News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৩:৫৪, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

জুলাই সনদেই ভবিষ্যৎ পথরেখা: ড. আলী রীয়াজ

জুলাই সনদেই ভবিষ্যৎ পথরেখা: ড. আলী রীয়াজ

ফাইল ছবি

জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ বাস্তবায়নের মাধ্যমে রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ পথরেখা নির্ধারিত হবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ।

তিনি বলেন, দুয়েকটি বিষয়ে নোট অব ডিসেন্ট থাকলেও ৮৪টি বিষয়ের অধিকাংশেই রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়েছে। এর মানে হলো এক ধরনের রাজনৈতিক ঐকমত্য তৈরি হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুর পৌনে ১২টার দিকে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। 

দিনব্যাপী এই বৈঠকে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় কনসেন্সাস পার্টি (এনসিপি)সহ ৩০টি রাজনৈতিক দল ও জোটের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।

অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানান, ৩১ জুলাই আনুষ্ঠানিক বৈঠক শেষ হলেও এর পর থেকে একাধিক অনানুষ্ঠানিক বৈঠক হয়েছে। বিশেষ করে অঙ্গীকারনামা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। এ প্রক্রিয়ায় দুই সাবেক বিচারপতি, তিনজন আইনজীবী ও দুইজন আইনশিক্ষক মতামত দিয়েছেন। এছাড়া অ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গেও পরামর্শ নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, এই প্রক্রিয়ায় কমিশন আসলে নিজের পক্ষ থেকে কিছু চাপিয়ে দিতে চায় না। রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতের ভিত্তিতেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবে সরকার। অনেকে বলেছেন—কিছু বিষয় বর্তমান সরকারও বাস্তবায়ন করতে পারে। আজকের আলোচনা শেষে সব দলের অবস্থান সরকারকে জানাতে পারব। যত দ্রুত এটি সম্পন্ন করতে পারব, তত দ্রুত সরকারের কাছে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে।

কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে বেশকিছু সুপারিশ পাওয়া গেছে। 

আরও পড়ুন: স্বাস্থ্যখাতের দুর্নীতির প্রধান মিঠু গ্রেফতার

তাদের মতে, সনদের সংবিধান-সংক্রান্ত সংস্কার প্রস্তাবগুলো রাষ্ট্রপতির বিশেষ সাংবিধানিক আদেশের (Special Constitutional Order) মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা যেতে পারে। অন্য প্রস্তাবগুলো অধ্যাদেশ ও সরকারের নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে বাস্তবায়নের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

পাশাপাশি পুরো সনদকে সংবিধানের সঙ্গে তফসিল আকারে যুক্ত করার বিষয়েও মতামত এসেছে। তবে এটিকে সংবিধানের ওপর প্রাধান্য নয়, বরং সংবিধানের অংশ করার দিকেই বিশেষজ্ঞদের সুপারিশ। এই আলোচনায় গণভোটের চিন্তা বাতিল করা হয়েছে। 
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী, বাস্তবায়নের পদ্ধতি জুলাই সনদের অংশ হবে না, বরং কমিশনের সুপারিশ বা পরামর্শ আকারে সরকারের কাছে দেওয়া হবে।

যেসব সংস্কার প্রস্তাবে বিএনপিসহ কয়েকটি দলের ভিন্নমত বা নোট অব ডিসেন্ট আছে, সেগুলোও সনদে উল্লেখ থাকবে। তবে এসব বাস্তবায়নের জন্য আলাদা কোনো বিশেষ পদ্ধতি নির্ধারণ করা হয়নি।

আজকের বৈঠকের অন্যতম লক্ষ্য ছিল জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি গড়তে অংশগ্রহণকারী দলগুলোর সম্মতি আদায় করা। সেটি সম্ভব হলে আজকের বৈঠকই হবে ঐকমত্য কমিশনের সর্বশেষ ও চূড়ান্ত বৈঠকি আয়োজন। তবে বিশেষ প্রয়োজনে আলোচনার সময়সীমা আরও বাড়ানো হতে পারে কিনা—সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত বৈঠক শেষে জানাবে কমিশন।

উল্লেখ্য, কমিশনের বর্ধিত মেয়াদ শেষ হবে আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর। কাজেই নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই চূড়ান্ত জুলাই সনদ ও বাস্তবায়ন সুপারিশ সরকারের কাছে হস্তান্তর করে দায়িত্ব শেষ করতে চায় ঐকমত্য কমিশন।

অধ্যাপক আলী রীয়াজ রাজনৈতিক দলগুলোর অব্যাহত ও দৃঢ় সহযোগিতার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, আশা করি, বিশেষজ্ঞদের সুপারিশ অনুযায়ী জুলাই সনদ বাস্তবায়নেও আপনাদের সহযোগিতা ও সম্মতি আমরা পাব।

বৈঠকে কমিশনের সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন—বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. মো. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়