বুয়েট শিক্ষার্থী সনি হত্যা মামলার আসামি টগর অস্ত্রসহ গ্রেফতার

ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী সাবেকুন নাহার সনি হত্যা মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি ও সাবেক ছাত্রদল নেতা মো. মুশফিক উদ্দিন টগরকে (৫০) অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র বেচাকেনার অভিযোগে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
র্যাব জানায়, বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর আজিমপুর এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে একটি রিভলবার, ১৫৬ রাউন্ড গুলি, একটি গুলির খোসা, দুটি মুখোশ ও দুটি মুঠোফোন উদ্ধার করা হয়।
শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাব-৩ এর পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফায়েজুল আরেফীন।
তিনি বলেন, মুশফিক একজন পেশাদার অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র কারবারি। তিনি সীমান্ত এলাকা থেকে অস্ত্র এনে ঢাকায় বিভিন্নজনের কাছে বিক্রি করতেন। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
তিনি আরও জানান, মুশফিকের বিরুদ্ধে রাজধানীর মুগদা থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা রয়েছে।
২০০২ সালের ৮ জুন বুয়েট ছাত্রদলের তৎকালীন সভাপতি মোকাম্মেল হায়াত খান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম (এসএম) হলের তৎকালীন ছাত্রদল নেতা মুশফিক উদ্দিন টগর গ্রুপের মধ্যে দরপত্র কেন্দ্রিক সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন বুয়েটের কেমিপ্রকৌশল বিভাগের ১৯৯৯ ব্যাচের ছাত্রী সাবেকুন নাহার সনি। সেদিন ক্লাস শেষে হলে ফেরার পথে তিনি গুলিবিদ্ধ হন। এ হত্যাকাণ্ডের পর সারা দেশে তীব্র আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে।
ঢাকার বিচারিক আদালতে ২০০৩ সালের ২৯ জুন এ মামলার রায় ঘোষণা করা হয়। রায়ে ছাত্রদলের নেতা মুশফিক উদ্দিন টগর, মোকাম্মেল হায়াত খান ওরফে মুকিত এবং নুরুল ইসলাম ওরফে সাগরকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া আরও পাঁচজনকে দেওয়া হয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।
আরও পড়ুন: লিবিয়ায় মাফিয়াদের গুলিতে নিহত মাদারীপুরের জীবন ঢালী
পরে ২০০৬ সালের ১০ মার্চ উচ্চ আদালত মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামির দণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে রূপান্তর করেন। একই সঙ্গে যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত পাঁচ আসামির মধ্যে দুজনকে খালাস দেওয়া হয়। দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে চারজন এখনও কারাগারে আছেন, তবে মোকাম্মেল হায়াত ও নুরুল ইসলাম এখনো পলাতক।
মুশফিক উদ্দিন টগর দীর্ঘ কারাভোগ শেষে ২০২২ সালে মুক্ত হন। মুক্তির পর তিনি আবারও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন বলে র্যাবের দাবি।
বৃহস্পতিবার রাতে তাকে আজিমপুর থেকে গ্রেফতারের পর র্যাব গণমাধ্যমকে তথ্য জানায়।
শুক্রবার আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, তার কাছ থেকে উদ্ধার করা অস্ত্র ও গোলাবারুদের পাশাপাশি সংগৃহীত তথ্য কাজে লাগিয়ে রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চলছে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি