News Bangladesh

|| নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১০:৪২, ২১ নভেম্বর ২০১৯
আপডেট: ১৩:৫৪, ২ নভেম্বর ২০২০

তিনদিনব্যাপী ‘শালুক’-এর নিবিড় সম্মিলন শুরু শুক্রবার

তিনদিনব্যাপী ‘শালুক’-এর নিবিড় সম্মিলন শুরু শুক্রবার

সময়কে খামচে দিয়ে বালি-কাকড়ের গভীর থেকে লিটল ম্যাগাজিন তুলে আনে মণিমানিক্যের ভাণ্ডার। এ যাত্রায় ‘শালুক’ বরাবরই অবিকল্প ভূমিকা রেখেছে। ‘শালুক’ শুধুমাত্র একটি পত্রিকা নয়, লিটল ম্যাগাজিন কেন্দ্রিক একটি সাহিত্য আন্দোলনের নাম ‘শালুক’। এই চিন্তাকে মনেপ্রাণে ধারণ করে ‘শালুক’-এর ২০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ২২ নভেম্বও শুক্রবার শুরু হচ্ছে তিনদিনব্যাপী শালুক-এর লেখক-পাঠক-শুভাকাক্সক্ষীদের নিবিড় সম্মিলন। জাতীয় জাদুঘর, পানাম নগরী ও পাঠক সমাবেশ কেন্দ্রে এ সম্মিলন চলবে ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত। 

কবি ওবায়েদ আকাশ সম্পাদিত সাহিত্য ও চিন্তা শিল্পের পত্রিকা ‘শালুক’-এর এ সম্মিলনে যোগ দেবেন দেশ-বিদেশের নবীন-প্রবীণ অগণিত কবি-লেখক-শিল্পী-বুদ্ধিজীবী ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। সম্মিলন ঘটবে প্রথম দিন ২২ নভেম্বর ঢাকায় জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে বিকাল ৪টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। এদিন দেশ-বিদেশের লেখক-পাঠক পরিচয় পর্ব, সম্মাননা প্রদান, আলোচনা, বিদেশি কবিদের কবিতাপাঠ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শেষ হবে। 

দ্বিতীয় দিন ২৩ নভেম্বর সকালে বিদেশি অতিথি কবিদের নিয়ে যাওয়া হবে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে ঐতিহাসিক পানাম নগরী ও লোকশিল্প জাদুঘরে। পিকনিক মুডে এ ভ্রমণে থাকবে আলোচনা, কবিতাপাঠ ও খাওয়াদাওয়া-আড্ডাবাজি। 

তৃতীয় দিন সম্মিলন ঘটবে শাহবাগ পাঠক সমাবেশ কেন্দ্রে বিকাল ৪টায়। এদিন থাকবে শালুক-এর লেখক-পাঠক-শুভাকাঙ্ক্ষীদের নিবিড় আড্ডা, কবিতা পাঠ, আলোচনা ও মতবিনিময়।

‘অধুনাবাদ’ নামে ‘শালুক’ একটি সাহিত্য আন্দোলন-তত্ত্ব প্রবর্তন করেছে। সেটি এই সম্মিলনীর মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হবে। তার প্রাথমিক রূপরেখা তুলে ধরা হবে।  

তিন দিনের এ সম্মিলন ব্যাপকভাবে উদ্যাপন করবে ‘শালুক’-এর ২০ বছরের প্রায় পাঁচ শতাধিক লেখক, অগণিত পাঠক, শুভাকাক্সক্ষী, বিজ্ঞাপনদাতা, সহযোগিতাকারী ও ভালবাসার জনেরা। বিপুল এ কর্মযজ্ঞে যারা সহযোগিতা করেছেন এবং করছেন শালুকের সম্পাদকমণ্ডলী তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছে। অনুষ্ঠান সফলভাবে আয়োজনের জন্য সকলের প্রতি সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন শালুকের সম্পাদকমণ্ডলী। 

উল্লেখ্য, আজ থেকে ২০ বছর আগে ১৯৯৯ সালে মাত্র তিন ফর্মায় প্রকাশিত হয়েছিল শালুকের প্রথম সংখ্যা। শালুকের লেখক সংখ্যা বাড়তে বাড়তে এখন তা সাত থেকে আটশো পৃষ্ঠায় প্রকাশিত হয়। দেশ-বিদেশের যেখানেই বাংলাভাষী আছেন সর্বত্র রয়েছে শালুকের লেখক, পাঠক এবং শুভাকাক্সক্ষী। বিশেষ করে উভয় বাংলায় ব্যাপকভাবে পরিচিত ও গ্রহণীয় ‘শালুক’।

