News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ২১:৪৫, ২৭ মে ২০২৫

আজহারের খালাসের রায়ে ঢাবিতে বিক্ষোভ

আজহারের খালাসের রায়ে ঢাবিতে বিক্ষোভ

ছবি: সংগৃহীত

একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামের খালাসের রায়ের প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ-মিছিল করেছেন প্রগতিশীল ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীরা। 

মঙ্গলবার (২৭ মে) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক মধুর ক্যানটিন থেকে শুরু হওয়া এই মিছিল রাজু ভাস্কর্যে গিয়ে শেষ হয়।

গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের ব্যানারে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে অংশ নেয় বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, ছাত্র ফেডারেশন, গণতান্ত্রিক ছাত্র পরিষদসহ বিভিন্ন বামপন্থী ছাত্রসংগঠন।

বিক্ষোভকারীরা ‘একাত্তরের বাংলায় রাজাকারের ঠাঁই নাই’, ‘৭১ হারেনি, হেরে গেছে হাসিনা’, ‘আমার মাটি, আমার মা—আলবদরের হবে না’—এমন বিভিন্ন স্লোগানে মুখরিত করে তোলে ক্যাম্পাস।

সকালেই প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্টের সাত বিচারপতির আপিল বেঞ্চ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের রায় বাতিল করে এ টি এম আজহারুল ইসলামকে সব অভিযোগ থেকে খালাস দেন। 

আদালতের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, প্রাসঙ্গিক প্রমাণের অভাবে অভিযোগ টিকেনি। সেই সঙ্গে অন্য কোনো মামলা না থাকলে তাকে মুক্তির নির্দেশ দেওয়া হয়।

রায়ের পরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিবাদের ডাক দেন ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শিমুল কুম্ভকার। এরপর দুপুরে বৈঠকের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট বিকেল ৪টায় মিছিলের সিদ্ধান্ত নেয়। 

আরও পড়ুন: মানবতাবিরোধী মামলায় খালাস পেলেন জামায়াত নেতা আজহার

মিছিল শেষে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শিমুল কুম্ভকার বলেন, একাত্তরে আলবদর বাহিনীর কমান্ডার আজহারুল ইসলামকে আদালত খালাস দিয়ে বলছে, তিনি বাংলাদেশের পক্ষে কাজ করেছেন। স্বাধীনতার ৫৪ বছর পর এই রকম বর্ণনা দিয়ে ইতিহাসকে বিকৃত করা হচ্ছে। এটি শুধু বিচারহীনতা নয়, বরং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে খণ্ডিত করার চেষ্টা।

তিনি আরও বলেন, যদি অন্তর্বর্তী সরকার এই ধরণের রাজাকার পুনর্বাসনের রাজনীতিতে পা বাড়ায়, তবে তাদের পরিণতিও হবে আগের ফ্যাসিবাদী সরকারের মতো।

সমাবেশে বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক জাবির আহমেদ জুবেল বলেন, তিনটি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া একজন যুদ্ধাপরাধীকে যেভাবে খালাস দেওয়া হলো, তা দেশের জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা। ১৯৭১ সালের গণহত্যাকারীদের পক্ষ নেওয়া মানেই জনগণের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়া।

মিছিলের সময় শাহবাগ মোড়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছিল বলে দাবি করলেও শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালিদ মনসুর বলেন, মিছিলে বাধা দেওয়ার বিষয়ে আমি অবগত নই, এবং এমন কোনো নির্দেশও ছিল না।

বক্তারা অভিযোগ করেন, জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের পর জামায়াত-শিবির ও পাকিস্তানপন্থী রাজনৈতিক শক্তিগুলো আবার সক্রিয় হয়ে উঠেছে এবং নিজেদের আন্দোলনের পুরোভাগে দাবি করছে। এই পরিস্থিতিকে ‘বিপজ্জনক রাজনৈতিক পুনরুত্থান’ হিসেবে আখ্যায়িত করে তারা এর বিরুদ্ধে ছাত্রসমাজকে আরও ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়