দুশ্চিন্তা দূর করতে জাপানি ৫ কৌশল

ছবি: ইন্টারনেট
দুশ্চিন্তা ও উদ্বেগ যেন এখন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। ঘুম ভাঙতেই একরাশ চিন্তা মাথায় চেপে বসে। সময় যত গড়ায়, দুশ্চিন্তা ততই বাড়তে থাকে। চাকরি, পরিবার, স্বাস্থ্য, অর্থনৈতিক টানাপোড়েন কিংবা ব্যক্তিগত সম্পর্ক-সব মিলিয়ে মানসিক চাপ যেন প্রতিদিনের নিত্যসঙ্গী।
এই দুশ্চিন্তা যেমন রাতের ঘুম কেড়ে নেয়, তেমনি সারাদিন মনেও তৈরি করে অস্থিরতা। স্বাভাবিকভাবেই তাই চিন্তামুক্ত থাকার উপায় খুঁজেন সবাই। মনকে চিন্তামুক্ত রাখতে কেউ পরামর্শ দেন মেডিটেশন করার, কেউবা বলে যোগাসন করতে। তবে জাপানিরা দুশ্চিন্তা থেকে দূরে থাকতে ৫টি কাজ করেন। এসব কৌশল মানলে মনের অস্থিরতা অনেকটাই বশে রাখা যায়। চলুন এসব কৌশল সম্পর্কে জেনে নিই-
দুশ্চিন্তা কাটাতে যেসব কাজ করেন জাপানিরা:
জানসিন:
মনঃসংযোগ বাড়ানোর জাপানি পদ্ধতি জানসিন। জাপানিদের মতে, দুশ্চিন্তা হলে মন বিভ্রান্ত হয়, একাগ্রতা কমে যায়। তাই কোনো কাজে মনোযোগ বাড়ালে মানসিক চাপও কমবে। জানসিন মনকে একাগ্র করার উপায়, এতে মনোযোগ ও ধৈর্য বাড়বে এবং মনের অস্থিরতাও কমবে।
কাইজেন:
অতীত নিয়ে মাথা ঘামিয়ে সময় নষ্ট করেন না জাপানিরা। যা হয়ে গেছে তা নিয়ে না ভেবে বরং ছোট ছোট পদক্ষেপে সাফল্যের দিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। জাপানিদের এই কৌশল মেনে চলতে পারেন আপনিও।
ইকিগাই:
ইকিগাই অর্থ জীবনের উদ্দেশ্য খুঁজে বের করা। আপনি কোন কাজটি পছন্দ করেন, কোন খাবার খেতে ভালোবাসেন, কোন জায়গায় ঘুরতে ভালো লাগে এসব খুঁজে বের করুন। সম্ভব হলে সব ভালো লাগার জিনিসের তালিকা তৈরি করুন। চিন্তামুক্ত করতে সেসব কাজ করুন যা আপনি মন থেকে করতে ভালোবাসেন।
যে কাজটি করছেন তার উদ্দেশ্য কী, কোন লক্ষ্যে এগোচ্ছেন, সেটিও জানা জরুরি। এতে কাজটি নিয়ে যতই উদ্বেগ থাকুক না কেন, দুশ্চিন্তা কমই হবে।
আরও পড়ুন: অসুখী মানুষের ১০টি গোপন লক্ষণ
শিনরিন-ইয়োকু:
জাপানিদের ভাষায় শিনরিন-ইয়োকু বলতে ‘ফরেস্ট বাদিং’ বোঝায়। তাদের মতে, মন খারাপ থাকলে প্রকৃতির মাঝে কিছুটা সময় কাটানো ভালো। সবচেয়ে ভালো হয় যদি পাহাড় বা জঙ্গলে ঘুরতে যেতে পারেন। নয়তো গাছপালা রয়েছে এমন জায়গায় কিছুক্ষণ থাকুন বা হাঁটুন। তাহলেই কমে যাবে দুশ্চিন্তা।
লক্ষ্য স্থির রেখে রোজ একটু একটু করে নিজের দক্ষতা বাড়ানোর চেষ্টা করুন। জাপানিরা মনে করেন, দুশ্চিন্তা করা বা উদ্বেগে ভোগার চেয়ে সুন্দর আগামী দিনের পরিকল্পনা নিয়ে ভাবা এবং সেই পথে নিজেকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া বুদ্ধিমানের কাজ। এতে দুশ্চিন্তা থেকেও দূরে থাকা যায়।
ওয়াবি-সাবি:
এর অর্থ গতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলা। নিজেকে যে সব কাজেই নিপুণ ও পারদর্শী দেখাতে হবে তা নয়। বরং নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী কাজ করলেই সাফল্য মিলবে। অতীত নিয়ে না ভেবে বর্তমান সময়ে বাঁচাতেই বেশি গুরুত্ব দেন জাপানিরা। তাদের মতে, নিজেকে পারদর্শী দেখানোর চেষ্টাতেই মনের চাপ বাড়ে। তাই সে পথে পা না বাড়ানোই ভালো। সবাই সব কাজে দক্ষ হন না, তাই নিজের যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ করাই ভালো।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এসবি