News Bangladesh

হাসানুজ্জামান হাসান || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৯:২২, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

শরতের কুয়াশাচ্ছন্ন ভোর জানান দিচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা

শরতের কুয়াশাচ্ছন্ন ভোর জানান দিচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা

ছবি: নিউজবাংলাদেশ

দেশের উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা লালমনিরহাট। হিমালয়ের কাছাকাছি হওয়ায় এ জেলায় প্রতিবছর আগাম শীতের আভাস পাওয়া যায়। প্রকৃতিতে এখন শরৎকাল চলছে। এ সময় আকাশ কখনো মেঘে ঢাকা, কখনো আবার উজ্জ্বল নীলিমায় ভরপুর। এরই মধ্যে নামে হালকা বৃষ্টি। রোদ, মেঘ আর বৃষ্টির এই খেলা যেন ঋতুবদলের আয়োজন করেছে প্রকৃতিতে। তাই কুয়াশাচ্ছন্ন ভোরের নরম চাদর আর হালকা হিমেল হাওয়ায় প্রকৃতি জানান দিচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা।

কয়েকদিন লালমনিরহাটে পাঁচ উপজেলায় ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত কুয়াশা পড়ছে। শিশিরভেজা ঘাসের ডগায় মুক্তোর মতো ঝলমল করা বিন্দু, গাছের পাতায় কুয়াশার আবরণ আর ধানের ক্ষেতে শিশিরের ঝিলিক সব মিলে প্রকৃতি হয়ে উঠেছে স্নিগ্ধ ও শান্ত।

বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) ভোর থেকে সকাল সাতটা পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘন কুয়াশার চাদরে ঢেকে গেছে। 

জেলা সদরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, গাছের পাতা ও সবুজ ধানের ক্ষেত শিশির বিন্দুতে ভিজে রয়েছে। দিনমজুর ও কৃষকরা মাঠে কাজ করতে গিয়ে টের পেয়েছেন শীতের আগাম স্পর্শ।

কালীগঞ্জের কাকিনা এলাকায় দেখা হয় সাবেক প্রভাষক মোস্তফা হাসানের সাথে। 

তিনি বলেন, আমি প্রতিদিন সকালে হাঁটতে বের হই। কয়েকদিন ধরে ভোর থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত কুয়াশা দেখছি। তবে আজকে একটু বেশি মনে হচ্ছে। সব মিলিয়ে বোঝা যাচ্ছে শীত দরজায় কড়া নাড়ছে। গত বছরেএ তুলনায় এবার শীত একটু বেশি পড়বে মনে হচ্ছে। কুয়াশাচ্ছন্ন সকালে মহাসড়কে যানবাহন গুলো হেড লাইট জ্বালিয়ে চলতে দেখছি।

আর এক পথচারী আহেদুল ইসলাম আদেল জানায়, গত কয়েকদিনের বৃষ্টির কারণে রাতের গরম অনেকটাই কমেছে। এ জন্য সন্ধ্যার পর মধ্য রাত থেকেই কুয়াশা নেমে আসছে। আজ ভোরে পুরো এলাকা কুয়াশায় ঢেকে ছিল, যদিও সকাল ৭টার পর সূর্যের দেখা মিলেছে।

আরও পড়ুন: ফরিদপুরের খোয়াড় গ্রামে সাদা শাপলার নৈসর্গিক সৌন্দর্য

একই বিষয়ে কৃষক রায়হান আলী বলেন, সকালে কুয়াশা দেখা গেলেও এখনো শীত শুরু হয়নি। তবে রাতের শেষ ভাগে ফ্যান বন্ধ করে দেই। না হলে হিমশীতল বাতাসে ঘুম ভেঙ্গে যায়।এবার আগেভাগেই কুয়াশা দেখে মনে হচ্ছে শীত তুলনামূলক বাড়বে।

স্থানীয়রা বলছেন, প্রকৃতি যেন আগেভাগেই শীতকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছে। কাশফুল, শিশিরবিন্দু এবং মৃদু কুয়াশার মিলন শরতের সৌন্দর্যকে আরও মনোমুগ্ধকর করে তুলেছে। পাশাপাশি প্রকৃতির এই পরিবর্তন শুধুই দৃশ্যমান সৌন্দর্য নয়, বরং আসন্ন শীতের আগমনের প্রাকৃতিক বার্তাও বয়ে এনেছে।

আবহাওয়ার পরিবর্তন নিয়ে চিকিৎসকেরা সতর্ক করেছেন সম্ভাব্য স্বাস্থ্যঝুঁকি সম্পর্কে। তাদের মতে, এই সময়ে ঠান্ডা-গরমের ওঠানামার কারণে সর্দি-কাশি ও শীতজনিত রোগ বাড়তে পারে।

লালমনিরহাট ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোহাম্মদ আব্দুল মোকাদ্দেম জানায়, শরৎকালে দিনে গরম আর রাতে ঠান্ডা আবহাওয়া থাকে। এর সঙ্গে কুয়াশা দেখা দিলে ঠান্ডা-গরমের প্রভাবে মানুষের শরীরে অভিযোজন সমস্যা দেখা দেয়। ফলে সর্দি-কাশিসহ মৌসুমি রোগের প্রকোপ বেড়ে যেতে পারে। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধদের ক্ষেত্রে বাড়তি যত্ন নেওয়া জরুরী।

রাজারহাট আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানায়, কয়েকদিন ধরে এ এলাকায় মাঝেমধ্যেই বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এর পাশাপাশি দেখা দিচ্ছে ভ্যাপসা গরম। অন্যদিকে হিমেল বাতাস বইতে থাকায় রাত ও ভোরে কুয়াশা দেখা যাচ্ছে, যা মূলত শীতের আগাম সংকেত। বর্তমান তাপমাত্রা ২৫ থেকে ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠানামা করছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে শীতের আভাস পাওয়া যাবে।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়