News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ২২:১৮, ১৬ জুন ২০২৫

দুদকের মামলায় যবিপ্রবি ভিসি ড. সাত্তার কারাগারে

দুদকের মামলায় যবিপ্রবি ভিসি ড. সাত্তার কারাগারে

ছবি: সংগৃহীত

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুস সাত্তারকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

সোমবার (১৬ জুন) যশোরের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ ও বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ নাজমুল আলম এ আদেশ দেন। মামলার ধার্য তারিখে ড. সাত্তার আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন প্রার্থনা করলেও বিচারক তার আবেদন নামঞ্জুর করেন এবং তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এদিকে মামলার অপর দুই আসামি—যবিপ্রবির বর্তমান উপ-পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) আব্দুর রউফ এবং ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) সাবেক উপ-উপাচার্য ড. কামাল উদ্দিন—এরইমধ্যে জামিনে রয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে আগে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল। তারা পূর্ববর্তী তারিখে আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নেন।

২০২৩ সালের ২১ আগস্ট, যশোর দুদকের তৎকালীন উপ-পরিচালক আল-আমিনের করা অভিযোগের ভিত্তিতে এই মামলা দায়ের হয়। মামলার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে ২০০৯ সালের একটি নিয়োগ প্রক্রিয়া, যেখানে সহকারী পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) পদে আব্দুর রউফ নামের এক প্রার্থী আবেদন করেন।

তিন সদস্য বিশিষ্ট নিয়োগ বোর্ডে সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন যবিপ্রবির তৎকালীন উপাচার্য ড. আব্দুস সাত্তার। বোর্ডের অন্য সদস্য ছিলেন ইবির উপ-উপাচার্য ড. কামাল উদ্দিন। ওই বছরের ২২ আগস্ট মৌখিক পরীক্ষায় আব্দুর রউফসহ আরও তিনজন অংশ নিলেও কাউকে পাশ করানো হয়নি।

আরও পড়ুন: অর্থপাচারের অভিযোগে দুদকের জালে স্বামীসহ সাবেক কূটনীতিক মুনা

তবে, চাকরির বিজ্ঞপ্তিতে পূর্ব-অভিজ্ঞতা বাধ্যতামূলক উল্লেখ থাকলেও তা উপেক্ষা করে আব্দুর রউফকে প্রথমে সহকারী পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টা হয়। অভিজ্ঞতার ঘাটতির বিষয়টি পরবর্তীতে আলোচনায় এলে, তাকে ‘সেকশন অফিসার (গ্রেড-১, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন)’ পদে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হয়।

এরপর রিজেন্ট বোর্ডের সভাপতি হিসেবে ড. আব্দুস সাত্তার নিয়ম বহির্ভূতভাবে, কোনো উন্মুক্ত বিজ্ঞপ্তি ছাড়া, আব্দুর রউফকে সেকশন অফিসার পদে নিয়োগের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন।

সেকশন অফিসার পদে যোগদানের পর আব্দুর রউফ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়মিত চাকরি করতে থাকেন। তিনি সিলেকশন গ্রেডসহ নানা প্রশাসনিক সুবিধা গ্রহণ করেন এবং বিভাগীয় প্রার্থীর সুবিধা নিয়ে ২০১৪ সালে সহকারী পরিচালক পদে এবং ২০২১ সালে উপ-পরিচালক পদে পদোন্নতি লাভ করেন।

দুদক অভিযোগে বলেছে, এভাবে ২০০৯ সালের অক্টোবর থেকে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত সময়ের মধ্যে তিনি বেতন-ভাতা বাবদ মোট ৬১ লাখ ৩১ হাজার ৭৩২ টাকা গ্রহণ করেছেন, যা সম্পূর্ণ অবৈধ নিয়োগের ফল হিসেবে আত্মসাৎ বলে গণ্য।

দুদকের দীর্ঘ তদন্ত শেষে ড. আব্দুস সাত্তার, আব্দুর রউফ এবং ড. কামাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযুক্ত করে চার্জশিট আদালতে জমা দেওয়া হয়। এরপরই আদালত তিনজনের বিরুদ্ধেই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।

এ মামলার বাইরেও যবিপ্রবিতে শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত আরেকটি দুর্নীতি মামলায় ড. আব্দুস সাত্তার ও আরেক সাবেক উপাচার্য ড. আনোয়ার হোসেনসহ চারজনের বিরুদ্ধে দুদকের আরও একটি মামলা চলমান রয়েছে।

রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন যে, আদালত ড. আব্দুস সাত্তারের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন এবং মামলার অন্যান্য কার্যক্রম যথাযথভাবে চলবে।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়