News Bangladesh

|| নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৯:১৮, ২৩ অক্টোবর ২০১৯
আপডেট: ১৯:৩৬, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২০

জামায়াতের শীর্ষ ২ পদে কারা আসছেন

জামায়াতের শীর্ষ ২ পদে কারা আসছেন

জামায়াতের শীর্ষ দুই পদ হলো আমির ও সেক্রেটারি জেনারেল। এরইমধ্যে পদদুটির নির্বাচন শুরু হয়েছে। ১৭ অক্টোবর প্যানেল ঘোষণার পর এখন চলছে সাধারণ সদস্যদের ভোট গ্রহণ। চলবে নভেম্বরের ১০ তারিখ পর্যন্ত। সদস্যদের কাছে যে প্যানেল ঘোষণা করা হয়েছে তাতে আমির হিসেবে এক নম্বরে আছেন ডা. শফিকুর রহমানের নাম, দ্বিতীয় স্থানে আছেন অধ্যাপক মজিবুর রহমান এবং তৃতীয় স্থানে আছেন মিয়া গোলাম পরওয়ার। 

ধারণা করা হচ্ছে, শফিকুর রহমান এবং অধ্যাপক মজিবুর রহমানের মধ্যে যেকোন একজন আমির নির্বাচিত হতে পারেন।

মতিউর রহমান নিজামী ও আলী আহসান মু. মুজাহিদের ফাঁসি কার্যকর হওয়ার পর ডা. শফিক মূলত লাইম লাইটে আসেন। এটিএম আজহারুল ইসলাম গ্রেফতার হবার পর ডা. শফিক ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি হন এবং পরে দলের সেক্রেটারির দায়িত্ব নেন। শফিকুর রহমান বয়সে জুনিয়র এবং সিলেটকেন্দ্রীক হওয়ায় জাতীয় ভাবে তার পরিচিতি কম। তাছাড়া সিলেট শহর ও নিজ এলাকা মৌলভীবাজার থেকে দুবার জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিয়ে ডা. শফিক শোচনীয়ভাবে পরাজিত হন। এবার ঢাকার মিরপুর থেকে জাতীয় নির্বাচনে তিনি অংশ নেন এবং যথারীতি পরাজিত হন। তাছাড়া এবার সিলেট সিটি নির্বাচনে জামায়াতের অংশ নেয়া ও জামানত হারানোর ঘটনায়ও ডা. শফিককে দায়ী করা হয় এবং এতে তার ভাবমূর্তি যথেষ্ট ক্ষুণ্ন হয়। 

ডা. শফিকুর রহমান জনমূখী নেতা না হলেও অভ্যন্তরীণ তত্ত্বাবধান এবং দলীয় নেতাদের সাথে তার যোগাযোগ বেশ ভালো। বিগত দিনে দলীয় আমির মকবুল আহমদ মূলত নিস্ক্রিয়ই ছিলেন। রুটিনওয়ার্ক ছাড়া তেমন কোনো কাজে ছিলেন না। দেশে-বিদেশে ব্যাপক সফরসহ ডা. শফিক জেলা, থানা এবং ওয়ার্ড পর্যায়ে নিয়মিত সংযোগ রাখেন। মহিলা বিভাগেও রয়েছে তার নিবিড় তত্বাবধান। জামায়াতের সকল পর্যায়ের নির্বাচনে নারী রুকনদের ভোট এখন একটি বড় ফ্যাক্টর হয়ে দেখা দিয়েছে। তাই অনেকের ধারণা ডা. শফিকই এবার অনায়াসে আমির নির্বাচিত হবেন।

