২৪ ঘণ্টায় নতুন ডেঙ্গু রোগী ৩৯৪, ঝুঁকি বাড়ছে বরিশালে

ফাইল ছবি
দেশে ডেঙ্গু জ্বর পরিস্থিতি আবারও উদ্বেগজনক রূপ নিচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে নতুন করে ৩৯৪ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, যা চলতি বছরের মধ্যে একদিনে সর্বোচ্চ আক্রান্তের রেকর্ড। তবে এদিন কোনো মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুম থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১৫৭ জন রোগী শনাক্ত হয়েছেন বরিশাল বিভাগের সিটি করপোরেশন এলাকার বাইরে। এছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগের বাইরে ৫৮ জন, রাজশাহীতে ৪৪ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ৫০ জন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ৪২ জন, ঢাকার বাইরের বিভাগে ৩৫ জন এবং খুলনায় ৮ জন রোগী নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে সারাদেশের হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১ হাজার ৮০ জন। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন ৩১০ জন এবং ঢাকার বাইরের জেলা ও বিভাগীয় হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৭৭০ জন রোগী।
আরও পড়ুন: করোনায় মৃত্যুশূন্য দিন, নতুন শনাক্ত ২১
বিগত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন ৩৫৩ জন। চলতি বছরের শুরু থেকে ২৪ জুন পর্যন্ত মোট ৭ হাজার ৪৩০ জন ডেঙ্গু রোগী সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন। এ পর্যন্ত দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৫৪৪ জনে। তাদের মধ্যে মৃত্যুবরণ করেছেন ৩৪ জন—যার মধ্যে ১৭ জন পুরুষ এবং ১৭ জন নারী।
চলতি জুন মাসের শুরু থেকে ২৪ জুন পর্যন্ত সময়কালে হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন ৪ হাজার ১৯৯ জন ডেঙ্গু রোগী। আক্রান্তদের মধ্যে ৫৮ দশমিক ৮ শতাংশ পুরুষ এবং ৪১ দশমিক ২ শতাংশ নারী বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
পূর্ববর্তী বছরের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ২০২৪ সালে দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন ১ লাখ ১ হাজার ২১৪ জন এবং মৃত্যু হয়েছিল ৫৭৫ জনের। এর আগের বছর ২০২৩ সালে চিত্রটি ছিল আরও ভয়াবহ; ওই বছর মোট ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন এবং মৃত্যু হয় ১ হাজার ৭০৫ জনের।
চলতি বছরের সংক্রমণ এখনো আগের দুই বছরের তুলনায় নিয়ন্ত্রিত থাকলেও সাম্প্রতিক বৃদ্ধির হার বিশেষজ্ঞদের মধ্যে নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করছে। বিশেষ করে বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের সিটি করপোরেশনের বাইরে ডেঙ্গুর প্রকোপ স্পষ্টভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, বর্তমানে সারাদেশে এডিস মশা বিস্তারের আশঙ্কাজনক পরিবেশ বিরাজ করছে। অতীত অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবারের মৌসুমে আগাম প্রস্তুতি ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা জোরদার করার তাগিদ দিয়েছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
তাদের মতে, এখনই সময় যথাযথ পদক্ষেপ না নিলে জুলাই-আগস্টে পরিস্থিতি দ্রুত অবনতি ঘটতে পারে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি