ফোরণ, নিহত ৮
দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, বিস্ফোরণের কারণে আশপাশের আরও কয়েকটি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং গাড়িটির মূল মালিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনার পর লালকেল্লা মেট্রো স্টেশন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ১১ নভেম্বর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত তিন দিনের জন্য লালকেল্লাও দর্শনার্থীদের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিহতদের পরিবারের প্রতি শোক প্রকাশ করেছেন এবং পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন বলে জানিয়েছেন।
এদিকে মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) উচ্চপর্যায়ের বৈঠক ডেকেছেন দেশটির কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
ভারতে বাংলাদেশ হাইকমিশন এক বিবৃতিতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, আমাদের আন্তরিক সমবেদনা ও প্রার্থনা রইলো সব নিহত ও আহত ব্যক্তির এবং তাদের পরিবারের প্রতি।
হাইকমিশন জানিয়েছে, এই দুঃসময়ে বাংলাদেশ ভারতের পাশে রয়েছে।
শেখ হাসিনার মামলার রায় নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রায়ের বিষয়ে যে কেউই জাতিসংঘে আপিল করতে পারে। এ নিয়ে জাতিসংঘ কিছু বললে ঢাকা পদক্ষেপ নেবে। জাতিসংঘ আমাদের কিছু বলেনি।
চীন থেকে অস্ত্র কেনা ও মার্কিন ‘থিংক টোয়াইস অ্যাক্ট’ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ভারসাম্যের নীতি বজায় রেখেছে এবং রাখবে। চীন থেকে অস্ত্র কেনা বিষয়ে আমরা কারও দিকে ঝুঁকিনি। আমরা ব্যালেন্সড রিলেশনশিপ মেনে চলি। সবাই সঙ্গেই ভারসাম্যপূর্ণ বজায় রাখছে বাংলাদেশ।
প্রসঙ্গত, বিশ্বব্যাপী প্রতিরক্ষা খাতে চীনের আধিপত্য রোধ করতে যুক্তরাষ্ট্র ‘থিংক টোয়াইস অ্যাক্ট-২০২৫’ নামে নতুন আইন করছে। এতে বলা হয়েছে, চীন থেকে সমরাস্ত্র কিনলে নিষেধাজ্ঞাসহ অর্থনৈতিক বিধিনিষেধে পড়তে হবে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি








