News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৬:৪৮, ১৮ নভেম্বর ২০২৫

সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশে দণ্ডিতদের বক্তব্য নিষিদ্ধ ঘোষণা

সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশে দণ্ডিতদের বক্তব্য নিষিদ্ধ ঘোষণা

ছবি: সংগৃহীত

দণ্ডিত ও পলাতক আসামিদের বক্তব্য ও বিবৃতি প্রচারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। জাতীয় সাইবার সুরক্ষা এজেন্সি (এনসিএসএ) একাধিক বিবৃতি ও বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে গণমাধ্যম ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলোকে এ বিষয়ে সতর্ক করেছে।

মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের ফেসবুক পেজে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, এনসিএসএ দেশের বিভিন্ন ডিজিটাল ও ইলেকট্রনিক মাধ্যমে দণ্ডপ্রাপ্ত ও পলাতক আসামিদের মিথ্যা ও উসকানিমূলক বক্তব্য প্রচার নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, এসব বক্তব্যে ঘৃণামূলক ও জাতিগত বিদ্বেষমূলক বার্তা রয়েছে, যা জনমনে সহিংসতার উদ্বেগ সৃষ্টি করছে এবং ব্যাপকভাবে বিশৃঙ্খলা ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ছড়িয়ে দিচ্ছে।

এতে বলা হয়, আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচার দেশের সামাজিক স্থিতিশীলতা নষ্ট করছে এবং সরাসরি সহিংসতার আহ্বান (কল ফর ভায়োলেন্স) ছড়াচ্ছে। এসব বক্তব্যে অগ্নিসন্ত্রাস ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের নির্দেশনা রয়েছে।

উল্লেখ্য, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ সোমবার (১৭ নভেম্বর) শেখ হাসিনাকে দুটি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে। ৪৫৩ পৃষ্ঠার রায়ে ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে বলে জানায়।

বর্তমানে ভারতে অবস্থানরত শেখ হাসিনা আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে বিবেচিত।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মুহম্মদ জসীম উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এনসিএসএ গণমাধ্যমকে সতর্ক করে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কিছু প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক সংবাদমাধ্যম এবং অনলাইন নিউজ পোর্টাল দণ্ডপ্রাপ্ত ও পলাতক আসামি শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচার করছে, যা সামাজিক স্থিতিশীলতা বিঘ্নিত করছে এবং সহিংসতা ও অপরাধমূলক কার্যকলাপের আহ্বান জানাচ্ছে।

এনসিএসএ সাংবাদিকতা ও অভিব্যক্তির স্বাধীনতাকে সম্মান করে জানালেও, দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের সহিংসতা ও উসকানিমূলক বক্তব্য প্রচার আইনের পরিপন্থী বলে উল্লেখ করেছে।

আরও পড়ুন: ত্রয়োদশ নির্বাচনে ভোট দেবেন ১২ কোটি ৭৬ লাখের বেশি মানুষ

এনসিএসএ বারবার সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর বিভিন্ন ধারা উল্লেখ করে গণমাধ্যম ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলোকে সতর্ক করেছে।

  • ধারা ৪ (অতিঅরাষ্ট্রিক প্রয়োগ): বাংলাদেশের কোনো নাগরিক দেশের বাইরে থেকেও যদি এই আইনের অধীন অপরাধ করেন, তবে তা বাংলাদেশে সংঘটিত হয়েছে বলেই গণ্য হবে।
  • ধারা ৮(২) (প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা): আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে বিশ্বাস করার কারণ পেলে, দেশের অখণ্ডতা বা জনশৃঙ্খলা ক্ষুণ্নকারী তথ্য অবিলম্বে অপসারণ বা ব্লক করতে পারবে।
  • ধারা ২৬ (অপরাধ ও দণ্ড): যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে বা ছদ্ম পরিচয়ে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য প্রচার করেন, যা সহিংসতা বা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের নির্দেশনা দেয়, তবে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। এর শাস্তি সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা জরিমানা, অথবা উভয় দণ্ড।

এনসিএসএ জানিয়েছে, আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের বক্তব্য প্রচার বিচার বিভাগের প্রতি অবমাননা এবং জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টির শামিল।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। প্রয়োজনে এনসিএসএ মহাপরিচালকের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট প্ল্যাটফর্ম বা বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) অনুরোধ জানানো হবে।

গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীদের তাই কঠোরভাবে সতর্ক করা হয়েছে— আদালতের দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের বক্তব্য-বিবৃতি প্রচার থেকে বিরত থাকতে হবে। অন্যথায় আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়