খেলোয়াড়দের দাঁত অন্যদের দাঁতের চেয়েও খারাপ
অন্যদের তুলনায় বেশি যত্ন নেবার পরও অভিজাত ক্রীড়াবিদ বা অ্যাথলিটদের দাঁতের সমস্যা বেশি হয়। একটি গবেষণায় এমন চিত্রই উঠে এসেছে।
ইউসিএল-এর বিজ্ঞানীরা এ নিয়ে ৩৫২ জন অ্যাথলিটের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন। যাদের মধ্যে ২০১৬ সালে ব্রাজিলের রিও অলিম্পিকসে অংশগ্রহণকারীও ছিলেন। দেখা গেছে, তারা দিনে অন্তত দুই বার দাঁত মাজেন এবং সুতো দিয়ে পরিষ্কার করেন, তারপরও দাঁত নিয়ে সমস্যায় ভুগছেন।
গবেষকরা বলছেন যে, অ্যাথলিটদের দাঁতের ব্যাপারে আরো যত্নবান হওয়া দরকার। যেমন উচ্চ ফ্লোরাইডের টুথপেস্ট তাদের ব্যবহার করা উচিৎ। এর আগের অনেক গবেষণাতেও অ্যাথলিটদের এ ধরনের সমস্যার দেখা মিলেছে। ২০১২ সালে লন্ডনে প্রতিযোগিতামূলক ফুটবলারদেরও এমন মুখগহ্বরের সমস্যায় পড়তে দেখা গেছে।
একই বয়সের প্রায় এক তৃতীয়াংশ প্রাপ্ত বয়স্কদের তুলনায় যুক্তরাজ্যের অ্যাথলিটদের প্রায় অর্ধেকের দাঁত ক্ষয়ে যাবার সমস্যা রয়েছে। বর্তমান গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে ব্রিটিশ ডেন্টাল জার্নালে, চেষ্টা করা হয়েছে এই সমস্যার কারণ উদঘাটনের।
গবেষকরা ১১ ধরের ক্রীড়াবিদের সাক্ষাতকার নেন। তার মধ্যে সাইক্লিং, সাঁতার, রোইং, হকি, সেইলিং, অ্যাথলেটিক্স এর পাশাপাশি রাগবি ও ফুটবলও ছিল। সাধারণ মানুষের মধ্যে ৭৫% যেখানে দিনে দু'বার দাঁত ব্রাশ করে সেখানে অ্যাথলেটদের মধ্যে সে সংখ্যা ৯৪%। ৪৪% নিয়মিত সুতো দিয়ে দাঁত পরিষ্কার করে যেখানে সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রে একাজ করে ২১%।
গবেষকদের মতে, অ্যাথলেটদের মুখের স্বাস্থ্যরক্ষায় মাউথওয়াশের পরিবর্তে অতিরিক্ত ফ্লোরাইডের ব্যবহার, নিয়মিত ডেন্টাল চেকআপ এবং এনার্জি ড্রিংক খাওয়া কমানোর মতো আচরণের কিছু পরিবর্তন আনা দরকার। ভালো খেলোয়াড়দের ক্ষেত্রে ধূমপানের হার কম এবং সামগ্রিক খাবার গ্রহণ অনেক ভালো ছিল।
ইউসিএল গবেষকদের একজন ড. জুলি গ্যালাগার বলেন, খেলোয়াড়রা প্রশিক্ষণ এবং প্রতিযোগিতার সময় অনেক বেশি পরিমাণে স্পোর্টস ড্রিঙ্কস এবং এনার্জি জেল ও বার খেয়ে থাকে। এসব খাবারে থাকা চিনি এবং অম্লতা দন্ত ক্ষয়ের ঝুঁকি বাড়ায়।
অন্য ব্যাখ্যার মধ্যে বলা হয়েছে, অনুশীলনের সময় ঘনঘন শ্বাস নেবার ফলে মুখের ভেতরটা শুকিয়ে যায়। ফলে মুখের লালা যে দাঁতের সুরক্ষা করে, সেটি তখন ঘটে না। ফলে এই সমস্যা খেলোয়াড়দের পারফর্মেন্সেও প্রভাব ফেলে, বেশি সময় তারা প্রশিক্ষণে দিতে পারে না অসুস্থতার কারণে। অনেকসময় এই সামান্য বিষয়ই গুরুত্বপূর্ণ খেলায় জয়-পরাজয় নির্ধারণে কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অ্যাথলেটদের দাঁতের সুরক্ষায় উচ্চ ফ্লোরাইড যুক্ত টুথপেস্ট ব্যবহার করতে হতে পারে।
ড. গ্যালাগারের মতে অ্যাথলেটদের মুখের স্বাস্থ্যরক্ষায় মাউথওয়াশের পরিবর্তে অতিরিক্ত ফ্লোরাইডের ব্যবহার, নিয়মিত ডেন্টাল চেকআপ এবং এনার্জি ড্রিংক খাওয়া কমানোর মতো আচরণের কিছু পরিবর্তন আনা দরকার। -বিবিসি বাংলা।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পিআর








