বৃষ্টিতে ভিজে বেতন ও ঈদ বোনাসের দাবিতে অনড় শ্রমিকরা
ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর কাকরাইলে ‘মার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে টিএনজেড গ্রুপের পোশাক শ্রমিকদের বকেয়া বেতন ও ঈদ বোনাস পরিশোধের দাবিতে দিনব্যাপী বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (২০ মে) সকাল ৯টা থেকে শুরু হওয়া এ আন্দোলন দুপুরে আরও তীব্র হয়ে ওঠে।
দুপুর আড়াইটার দিকে জাতীয় শ্রম ভবনের সামনে থেকে মিছিল শুরু করে শতাধিক শ্রমিক। কাকরাইল মোড় হয়ে তারা প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবনের দিকে অগ্রসর হলে বিকেল ৩টার দিকে প্রধান বিচারপতির বাসভবনের সামনে পুলিশের বাধার মুখে পড়েন। এরপর সেখানেই অবস্থান নিয়ে তারা বিক্ষোভ শুরু করেন।
বিক্ষোভ চলাকালে শ্রমিকদের কণ্ঠে একাধিক দাবিমুখী স্লোগান শোনা যায়— বেতন চাই, বোনাস চাই—চূড়ান্ত হিসাব আজই চাই, ১৪ মাসের ঘাম কোথায়? টিএনজেড জবাব চাই!, মেহনতি মানুষের ঘাম বৃথা যেতে পারে না, যেখানে বেতন নেই, সেখানে শান্তি নেই!, আমরা চাই না দয়া, চাই ন্যায্য পাওনা।
বিকাল থেকে মাঝারি থেকে ভারী জুম বৃষ্টিও শ্রমিকদের থামাতে পারেনি। ছাতা বা আশ্রয় ছাড়াই তারা বৃষ্টিতে ভিজে স্লোগান ও অবস্থান চালিয়ে যান। প্রায় এক ঘণ্টা বৃষ্টির মধ্যেও তাদের প্রতিবাদ অব্যাহত ছিল।
আরও পড়ুন: যানজট ঠেকাতে বিকল্প করিডোর
শ্রমিকরা সকাল ৯টা থেকেই বিজয়নগরের জাতীয় শ্রম ভবনের প্রধান ফটকে অবস্থান নেন, ফলে ভবনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রবেশ করতে পারেননি। স্টাইল ক্রাফট ও ইয়াং ওয়ান্স বিডি’র শ্রমিকরাও এ আন্দোলনে অংশ নেন।
স্টাইল ক্রাফটের শ্রমিক নেতা রাজু আহমেদ জানান, সোমবার (১৯ মে) আমরা প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে স্মারকলিপি দিয়েছি। কিন্তু এখনও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এজন্য আজও শ্রম ভবনে কাউকে প্রবেশ করতে দিচ্ছি না।
তিনি আরও বলেন, টিএনজেড গ্রুপের ১,০৫৮ জন শ্রমিকের ১৪ মাসের বকেয়া বেতন ও ঈদ বোনাসসহ মোট ২০ কোটি ৮৬ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে। এসব পাওনা আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
টিএনজেড-এর শ্রমিক নেতা শহীদুল ইসলাম বলেন, রমজানের ঈদের আগে আমাদের ১৭ কোটি টাকা পাওনার জায়গায় শ্রম সচিব ৩ কোটি টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তবে দেওয়া হয় মাত্র ২ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। এটা আমাদের সঙ্গে প্রতারণা।
তিনি জানান, আজকের ‘মার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচি আমাদের চূড়ান্ত আন্দোলনের অংশ। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা অবস্থান চালিয়ে যাবো, পেছনে ফিরে যাবো না।
শ্রমিকদের আন্দোলন ঘিরে ডিএমপির রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. মাসুদ আলম বলেন, প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনকে ঘিরে কাকরাইল ও আশপাশে যেকোনো ধরনের আন্দোলন ও মিছিল নিষিদ্ধ। তবে এখন পর্যন্ত শ্রমিকরা শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করছেন, তাই কোনো সমস্যা হচ্ছে না।
তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, যদি কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে কিংবা পুলিশের ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করে, তাহলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি








