তিউনিসিয়ায় হামলা, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা
সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ‘ক্ষমাহীন’ যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তিউনিসিয়ার প্রেসিডেন্ট বিজ সাইদ এসেবসি। রাজধানী তুনিসের বার্দো জাদুঘরে বন্দুকধারীদের গুলিতে ১৭ পর্যটকসহ মোট ১৯ জন নিহত হওয়ার ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় তিনি সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ক্ষমাহীন লড়াইয়ের এ ঘোষণা দিলেন।
গত বুধবার ওই ঘটনায় আহত হন আরো ৪০ জন।
আল জাজিরা জানায়, তিউনিসের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত ব্যক্তিদের দেখতে গিয়ে ‘শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত’ লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন এসেবসি।
প্রেসিডেন্ট বলেন, “আমি চাই তিউনিসিয়ার মানুষ জানুক, আমরা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছি এবং ওই বর্বর সংখ্যালঘুদের আমরা ভয় পাই না। শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত তাঁদের বিরুদ্ধে আমরা লড়াই করে যাবো।”
গতকাল বুধবার বন্দুকধারীরা প্রথমে একটি গাড়িতে করে এসে জাদুঘরের পাশে অবস্থিত পার্লামেন্ট ভবনে চড়াও হয় এবং গুলি ছুড়তে শুরু করে। বন্দুকধারীদের একজনকে পার্লামেন্ট ভবনের ছাদে দেখা যায়। ঘটনার পর নিরাপত্তা বাহিনী পুরো এলাকাটি ঘিরে ফেলে এবং পার্লামেন্ট ভবন থেকে সবাইকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়। পার্লামেন্ট ভবনে ওই সময় পার্লামেন্ট ভবনে একটি সন্ত্রাসবিরোধী আইন নিয়ে বিতর্ক চলছিল। পরে বারদো জাদুঘরে রাইফেলধারী দুই বা ততোধিক ব্যক্তি ঢুকে পড়ে। তারা সেখানকার দর্শনার্থীদের জিম্মি করে এবং তাঁদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালায়। হামলার সময় সেখানে প্রায় ১০০ পর্যটক ছিলেন। পরে জিম্মিদের উদ্ধারে সেখানে নিরাপত্তা বাহিনী অভিযান চালায়।
জাপানের টেলিভিশন চ্যানেল এনএইচকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ হামলায় আহত জাপানি পর্যটক নোরিকো ইয়ুকি (৩৫) জানান, “আমি দুই হাত তুলে মাথা নিচু করে ছিলাম। তা সত্ত্বেও আমার কানে, হাতে ও ঘাড়ে গুলি করা হয়। আমার পাশে থাকা আমার মা’র ঘাড়েও গুলি করা হয়। পুলিশ আসার আগ পর্যন্ত মা একা নড়তে পারছিলেন না।”
‘ গুলি চলছে, পালাও পালাও’ বলে আমার সহকর্মীরা যখন চিৎকার করছিলেন। আমরা পেছনের দরজা দিয়ে কয়েকজন সহকর্মী ও পর্যটকদের নিয়ে তখন বেরিয়ে পড়ি।’ ঘটনা সম্পর্কে বারদো জাদুঘরের কর্মচারী দোহা বেলহাজ আলায়ার মন্তব্য এমনটি।
সন্ত্রাসী হামলায় নিহত ১৭ পর্যটকের মধ্যে পাঁচ জন জাপানের, চার জন ইতালির, দুজন কলম্বিয়ার এবং অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স, পোল্যান্ড ও স্পেনের একজন করে নাগরিক ছিলেন।
অনেক তিউনিসীয় নাগরিক তুনিসের কেন্দ্রস্থলে জাদুঘরের সামনে রাস্তায় এসে পতাকা উড়িয়ে ও মোমবাতি জ্বালিয়ে হামলার প্রতিবাদ জানায়।
যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স ও জাতিসংঘ ইতোমধ্যে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তিউনিসিয়াকে পূর্ণ সমর্থন দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
নিহতদের প্রতি গভীর শোক জানিয়ে কড়া ভাষায় হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এএইচকে
নিউজবাংলাদেশ.কম








