News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ২১:১৮, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আপডেট: ২১:১৮, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

শেখ হাসিনার পরিবারসহ ১১ গ্রুপের ৫৭ হাজার কোটি টাকার সম্পদ জব্দ

শেখ হাসিনার পরিবারসহ ১১ গ্রুপের ৫৭ হাজার কোটি টাকার সম্পদ জব্দ

ছবি: সংগৃহীত

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারসহ দেশের প্রভাবশালী ১১টি শিল্প গ্রুপের বিপুল সম্পদ জব্দ করেছে আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। 

সংস্থাটির সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আদালতের নির্দেশে দেশে-বিদেশে মোট ৫৭ হাজার ২৬০ কোটি ৫৬ লাখ টাকার স্থাবর, অস্থাবর সম্পদ ও শেয়ার জব্দ করা হয়েছে।

শেখ হাসিনার পরিবার ছাড়াও পাচারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যেসব শিল্প গ্রুপের সম্পদ জব্দ করা হয়েছে সেগুলো হলো— সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর আরামিট গ্রুপ, এস আলম গ্রুপ, বেক্সিমকো গ্রুপ, সিকদার গ্রুপ, নাসা গ্রুপ, বসুন্ধরা গ্রুপ, ওরিয়ন গ্রুপ, জেমকন গ্রুপ, নাবিল গ্রুপ ও সামিট গ্রুপ। এসব গ্রুপের প্রধান ব্যক্তিদের ব্যক্তিগত আর্থিক লেনদেনও তদন্তের আওতায় আনা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশীয় সম্পদের মধ্যে স্থাবর সম্পদের পরিমাণ ৭ হাজার ৭৭৪ কোটি টাকা এবং অস্থাবর সম্পদ ৩৯ হাজার ৩০ কোটি টাকা মিলিয়ে মোট ৪৬ হাজার ৮০৫ কোটি টাকা জব্দ হয়েছে। এর বাইরে বিদেশে থাকা স্থাবর ৬ হাজার ৯৭ কোটি ও অস্থাবর ৪ হাজার ৩৫৪ কোটি টাকা মিলিয়ে ১০ হাজার ৪৫৫ কোটি ৫৪ লাখ টাকার সম্পদও জব্দ করা হয়েছে। সব মিলিয়ে দেশে-বিদেশে মোট ৫৭ হাজার ২৬০ কোটি ৫৬ লাখ টাকার সম্পদ জব্দের নির্দেশ কার্যকর হয়েছে।

আরও পড়ুন: শেখ হাসিনাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন জমার সময় বাড়ল

বিএফআইইউ সূত্র জানায়, এ পর্যন্ত এক হাজার ৫৭৩টি ব্যাংক হিসাবে ১ হাজার ৬৮০ কোটি টাকা ও তিন মিলিয়ন মার্কিন ডলার স্থগিত রয়েছে। একইসঙ্গে ১৮৮টি বিও (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স) অ্যাকাউন্টে থাকা প্রায় ১৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকার অর্থ ও শেয়ার স্থগিত রাখা হয়েছে।

তদন্তের স্বার্থে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) নিয়ে একটি যৌথ তদন্ত দল গঠন করা হয়েছে। এর সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করছে বিএফআইইউ। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিশেষ নিরাপত্তাবিশিষ্ট কক্ষে সংরক্ষিত নথি বিশ্লেষণ করে তদন্ত কার্যক্রম চলছে। অন্তর্বর্তী সরকারের উচ্চপর্যায় থেকেও বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে অনুসন্ধানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

পাচারকৃত অর্থ উদ্ধারে আন্তর্জাতিক সহযোগিতাও নেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে ১১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১০টির বিষয়ে প্রাথমিক প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে আন্তর্জাতিক চারটি সংস্থার সহায়তায়। এগুলো হলো— দ্য স্টোলেন অ্যাসেট রিকভারি (স্টার), ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্টি করাপশন কোঅর্ডিনেশন সেন্টার (আইএসিসিসি), যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস এবং ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর অ্যাসেট রিকভারি (আইসিএআর)।

তবে এত বিপুল সম্পদ জব্দের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা গ্রুপগুলোর পক্ষ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। আইন বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এ ধরনের বৃহৎ পরিসরের সম্পদ জব্দ দেশের বিচারিক ও প্রশাসনিক কাঠামোর জন্য এক বড় পরীক্ষা হয়ে দাঁড়াবে। বিশেষ করে বিদেশি সম্পদ উদ্ধারে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়ার কারণে সময় লাগতে পারে।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়