News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৪:০২, ৯ নভেম্বর ২০২৫

গুম-হত্যা মামলার প্যানেল ছাড়লেন ব্যারিস্টার সারোয়ার

গুম-হত্যা মামলার প্যানেল ছাড়লেন ব্যারিস্টার সারোয়ার

ছবি: সংগৃহীত

পেশাগত নৈতিকতা ও স্বার্থের সংঘাত এড়াতে সেনা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গুম ও হত্যার মামলায় আসামিপক্ষের আইনজীবীর তালিকা থেকে নিজের নাম আনুষ্ঠানিকভাবে প্রত্যাহার করেছেন ব্যারিস্টার এম. সারোয়ার হোসেন।

রবিবার (০৯ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে ওকালতনামা প্রত্যাহারের আবেদন করেন। 

ট্রাইব্যুনাল আবেদন গ্রহণ করে সারোয়ারসহ পাঁচজন আইনজীবীর ওকালত বাতিল করে নতুন করে ওকালতনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন।

আদালত থেকে বের হয়ে ব্যারিস্টার সারোয়ার জানান, তিনি নিজেই একটি গুমের ঘটনায় প্রসিকিউশনে অভিযোগ জমা দিয়েছিলেন। সেই অভিযোগে যেসব সাবেক সেনা কর্মকর্তার নাম রয়েছে, তাদেরই আসামি হিসেবে এই মামলায় বিচার চলছে। ফলে পেশাগত নৈতিকতা ও আচরণবিধি অনুযায়ী তিনি আসামিপক্ষের আইনজীবী হিসেবে থাকতে পারেন না।

তিনি বলেন, প্রফেশনাল এথিকস অ্যান্ড কনডাক্ট অনুযায়ী আমার ডিফেন্স আইনজীবী হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সেই নীতির আলোকে এবং আইসিটি বিধি অনুযায়ী আজকে আবেদন করেছি। ট্রাইব্যুনাল সেই আবেদন গ্রহণ করেছেন।

এর আগে গত ২৩ অক্টোবরও তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন যে আওয়ামী লীগ শাসনামলে সংঘটিত হত্যা, গুম ও নির্যাতনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের তিন মামলায় সেনা কর্মকর্তাদের পক্ষে লড়বেন না।

২১ অক্টোবর আদালত গুমের দুই মামলায় সাবেক ১৩ জন সেনা কর্মকর্তা এবং রাজধানীর রামপুরায় ২৮ জন হত্যার মামলায় দুই সেনা কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠায়।

আরও পড়ুন: গুমের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড রেখে অধ্যাদেশ চূড়ান্ত অনুমোদন

মানবতাবিরোধী অপরাধের তিনটি মামলার মধ্যে দুটি ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় গুম-নির্যাতনের মাধ্যমে সংঘটিত অপরাধ সম্পর্কিত। অন্যটি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় রাজধানীর রামপুরা ও বনশ্রী এলাকায় সংঘটিত হত্যাকাণ্ড ও নির্যাতনের ঘটনা।

এসব মামলায় সাবেক ও বর্তমান ২৫ সেনা কর্মকর্তাসহ মোট ৩২ জন আসামি রয়েছেন। তাদের মধ্যে ১৫ জন বর্তমানে ঢাকা সেনানিবাসে ঘোষিত সাবজেলে আটক আছেন।

একটি মামলায় আসামি ১৭ জন। তাদের মধ্যে কারাগারে রয়েছেন র‍্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, ব্রিগেডিয়ার কে এম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন, কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (অবসরকালীন ছুটিতে), র‍্যাব গোয়েন্দা শাখার সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মশিউর রহমান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম।

পলাতক আসামিদের মধ্যে রয়েছেন র‍্যাবের সাবেক তিন মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ (পরে আইজিপি হন), এম খুরশিদ হোসেন ও মো. হারুন-অর-রশিদ। 

এছাড়া সাবেক প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মুহাম্মাদ খায়রুল ইসলাম এবং শেখ হাসিনা নামও আসামির তালিকায় রয়েছে।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় রাজধানীর রামপুরা ও বনশ্রী এলাকায় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আসামি করা হয়েছে বিজিবির সাবেক কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ রেদোয়ানুল ইসলাম, বিজিবির সাবেক কর্মকর্তা মেজর মো. রাফাত-বিন-আলম, পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) মো. রাশেদুল ইসলাম, সাবেক ওসি মো. মশিউর রহমান।

এর মধ্যে রেদোয়ানুল ও রাফাত বর্তমানে সেনানিবাসের সাবজেলে আটক আছেন। বাকি দুইজন পলাতক।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়