News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ২১:৫১, ১৬ জুন ২০২৫

অর্থপাচারের অভিযোগে দুদকের জালে স্বামীসহ সাবেক কূটনীতিক মুনা

অর্থপাচারের অভিযোগে দুদকের জালে স্বামীসহ সাবেক কূটনীতিক মুনা

ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের সাবেক হাইকমিশনার সাঈদা মুনা তাসনিম এবং তার স্বামী তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী, যিনি ‘জেনারেশন নেক্সট ফ্যাশন লিমিটেড’-এর চেয়ারম্যান, তাদের বিরুদ্ধে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা পাচার ও আত্মসাতের অভিযোগে আনুষ্ঠানিক অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

সোমবার (১৬ জুন) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদক প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থার চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুল মোমেন এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

দুদক চেয়ারম্যান জানান, জেনারেশন নেক্সট ফ্যাশন লিমিটেডসহ মোট ১২টি বাণিজ্যিক ও নামসর্বস্ব ভুয়া প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে বিপুল অঙ্কের ঋণ নিয়ে সেই অর্থ বিদেশে পাচার করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা পরস্পরের যোগসাজশে একটি সুপরিকল্পিত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এসব অর্থ আত্মসাৎ করেন। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, মোট আনুমানিক ২ হাজার কোটি টাকা এভাবে দেশ থেকে পাচার হয়েছে।

যেসব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে এই অর্থ উত্তোলন করা হয়েছে, তাদের তালিকায় রয়েছে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (UCBL), ব্যাংক এশিয়া, ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড (EBL), সিটি ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড (NBL), ট্রাস্ট ব্যাংক, সাউথইস্ট ব্যাংক, এবি ব্যাংক।

আরও পড়ুন: দুদকের দৃষ্টিতে অভিযুক্ত টিউলিপ

এই ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১২টি কোম্পানির নামে ভুয়া নথিপত্র ও আর্থিক বিবরণী ব্যবহার করে ঋণ গ্রহণ করা হয়েছে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।

দুদকের দাবি, এই প্রকল্পের মূল হোতা হিসেবে কাজ করেছেন সাঈদা মুনা তাসনিম ও তার স্বামী তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী। তারা পরস্পর যোগসাজশে জেনারেশন নেক্সট ফ্যাশনের পাশাপাশি আরও ১১টি ভুয়া প্রতিষ্ঠানের পরিচয়ে এ ধরনের প্রতারণামূলক লেনদেন চালিয়েছেন।

দুদক চেয়ারম্যান মোমেন বলেন, এটি অত্যন্ত জটিল ও সংগঠিত এক ধরনের অর্থপাচারের চিত্র। আমরা প্রাথমিক অনুসন্ধানে এসব তথ্য পেয়েছি। বিস্তারিত ও গভীর তদন্ত চলছে। প্রয়োজনীয় হলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক মামলা দায়ের এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতাও চাওয়া হবে।

তিনি আরও জানান, এই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের ভূমিকা নিয়েও তদন্ত করা হচ্ছে।

সাঈদা মুনা তাসনিম একসময় বাংলাদেশের পক্ষে যুক্তরাজ্যে হাইকমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে এ ধরনের আর্থিক অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ দুদক অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

এই ঘটনা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক শৃঙ্খলার ওপর এক বড় ধরনের আঘাত হিসেবে দেখা হচ্ছে। বিদেশে অর্থপাচার রোধে চলমান তদন্ত কার্যক্রমে এটি একটি উচ্চ-প্রোফাইল কেস হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যার পরিণতি নজিরবিহীন হতে পারে বলে দুদক সূত্রে জানা গেছে।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়