‘শালুক’-সস্পাদক ও সময়ের ব্যতিক্রমী ধারার কবি ওবায়েদ আকাশ, যিনি লিটলম্যাগ কেন্দ্রিক সাহিত্য আন্দোলনকে বারবার উৎসাহিত করে আসছেন, শালুক-এর ২০ বছর পূর্তি এ সম্মিলন উপলক্ষে বলেন, শালুক একটি ভিন্ন ধারার পত্রিকা। প্রতিষ্ঠান ও প্রচলিত চিন্তায় বিশ্বাসী নয় শালুক। এই চিন্তা থেকে গত ২০ বছর ধরে পত্রিকাটি প্রকাশিত হয়ে আসছে। শালুকের আছে একঝাঁক নতুন চিন্তার লেখক। তাদের ভাবনায় ভিন্নতা আছে। তারা নতুন কিছু করতে চায়। এই নতুন চিন্তাকে উৎসাহিত করতে এবং ভিন্ন চিন্তাকে উস্কে দিতে শালুকের এই সাহিত্য যাত্রা জরুরি। আর যাত্রাপথে ২০ বছর একটি উল্লেখযোগ্য ব্যাপার। এই কুড়ি বছরের স্বতন্ত্র চলাকে উৎসাহিত করতে এ উৎসব উদ্যাপিত হচ্ছে। 

শালুক-এ লিখেছেন ২০ বছরে পাঁচ শতাধিক লেখক। শালুক তার সেরা লেখকদের সম্মানিত করতে চায়। কিন্তু সে সুযোগ এর আগে সেভাবে আসেনি। এ বছর সম্মিলনীতে শালুক তার ক’জন লেখককে পুরস্কার ও সম্মাননা দেবে এবং এ ধারা অব্যাহত রাখবে। এখন থেকে প্রতিবছর ‘শালুক’ একটি করে সাহিত্য সম্মিলন করবে এবং তার লেখকদের সম্মানিত করবে। সবার সহযোগিতা পেলে আগামী বছর থেকে “শালুক ইন্টারন্যাশনাল লিটারেচার ফেস্টিভাল” আয়োজন করবে এবং প্রতিবছর তা অনুষ্ঠিত হবে।  সাধ্যানুযায়ী দেশ বিদেশের ব্যতিক্রমী চিন্তার লেখকদের আমন্ত্রণ জানানো হবে সেখানে।

ওবায়েদ আকাশ আরো বলেন, ২০ বছর পূর্তির প্রস্তুতি হিসেবে আমরা শাহবাগ পাঠক সমাবেশ কেন্দ্রে শালুক সাহিত্যসন্ধ্যা নামে একটি আড্ডা শুরু করেছি। ২০ বছর পূর্তি সম্মিলনী ঘটাতে এ আড্ডাগুলোর অভিজ্ঞতা আমরা কাজে লাগিয়েছি। আমরা সমকালীন লেখকদের মাঝে সাহিত্যচর্চায় লিটল ম্যাগাজিনের অপরিহার্যতা প্রমাণ করতে চেয়েছি। বোঝাতে চেয়েছি যে, নতুন চিন্তা ও স্বতন্ত্র স্বর নির্মাণে লিটল ম্যাগাজিনের বিকল্প খুঁজে পাওয়া যায় না। অনলাইন, ফেসবুক ভিত্তিক সাহিত্যচর্চা যে আমাদের গভীরতর চিন্তার এলাকায় শূন্যতাও সৃষ্টি করছে, এবং সরাসরি যোগাযোগ না হলে যে ভাবনার সম্পূর্ণ বিনিময় হয় না; এ বিষয়গুলো শালুকের সাহিত্য আড্ডার অন্যতম বিষয়। তিনদিনের এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মূলত আমাদের লিটল ম্যাগাজিন কেন্দ্রিক সাহিত্য চর্চার ধারা আরো বেগবান হবে এবং আমাদের সাহিত্য আরো বেশি নতুন নতুন রাস্তা সৃজনে দিক খুঁজে পাবে। লিটল ম্যাগাজিন কেন্দ্রিক সাহিত্য আন্দোলন ও আড্ডার প্রতি যে নতুন লেখক, ব্যতিক্রমী লেখকদের গভীর আগ্রহ রয়েছে, তা ইতিমধ্যে শালুকের আড্ডায় তাদের প্রবল উপস্থিতিতে প্রমাণিত হয়েছে।   

নিউজবাংলাদেশ.কম/এফএ

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়