News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ২১:৪৪, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ডাকসুতে আওয়ামী লীগের আঁতাতে শিবিরের জয়: মির্জা আব্বাস

ডাকসুতে আওয়ামী লীগের আঁতাতে শিবিরের জয়: মির্জা আব্বাস

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) নির্বাচনে ইসলামী ছাত্রশিবির আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাত করে ছাত্রলীগের ভোট নিজেদের করে নিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। 

তিনি বলেন, জামায়াত-শিবিরের এত ভোট কোথা থেকে এলো, আমার হিসাব মেলে না। সরাসরি কারচুপির কথা বলব না, তবে গভীর ষড়যন্ত্রের আভাস পাচ্ছি।

বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রাম নগরের পাঁচলাইশে একটি কমিউনিটি সেন্টারে বিএনপির প্রয়াত ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল্লাহ আল নোমানের স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব মন্তব্য করেন তিনি।

মির্জা আব্বাস বলেন, ডাকসু নির্বাচনে দুটি বিষয় কাজ করেছে—২০০৮ সালের মতো ‘ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং’ এবং ছাত্রলীগের ভোট। দেখেন, এরা কত বড় মোনাফেকের দল। আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাত করে ছাত্রলীগের সব ভোট জামায়াত-শিবির নিয়ে নিল। অথচ আমাদের সঙ্গে বসলে তারা বলে আওয়ামী লীগকে আর ফিরতে দেওয়া যাবে না। কিন্তু তলেতলে আঁতাত করছে আওয়ামী লীগের সঙ্গেই।

তিনি আরও বলেন, ডাকসু নির্বাচনে যেভাবেই হোক নতুন নেতৃত্ব এসেছে। আমি ওদের স্বাগত জানাই। আশা করি, ওরা দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় কাজ করবে এবং সিনিয়র নেতারা যদি ভুল পথে নিয়ে যেতে চান, ওরা যেন সেখান থেকে বিরত রাখে।

সাবেক মন্ত্রী মির্জা আব্বাস বলেন, ২০০৮ সালে দেশনেত্রী খালেদা জিয়া নির্বাচন করতে চাননি। কিন্তু মুজাহিদ সাহেব (আলহাজ আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ—আল্লাহ বেহেশত নসিব করুন) জোর করে নির্বাচনে নিলেন। তারপর কী হলো? জামায়াত থেকে পাঁচজনের ফাঁসি হলো। আমাদের থেকে সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ফাঁসি হলো। ওই নির্বাচনই তাদের ফাঁসির দিকে নিয়ে গেছে। এর পরও আওয়ামী লীগের সঙ্গে তাদের পিরিত শেষ হয় না।

আরও পড়ুন: ডাকসু নির্বাচিতরা রাজনীতিতে ভালো করতে পারেনি: সালাহউদ্দিন আহমদ

কারাগারের স্মৃতিচারণা করে তিনি বলেন, আমি বহুদিন জেল খেটেছি। আমার সঙ্গে নিজামী, মুজাহিদ, ডা. তাহেরসহ যাদের ফাঁসি হয়েছে তারা ছিলেন। আমি একদিন নিজামী সাহেবকে প্রশ্ন করেছিলাম—আপনারা কেন নির্বাচনে গেলেন? নিজেরাও গেলেন, আমাদেরও নিয়ে গেলেন। উনি কোনো উত্তর দেননি, চুপ করে ছিলেন।

জিয়াউর রহমানকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক উল্লেখ করে মির্জা আব্বাস বলেন, শহীদ জিয়া মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে নিয়ে দেশকে স্বাধীন করেছিলেন। আমি নিজেও মুক্তিযোদ্ধা। আমি বিশ্বাস করি, একমাত্র বিএনপির হাতেই দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নিরাপদ।

তিনি আরও বলেন, ডাকসু নির্বাচনে যা হয়েছে, সেখান থেকে শিক্ষা নিতে হবে। বিএনপির ভেতরে কেউ সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি বা টেন্ডারবাজি করলে জায়গা হবে না। তারেক রহমান স্পষ্ট বলেছেন, এসবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আওয়ামী লীগ বিএনপির ভেতরে ঢুকে অপকর্ম করছে, আবার জামায়াতের সঙ্গেও মিলে অপকর্ম করছে। অথচ সব দোষ বিএনপির ঘাড়ে চাপানো হচ্ছে।

স্মরণসভায় মির্জা আব্বাস প্রয়াত আব্দুল্লাহ আল নোমানকে স্মরণ করে বলেন, নোমান ভাইয়ের মতো একজন ভালো, সৎ, নির্মোহ রাজনৈতিক সঙ্গী পাওয়া খুব ডিফিকাল্ট। একসঙ্গে মন্ত্রী ছিলাম, আন্দোলন করেছি, হাসিনাকে উৎখাত করেছি। বিএনপি তাকে যথাযথ মূল্যায়ন করতে পারেনি। উনার দলের কাছ থেকে পাওনা ছিল, কিন্তু সেটা আমরা দিতে পারিনি। আজ যদি তিনি বেঁচে থাকতেন, আমাদের সামনের আন্দোলনে সহযোগী হতেন।

তিনি বলেন, বিএনপির বিরুদ্ধে দেশে ও দেশের বাইরে ষড়যন্ত্র চলছে। কারণ বিএনপি একমাত্র দল যার হাতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং মানুষের জানমাল নিরাপদ।

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ও সাবেক রাষ্ট্রদূত গোলাম আকবর খন্দকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত স্মরণসভায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুবর রহমান শামীম, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক কাদের গনি চৌধুরী, প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক নসরুল কদির, মরহুম নোমানের ছেলে সাঈদ আল নোমানসহ সিনিয়র নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়