News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৭:০৭, ২৪ জুন ২০২৫

‘চিকিৎসা শেষে পুনর্বাসন ও ভাতা পাবেন আহত জুলাই যোদ্ধারা’

‘চিকিৎসা শেষে পুনর্বাসন ও ভাতা পাবেন আহত জুলাই যোদ্ধারা’

ফাইল ছবি

চব্বিশ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতদের ‘জুলাই যোদ্ধা’ এবং নিহতদের ‘জুলাই শহীদ’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে মাসিক ভাতা, এককালীন আর্থিক সহায়তা, চিকিৎসা ও পুনর্বাসন সুবিধা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। 

সোমবার (২৪ জুন) সচিবালয়ে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থাকে (বাসস) দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, জুলাই মাস থেকেই ক্যাটাগরি অনুযায়ী আহত ‘জুলাই যোদ্ধারা’ মাসিক ভাতা পাবেন এবং সরকারি হাসপাতালগুলোতে আজীবন বিনামূল্যে চিকিৎসা নিতে পারবেন। ‘এ’, ‘বি’ ও ‘সি’—এই তিন শ্রেণিতে বিভক্ত যোদ্ধারা এককালীন ও মাসিক আর্থিক সহায়তা, প্রশিক্ষণ, চাকরিতে অগ্রাধিকার ও পরিচয়পত্রসহ বিভিন্ন সুযোগ পাবেন।

ক্যাটাগরি ‘এ’ তে ৪৯৩ জনকে রাখা হয়েছে, যারা অন্যের সাহায্য ছাড়া জীবনযাপন করতে অক্ষম। তারা মাসে ২০ হাজার টাকা ভাতা, এককালীন ৫ লাখ টাকা (এর মধ্যে ২ লাখ দেওয়া হয়েছে) এবং প্রয়োজন অনুযায়ী বিদেশে চিকিৎসা ও পুনর্বাসন সুবিধা পাবেন। ইতোমধ্যে ৭ জনকে তুরস্ক ও অনেকে থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে।

ক্যাটাগরি ‘বি’ তে ৯০৮ জন আহত যোদ্ধা রয়েছেন, যারা আংশিক অক্ষম। তারা মাসে ১৫ হাজার টাকা ভাতা, এককালীন ৩ লাখ টাকা (এর মধ্যে ১ লাখ পেয়েছেন) এবং চাকরিতে অগ্রাধিকারসহ পুনর্বাসনের সুযোগ পাবেন।

আরও পড়ুন: একনেকে ৯ হাজার কোটি টাকার ১৭ প্রকল্প অনুমোদন

চিকিৎসার পর যারা সুস্থ হয়ে উঠেছেন, তাদের ক্যাটাগরি ‘সি’ তে রাখা হয়েছে। মোট ১০ হাজার ৬৪২ জন এই ক্যাটাগরিতে অন্তর্ভুক্ত। তারা এককালীন ১ লাখ টাকা পেয়েছেন এবং জুলাই থেকে প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা করে ভাতা পাবেন।

অন্যদিকে, গেজেট আকারে ৮৩৪ জন ‘জুলাই শহীদ’-এর তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। তাদের পরিবারকে এককালীন ৩০ লাখ টাকা (এর মধ্যে ১০ লাখ ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রদান করা হয়েছে এবং বাকি ২০ লাখ আগামী অর্থবছরে জাতীয় সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে দেওয়া হবে) ও মাসিক ২০ হাজার টাকা ভাতা দেওয়া হবে। শহীদ পরিবারের কর্মক্ষম সদস্যরা সরকারি ও আধা-সরকারি চাকরিতে অগ্রাধিকার পাবেন। তবে ১৩৪টি পরিবার ওয়ারিশ জটিলতার কারণে অর্থ পেতে বিলম্বের শিকার হচ্ছে, যা দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন উপদেষ্টা।

তিনি জানান, আহতদের পুনর্বাসনে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ১০ম তলায় ‘জুলাই যোদ্ধা পুনর্বাসন অধিদপ্তর’ নামে একটি পৃথক বিভাগ গঠন করা হয়েছে। এতে ২০ জন কর্মকর্তা কাজ করছেন এবং একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে সার্বক্ষণিকভাবে জুলাই যোদ্ধাদের কল্যাণে কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

ফারুক-ই-আজম বলেন, মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত যোদ্ধাদের তালিকা করতে ৫৪ বছর লেগেছে, অথচ আমরা সাত-আট মাসেই জুলাই শহীদ ও যোদ্ধাদের চূড়ান্ত তালিকা প্রণয়ন করেছি। এটি সরকারের আন্তরিকতা ও দায়িত্ববোধের নিদর্শন।

তিনি আরও বলেন, যদি কোনো ব্যক্তি অভিযোগ করেন যে তার স্বজন জুলাই অভ্যুত্থানে নিখোঁজ হয়েছেন, তবে গণকবর থেকে ডিএনএ সংগ্রহ করে তার পরিচয় শনাক্তের জন্য সরকার আন্তরিকভাবে বিবেচনা করবে।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে স্মরণীয় করে রাখতে প্রতি বছর ৫ আগস্ট ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস’ হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। একে জাতীয় দিবসের মর্যাদা দিয়ে ভবিষ্যতে যথাযোগ্য গুরুত্বসহকারে পালনের পরিকল্পনা রয়েছে।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়