প্যানেলের দ্বিতীয় স্থানে থাকা অধ্যাপক মজিবুর রহমান দলে একজন মুখলেস নিষ্ঠাবান ত্যাগী নেতা হিসেবে পরিচিত। তিনি তার এলাকা ও রাজশাহী অঞ্চলে বেশ জনপ্রিয়। সাবেক এমপি ও এক সময়কার দলের সংসদীয় দলের নেতৃত্ব দেয়ায় তার অভিজ্ঞতা বিস্তৃত হয়। মকবুল আহমদ গ্রেফতার হবার পর তিনি দীর্ঘসময় দলে ভারপ্রাপ্ত আমির হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এই মুহূর্তে দলে তিনি সবচেয়ে সিনিয়র ও বিতর্কমুক্ত ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত। তার বেশ কয়েকটি সুলিখিত বই আছে যা জামায়াতে সহজবোধ্য দাওয়াতি উপক্রম হিসেবে ব্যবহৃত হয়। দলের বিশাল একটি অংশ আধ্যাত্মিক চেতনা ও জনসম্পৃক্ত নেতৃত্বের মডেল হিসেবে অধ্যাপক মজিবুর রহমানকে বিবেচনা করেন। সে বিচারে তারও আমির নির্বাচিত হবার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। 

সেক্রেটারি জেনারেল কে হচ্ছেন?

জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল পদটি কখনো কখনো আমিরের চাইতেও গুরুত্বপূর্ণ বিবেচিত হতে দেখা গেছে।  সেক্রেটারি থাকাকালীন আলী আহসান মু. মুজাহিদকে বলা হতো জামায়াতের সর্বেসর্বা। যা বিগত দিনে ডা. শফিকের মধ্যেও দেখা গেছে। 

এবার কে হতে যাচ্ছেন এই গুরুত্বপূর্ণ পদের অধিকারী? প্রশ্নটি ইতিমধ্যে জামায়াত মহলে বেশ আলোচিত হচ্ছে। সহকারী সেক্রেটারি জেনারেলদের মধ্যে সিনিয়র হিসেবে যার নাম আসে তিনি এটিএম মাসুম। মাসুম মূলত ভ্যন্তরীণ নেতা হিসেবে পরিচিত। জনমূখী নেতা না হবার কারণে তাকে ঢাকা মহানগরীর আমির না করে নায়েবে আমির পদ থেকে কেন্দ্রে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল। তিনি দলের কর্মীদের কাছে তেমন পরিচিতও নন। 

এরপরে সেক্রেটারি জেনারেল হিসেবে বেশি আলোচিত নাম রফিকুল ইসলাম খান ও ডা. আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। এরা দুজনই শিবিরের সাবেক সভাপতি। ডা. তাহের দলের নেতা ও কর্মীদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। তিনি সাবেক এমপি এবং ব্যবসায়ী হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তিনি সবচেয়ে বেশি পরিচিত জামায়াত নেতাদের একজন। নব্বইর দশকে ইফসু ও ওয়ামিতে নেতৃত্ব দিয়ে তাহের চমক সৃষ্টি করেছিলেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজের নির্বাচিত জিএস ও ছিলেন তিনি। এসএসসিতে কুমিল্লা বোর্ডে তৃতীয় স্থান পাওয়া সুবক্তা ডা. তাহেরকে শিবিরের ইতিহাসে সবচাইতে মেধাবী সভাপতি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। দীর্ঘদিন জামায়াতের আন্তর্জাতিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে আসছেন তিনি। জামায়াতের তরুণ প্রজন্ম ডা. তাহেরকে সেক্রেটারি হিসেবে পাওয়ার ব্যাপারে বেশ আশাবাদী। 

জামায়াতের তরুণ নেতাদের মধ্যে যিনি বেশী দ্রুত নেতৃত্বে উঠে এসেছেন তিনি রফিকুল ইসলাম খান। ঢাকা মহানগরীতে বেশ কয়েক বছর আমির থাকার কারণে তার জাতীয় পরিচিতি বেশি। রফিকুল ইসলাম খান একই সময়ে ঢাকা মহানগরী আমির ও ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেলের দায়িত্ব পালন করেন ফলে দলের মধ্যেও তার অবস্থান বেশ সুসংহত হয়। তবে আইসিটি ট্রাইবুনালে ৬ মাসের সাজাপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে জনাব খান দীর্ঘদিন ফেরারি জীবনযাপন করছেন। এলাকায় তার যথেষ্ট জনপ্রিয়তা রয়েছে। সেক্রেটারি জেনারেল হিসেবে রফিকুল ইসলাম খানের নামই বেশি আলোচিত হচ্ছে বলে জানা যায়।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পিআর

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়