News Bangladesh

রাজনীতি ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১২:২৯, ২২ জুন ২০২৫

সাবেক ৩  সিইসির বিরুদ্ধে ইসিতে বিএনপির অভিযোগ, থানায় মামলা

সাবেক ৩  সিইসির বিরুদ্ধে ইসিতে বিএনপির অভিযোগ, থানায় মামলা

ছবি: সংগৃহীত

সাবেক তিন প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপি। 

রবিবার (২২ জুন) দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের স্বাক্ষরিত একটি আবেদনপত্র প্রধান নির্বাচন কমিশনার এম এম নাসির উদ্দিনের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে।  বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও মামলা ও তথ্য সংরক্ষণ সমন্বয়ক সালাহ উদ্দিন খানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল আবেদনটি নির্বাচন কমিশনে জমা দেয়। প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন মিজানুর রহমান, ইকবাল হোসেন, শরিফুল ইসলাম ও নাঈম হাসান।

২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারী সাবেক তিন সিইসি ও তাদের কমিশনের বিরুদ্ধে নির্বাচনের নামে ‘প্রহসন’ পরিচালনার অভিযোগ এনেছে বিএনপি। এ নিয়ে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে, যাতে ১৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং আরও কিছু অজ্ঞাতনামাও রাখা হয়েছে।

সালাহ উদ্দিন খান বলেন, 'এই তিনটি নির্বাচনের ব্যাপারে আমরা বারবার অভিযোগ করেছি। কিন্তু তৎকালীন নির্বাচন কমিশন কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। আমরা আশা করি, বর্তমান নির্বাচন কমিশন অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে।'

আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত তিনটি জাতীয় নির্বাচনের (২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪) সময় দায়িত্ব পালনকারী সিইসি, কমিশনার ও ইসি সচিবালয়ের কর্মকর্তাদের ভূমিকা তদন্তে সম্প্রতি একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গত ১৬ জুন ঐকমত্য কমিশনের এক বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ নির্দেশনা জানানো হয়।

জানা যায়, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির দশম নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ১৫৩টিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য হয়ে যান। সেই সংসদকে ‘বিনা ভোটের সংসদ’ আখ্যা দেয় ভোট বর্জন করা বিএনপি। কাজী রকিব উদ্দীন আহমদ নেতৃত্বাধীন এ কমিশনে চার নির্বাচন কমিশনার ছিলেন- সাবেক অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ আবু হাফিজ, সাবেক যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ আব্দুল মোবারক, অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাবেদ আলী এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা দায়রা জজ মো. শাহনেওয়াজ।

আরও পড়ুন: বিকেলে নিবন্ধনের জন্য ইসিতে যাচ্ছে এনসিপি

২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের একাদশ জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিলেও ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ উঠে। অধিকাংশ ভোট আগের রাতে হয়ে যাওয়ার অভিযোগের মধ্যে বিরোধীরা মাত্র সাতটি আসনে জয় পায়। সে নির্বাচনের নাম হয় ‘রাতের ভোট’। কেএম নূরুল হুদা নেতৃত্বাধীন এ কমিশনের সদস্য ছিলেন সাবেক সচিব রফিকুল ইসলাম, সাবেক অতিরিক্ত সচিব মাহবুব তালুকদার, অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজ কবিতা খানম ও অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহাদৎ হোসেন চৌধুরী।

২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারিতে বিএনপি ও সমমনাদের বর্জনে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক দেখাতে শরিক ও বিরোধীদল জাতীয় পার্টির জন্য আসন ছেড়ে দেয় আওয়ামী লীগ। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীদের সঙ্গে দলের বিদ্রোহীদের। এ নির্বাচনের নাম হয় ‘ডামি’ নির্বাচন। কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন এ কমিশনে চার নির্বাচন কমিশনার ছিলেন— অবসরপ্রাপ্ত জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আলমগীর ও আনিছুর রহমান, অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ রাশেদা সুলতানা ও অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহসান হাবীব খান।

সবশেষ গত ১৬ জুন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এক বৈঠকে আলোচনা শেষে সরকারপ্রধানের দপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে হওয়া বিতর্কিত তিন জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে জড়িত সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিবদের ভূমিকা তদন্তে অবিলম্বে একটি কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।

নিউজবাংলাদেশ.কম/এসবি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়