গুজব নিয়ে বিচলিত হওয়ার কিছু নেই: আইন উপদেষ্টা

ছবি: সংগৃহীত
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সাক্ষাৎকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া গুজব-গুঞ্জন নিয়ে বিচলিত হওয়ার কিছু নেই বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল।
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, সেনাপ্রধানের রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ নিয়ে কোনো ধরনের বিচলিত হওয়ার কারণ নেই।
তিনি গুজব-গুঞ্জনকে অবাস্তব হিসেবে উল্লেখ করে জানান, এটি নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার দরকার নেই।
এ দিন সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইন উপদেষ্টা বলেন, আমাদের আর্মি চিফ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে মাঝে মাঝে দেখা করেন। রাষ্ট্রপতির সঙ্গেও আগেও দেখা করেছেন। আমি মনে করি না, এটি নিয়ে বিচলিত হওয়ার কিছু আছে।
তিনি আরও বলেন, প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সেনাপ্রধানের সাক্ষাৎ হয়েছে কি না, তা তার কাছে নিশ্চিত তথ্য নয়। আমি দু-একটি পত্রিকায় দেখেছি। অনলাইনে এই নিয়ে নানা গুজব-গুঞ্জন হচ্ছে। এসব গুজব-গুঞ্জন নিয়ে বিচলিত হওয়ার মতো কিছু নেই।
আরও পড়ুন: মানুষ যে এতো জটিল এটা আগে মনে হতো না: আসিফ নজরুল
এদিন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। সেনাপ্রধান তাদেরকে সাম্প্রতিক চীন সফরের বিষয়ে অবহিত করেন। বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ সকাল ১১টায় অনুষ্ঠিত হয়। রীতি অনুযায়ী, বিদেশ সফরের পর সেনাপ্রধান রাষ্ট্রপতিকে তার সফরের বিষয়ে সরকারিভাবে অবহিত করেন।
এছাড়া, গণমাধ্যমে জানা গেছে, গত রোববার সেনাপ্রধান প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের সঙ্গে তার বাসভবনে সাক্ষাৎ করেছেন। তবে আইন উপদেষ্টা জানিয়েছেন, এটি প্রায়শই গুজবের পর্যায়েই থেকে গেছে।
আইন উপদেষ্টা আরও বলেন, দেশের রাজনৈতিক দলগুলো—বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)—প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের পর বিভিন্ন দাবি ও বক্তব্য নিয়েও মতবিরোধ থাকতে পারে। তবে তিনি আশাবাদী, প্রয়োজনীয় মুহূর্তে দলগুলোর মধ্যে ঐক্য দৃশ্যমান হবে।
সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, অন্তর্বর্তী সরকার আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের ব্যাপারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসও এটি বারবার বলেছেন এবং নির্বাচন কমিশনকেও সেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আইন উপদেষ্টা আশা প্রকাশ করেন, কিছু বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে মতভেদ রয়েছে, তা নির্বাচনের আগে দূর হবে।
আইন উপদেষ্টা বলেন, আমরা সরকারের পক্ষ থেকে ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন করার ব্যাপারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। আমাদের যত রাষ্ট্রীয় কর্মকাণ্ড আছে, এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে এগিয়ে চলেছে। এখানে পেছানোর কোনো সুযোগ নেই।
দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কেও তিনি বলেন, গত এক বছরে মাঝে মাঝে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি হয়েছে, আবার ভালো হয়েছে। গণঅভ্যুত্থান বা বিপ্লব পরবর্তী পরিস্থিতিতে সমাজে বিভিন্ন ধরনের অস্থিরতা থাকে। এর প্রেক্ষিতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির মাঝে মধ্যেই অবনতি হওয়াটা দুঃখজনক হলেও অস্বাভাবিক নয়। আমরা এর আগেও এমন পরিস্থিতি ট্যাকেল করেছি, ইনশাল্লাহ সামনেও পরিস্থিতি ভালো হবে।
নির্বাচনকালীন সরকার গঠন নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। একই সঙ্গে দেশকে গুজব ও বিভ্রান্তি থেকে রক্ষা করার জন্য সচেতন থাকার আহ্বান জানান।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি