‘দুঃখিত, ক্রিকেটে রাজনীতি পছন্দ করি না’
ছবি: সংগৃহীত
ভারত ও পাকিস্তানের ক্রিকেট বোর্ডের মধ্যকার দীর্ঘদিনের তিক্ত সম্পর্ক এশিয়া কাপ ২০২৫-কে কেন্দ্র করে নতুন মাত্রা পেয়েছে। দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত ফাইনাল ম্যাচে ভারতীয় ক্রিকেটারদের পাকিস্তানি খেলোয়াড়দের সঙ্গে হাত মেলাতে অস্বীকৃতি এবং ম্যাচ-পরবর্তী ট্রফি বিতরণে অস্বাভাবিকতা দুই বোর্ডের সম্পর্ককে আরও সংকটময় করে তুলেছে।
দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফাইনালে সূর্যকুমার যাদবের নেতৃত্বে ভারত পাঁচ উইকেটে হারায় সালমান আঘার নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানকে। এটি ছিল ভারতের নবম এশিয়া কাপ শিরোপা জয়। কিন্তু ম্যাচ শেষে ভারতীয় দল এসিসি চেয়ারম্যান মহসিন নাকভির কাছ থেকে বিজয়ী ট্রফি ও মেডেল নিতে অস্বীকৃতি জানায়। নাকভি পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পিসিবির চেয়ারম্যান হওয়ায় রাজনৈতিক উত্তেজনার ছায়া পড়ে মাঠে। ফলে শিরোপা জয় হলেও ট্রফিবিহীন উদযাপনেই শেষ হয় ভারতের জয়োল্লাস।
এই ঘটনার পরপরই বিসিসিআই ও পিসিবির সম্পর্ক কার্যত ভাঙনের মুখে পড়ে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সিরিজ আগেই বন্ধ ছিল, এবার এশিয়া কাপের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভবিষ্যতে দুই দলের মুখোমুখি হওয়াও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ক্রিকেটবিশ্বে এই আচরণের ব্যাপক সমালোচনা চলছে।
পাকিস্তানের কিংবদন্তি পেসার ওয়াসিম আকরাম এই পরিস্থিতিতে স্পষ্ট অবস্থান নিয়েছেন।
উইজডেন ক্রিকেটকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, দুঃখিত, কিন্তু ক্রিকেটে রাজনীতি আমি পছন্দ করি না। সোজাসাপ্টা বললে, খেলাধুলাকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখা উচিত।
আরও পড়ুন: ত্রিদেশীয় সিরিজ ছাড়ছে বাংলাদেশ
তিনি আরও বলেন, লিগ ক্রিকেটে সব দেশের খেলোয়াড়দের সুযোগ দেওয়া উচিত। সাহসী হোন, বড় হোন। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে তা এখন হচ্ছে না। এখানেই আইসিসি ও ক্রিকেট বোর্ডগুলোর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। দল বা লিগ কার মালিকানায় তা গুরুত্বপূর্ণ নয়, সব দেশের খেলোয়াড়দেরই সুযোগ দেওয়া উচিত।
এদিকে, এশিয়া কাপের ট্রফি বিতরণে বিলম্ব নিয়ে আইসিসির ত্রৈমাসিক সভায় বিষয়টি আলোচনায় আসতে পারে বলে জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা আইএএনএস।
সূত্রের বরাতে জানা গেছে, শুক্রবার সব বোর্ড প্রধান আইসিসি বোর্ড মিটিংয়ে একত্র হবেন এবং সেখানেই ট্রফি হস্তান্তরের ইস্যু তুলবে বিসিসিআই। এ বিষয়ে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলকে (এসিসি) ইতোমধ্যেই আনুষ্ঠানিক চিঠি পাঠানো হয়েছে, তবে এখনো কোনো অগ্রগতি হয়নি।
বিসিসিআই সচিব দেবজিত সাইকিয়াও ইঙ্গিত দিয়েছেন যে ট্রফি হস্তান্তরের বিলম্ব নিয়ে তারা আলোচনায় তুলবেন।
তিনি জানান, ১০ দিন আগে এ বিষয়ে এসিসিকে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে।
এই জটিলতা শুধু ট্রফি বিতরণেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং তা দুই দেশের ক্রিকেটীয় সম্পর্কের ভবিষ্যৎকেও প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে। রাজনৈতিক উত্তেজনা, কূটনৈতিক দ্বন্দ্ব এবং মাঠের আচরণ মিলিয়ে এশিয়া কাপ ২০২৫ হয়ে উঠেছে দক্ষিণ এশিয়ার ক্রিকেট রাজনীতির এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি








