News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৫:২৮, ১ ডিসেম্বর ২০২৫

ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই জাতীয় নির্বাচন: প্রেসসচিব

ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই জাতীয় নির্বাচন: প্রেসসচিব

ছবি: সংগৃহীত

দেশে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন মহলে জল্পনা-কল্পনার মধ্যেই ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই ভোটগ্রহণের দৃঢ় অবস্থান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম। 

সোমবার (১ ডিসেম্বর) সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক বিশদ পোস্টে তিনি নির্বাচন প্রস্তুতি, নিরাপত্তা ব্যবস্থা, রাজনৈতিক পরিবেশ এবং সমালোচনার জবাবে সরকারের অবস্থান পরিষ্কারভাবে তুলে ধরেন।

তার বক্তব্য অনুযায়ী, নির্বাচন পেছনোর কোনো কারণ নেই এবং বাংলাদেশ একটি অবাধ, সুষ্ঠু, বিশ্বাসযোগ্য, অংশগ্রহণমূলক ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে।

তিনি জানান, নির্বাচন কমিশন খুব দ্রুতই তফসিল ঘোষণা করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

প্রেসসচিব বলেন, নতুন জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও পুলিশ সুপার (এসপি) দায়িত্ব পেয়েছেন এবং এসব নিয়োগ নিয়ে উল্লেখযোগ্য কোনো প্রশ্ন ওঠেনি। নির্বাচনের সময় রেকর্ডসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হবে এবং পাশাপাশি “নজিরবিহীন” পরিমাণ সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যও দায়িত্ব পালন করবেন।

শফিকুল আলম জানান, বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল ইতোমধ্যে প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করেছে এবং প্রচারণা শুরু হয়েছে। সীমিত কিছু দলীয় ও আন্তঃদলীয় বিবাদ ছাড়া সামগ্রিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।

তার ভাষায়, জুলাই চার্টারের মাধ্যমে “নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের ভিত্তি স্থাপিত হয়েছে” এবং একই দিনে অনুষ্ঠিতব্য গণভোটের প্রস্তুতিও এগিয়ে চলছে।

পোস্টে জামানতী আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু ছিলেন সাংবাদিক জিল্লুর রহমান। তিনি সম্প্রতি বলেছেন, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের সম্ভাবনা নেই। তার মন্তব্যকে “বাস্তবতার অতিরঞ্জন” বলে উল্লেখ করেন প্রেসসচিব।

আরও পড়ুন: তারেক রহমানের দেশে ফেরায় সরকারের কোনো বিধিনিষেধ নেই: প্রেস সচিব

তিনি প্রশ্ন তোলেন, কেন অতীতের ১৯৯৬, ২০১৪, ২০১৮ বা ২০২৪ সালের পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তির আশঙ্কা করা হচ্ছে? তার মতে, এসব তুলনা বিভ্রান্তিকর।

প্রেসসচিব স্পষ্ট জানান, মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত এবং অতীতে “হাজার হাজার নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগে অভিযুক্ত” একটি দলকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়ার প্রয়োজন নেই। 

তিনি বলেন, কোনো সভ্য দেশই মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত দলকে স্বাভাবিক রাজনীতিতে ফেরার অনুমতি দেবে না।

তার দাবি, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও মনে করে— ওই দল ক্ষমাপ্রার্থনা ও বিচারিক প্রক্রিয়া ছাড়া রাজনীতিতে ফিরতে পারবে না।

সাম্প্রতিক সহিংসতার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, বাসে অগ্নিসংযোগ বা ককটেল নিক্ষেপের মতো ঘটনার মধ্য দিয়ে দলটি এখনো সহিংস পন্থাকে রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে দেখছে। “এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচন বর্জনের প্রশ্নই আসে না,” মন্তব্য প্রেসসচিবের।

শফিকুল আলম অভিযোগ করেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জিল্লুর রহমানের নির্মিত মনোলগ ভিডিওগুলোর বেশকিছু অংশ বিভ্রান্তি তৈরি করছে এবং অনেকসময় গুজবের ভিত্তি তৈরি করছে। 

তিনি দাবি করেন, অতি বিতর্কিত ও ভুয়া তথ্যবাহক হিসেবে পরিচিত কয়েকজনের বক্তব্য প্রচারে প্ল্যাটফর্ম দেওয়ায় জিল্লুর এখন “ধীরে ধীরে একই ভূমিকায় অবতীর্ণ হচ্ছেন।”

তার পোস্টের শেষাংশে প্রেসসচিব বলেন, মানুষ নিজেদের বিচার-বিবেচনায় সিদ্ধান্ত নেবে। তারা বোকা নয়।

সবশেষে প্রেসসচিব বলেন, আবারও বলছি, এতে আমাদের আপত্তি নেই। মানুষ নিজেদের বিচার-বিবেচনা দিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। তারা বোকা নয়। আর দুইটি কথা আমি নিঃসংকোচে বলতে পারি: আওয়ামী লীগ নির্বাচন করতে পারবে না এবং অন্তর্বর্তী সরকার ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, বিশ্বাসযোগ্য, অংশগ্রহণমূলক ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজন করবে, ইনশাআল্লাহ।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়