News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১০:৫২, ২০ জুন ২০২৫

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে আন্তর্জাতিক চাপ জোরদার করুন: তারেক রহমান

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে আন্তর্জাতিক চাপ জোরদার করুন: তারেক রহমান

ছবি: সংগৃহীত

বিশ্ব শরণার্থী দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বার্তায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান রোহিঙ্গা সংকটকে বিশ্বের অন্যতম গুরুতর মানবিক বিপর্যয় হিসেবে উল্লেখ করে, বাংলাদেশ সরকারের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও দাতা সংস্থাগুলোর প্রতি মিয়ানমারের ওপর চাপ অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। 

তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও সম্মানজনক প্রত্যাবাসনের জন্য একটি কার্যকর ও কৌশলী কূটনৈতিক উদ্যোগ গ্রহণ এখন সময়ের দাবি।

শুক্রবার (২০ জুন) বিশ্ব শরণার্থী দিবস সামনে রেখে বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) দেওয়া এ বার্তায় তিনি রোহিঙ্গা সংকটসহ বিশ্বব্যাপী উদ্বাস্তু পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং প্রত্যেক শরণার্থীর নিজ দেশে সম্মানের সঙ্গে ফিরে যাওয়ার অধিকারকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে আহ্বান জানান।

তারেক রহমান বলেন, বাংলাদেশ রোহিঙ্গা সমস্যার সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী। কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফসহ আশপাশের এলাকায় গড়ে উঠেছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবির। বর্তমানে এসব শিবিরে অবস্থান করছে ১৪ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী, যারা গত আট বছর ধরে মিয়ানমারে নিপীড়নের শিকার হয়ে নিজেদের আবাস ছেড়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর প্রশ্নে মিয়ানমার সরকার একাধিকবার প্রতিশ্রুতি দিলেও প্রত্যাবাসন কার্যক্রমে কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়নি। বরং, তারা প্রতিনিয়ত প্রতিশ্রুতির বরখেলাপ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশের বর্তমান সরকারকে অবশ্যই বিশ্ববাসীর কাছে এ বার্তাটি জোরালোভাবে তুলে ধরতে হবে।

আরও পড়ুন: নিবন্ধনের শেষ দিনই ইসিতে আবেদন দেবে এনসিপি

তারেক রহমান জাতিসংঘ ঘোষিত বিশ্ব শরণার্থী দিবসের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন, প্রতি বছর ২০ জুন বিশ্বজুড়ে এই দিবসটি পালিত হয় শরণার্থীদের সম্মান জানানো এবং তাদের দুর্দশার প্রতি আন্তর্জাতিক মনোযোগ আকর্ষণের উদ্দেশ্যে। বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশেও এই দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করা হয়।

তিনি বলেন, জাতিগত সহিংসতা, রাজনৈতিক নিপীড়ন এবং আদর্শগত বিরোধের কারণে আজ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে শরণার্থীদের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এই পরিস্থিতিতে শরণার্থীদের আশ্রয়দাতা দেশগুলোর ভূমিকাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ তার মানবিক দায়িত্ব পালনে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, যার মধ্যে রয়েছে খাদ্য, আশ্রয়, স্বাস্থ্যসেবা এবং শিক্ষা সহায়তা প্রদান।

তারেক রহমান বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ১৯৭১ সালের অভিজ্ঞতা আমাদের মনে করিয়ে দেয় কীভাবে যুদ্ধ ও নিপীড়নের কারণে মানুষ উদ্বাস্তু হয়ে পড়ে। সেই করুণ অভিজ্ঞতা আজও আমাদের স্মৃতিতে গভীরভাবে গেঁথে আছে। তাই রোহিঙ্গাদের প্রতি আমাদের মানবিক সহানুভূতি ও দায়িত্ববোধ আরও বেশি।

তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানে দরকার আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সমন্বিত উদ্যোগ ও চাপ প্রয়োগ। মিয়ানমারের ওপর অব্যাহত কূটনৈতিক ও মানবিক চাপের মাধ্যমে একটি নিরাপদ ও স্বেচ্ছামূলক প্রত্যাবাসনের পরিবেশ তৈরি করতে হবে। এই লক্ষ্য অর্জনে শুধু বাংলাদেশ নয়, বরং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও দাতা সংস্থাগুলোকেও এগিয়ে আসতে হবে।

বার্তায় তিনি বিএনপির পক্ষ থেকে বিশ্বজুড়ে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠীর মর্যাদা রক্ষা এবং তাদের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক উদ্যোগে সক্রিয় সমর্থন অব্যাহত রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

শেষদিকে তিনি বলেন, আমি বিশ্ব শরণার্থী দিবস উপলক্ষ্যে বিশ্বের সব শরণার্থীর প্রতি সংহতি প্রকাশ করছি এবং আহ্বান জানাচ্ছি, আসুন আমরা একসঙ্গে এমন একটি বিশ্ব গড়ে তুলি, যেখানে কেউ জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত হবে না এবং প্রত্যেকের নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার অধিকার ও মর্যাদা নিশ্চিত হবে।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়