News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৬:২১, ১৬ জুন ২০২৫

না খেয়ে থাকলেও ভোট ছাড়বে না মানুষ: মঈন খান

না খেয়ে থাকলেও ভোট ছাড়বে না মানুষ: মঈন খান

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান।

বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুকের সঙ্গে বৈঠক শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেছেন, দেশের মানুষ এখন ভোট দিতে চায়, এমনকি না খেয়েও থাকতে রাজি—কিন্তু ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হতে চায় না। 

তিনি দাবি করেন, ১৩ জুন লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও দলের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মধ্যে অনুষ্ঠিত গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের পর দেশের রাজনীতিতে “গুণগত পরিবর্তন” এসেছে।

সোমবার (১৬ জুন) সকাল সাড়ে ১০টায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিএনপি নেতৃবৃন্দের সঙ্গে ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুকের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। 

প্রতিনিধি দলে ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান এবং সাংগঠনিক সম্পাদক ও চেয়ারপারসনের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক উপদেষ্টা শামা ওবায়েদ।

বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে ড. মঈন খান বলেন, বাংলাদেশের মানুষ এখন ভোট দিতে উন্মুখ হয়ে আছে। যদি কাউকে জিজ্ঞেস করা হয়—‘তুমি পোলাও-কোরমা চাও, না কি ভোট দিতে চাও?’—তখন মানুষ বলবে, ‘আমি ভোট দিতে চাই।’ না খেয়ে থাকলেও তারা ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে চায়।

তিনি আরও বলেন, ভোট এখন এ দেশের মানুষের রক্তের সঙ্গে মিশে গেছে। এটি নববর্ষের মতোই এক উৎসব, আর জনগণ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে তাদের প্রকৃত প্রতিনিধি নির্বাচনের জন্য।

ড. মঈন খান জানান, ১৩ জুন লন্ডনে তারেক রহমান ও ড. ইউনূসের বৈঠকের পর দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ইতিবাচক পরিবর্তনের ছাপ লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

তিনি বলেন, যে যা-ই বলুক না কেন, এই পরিবর্তন অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। মানুষ এখন আশাবাদী, গণতন্ত্রের প্রত্যাবর্তনের স্বপ্ন দেখছে।

তিনি আরও বলেন, শুধু নির্বাচনের একটি তারিখ ঘোষণার মাধ্যমে দেশের বহু সমস্যা একদিনেই দূর হতে পারে।

সারাহ কুকের সঙ্গে বৈঠকে বিভিন্ন বিষয় উঠে এসেছে বলে জানান ড. মঈন খান। 

আরও পড়ুন: তারেক-ইউনূস বৈঠকে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে: আমীর খসরু

আলোচনার মূল বিষয়গুলো ছিল:

  • দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি
  • তারেক রহমান ও ইউনূসের বৈঠকের পরবর্তী প্রতিক্রিয়া
  • বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান এবং পার্শ্ববর্তী দেশের সঙ্গে সম্পর্ক
  • ব্যবসা-বাণিজ্য, স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন
  • ভবিষ্যতে গণতান্ত্রিক সরকারের অধীনে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়ন
  • জবাবদিহিতা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা
  • মধ্যপ্রাচ্য, বিশেষত গাজা-ইরান-ইসরায়েল সংকট

ড. মঈন খান বলেন, বৃটেন হচ্ছে গণতন্ত্রের সূতিকাগার। তারা যদি সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে না চায়, তাহলে আর কে চাইবে? এখানে কোনো দ্বিমত থাকতে পারে না।

তিনি মন্তব্য করেন, বাংলাদেশে জবাবদিহিতা না থাকায় সরকার একচ্ছত্র ক্ষমতাধর হয়ে উঠেছে। গণতন্ত্রের মূল হচ্ছে জবাবদিহিতা। যতদিন জবাবদিহিতা থাকবে না, ততদিন সরকারপ্রধান অপ্রতিরোধ্য থেকে যাবেন। জবাবদিহিতা থাকলে প্রধানমন্ত্রীও এইভাবে একক ক্ষমতার অধিকারী হয়ে উঠতেন না।

তিনি দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পরিবর্তনের আহ্বান জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতিকে দাবিদাওয়া আর প্রতিক্রিয়ার চক্র থেকে বের হতে হবে। দরকার পারস্পরিক সমঝোতার মনোভাব।

নির্বাচন প্রসঙ্গে ড. মঈন খান বলেন, নতুন প্রজন্ম যারা গত ১৭ বছর ভোট দিতে পারেনি, তারা এখন অধীর আগ্রহে ভোট দিতে চায়। দেশের ১২ কোটি ভোটার ভোট দিতে চায়। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে যখন ভোটের তারিখ ঘোষণা করা হয়, তখন জনগণের মধ্যে এক ধরনের উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়ে। আমি নিজের চোখে গ্রামে গিয়ে সেই উচ্ছ্বাস দেখেছি।

বিশ্ব রাজনীতি ও সংঘাত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতার সূত্রপাত গাজার পরিস্থিতি থেকে হয়েছে। ইরান-ইসরায়েল সংঘাত নতুন করে উদ্বেগ বাড়িয়েছে। এতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ, আর লাভবান হচ্ছে অস্ত্র ব্যবসায়ীরা।

মঈন খান বলেন, আমরা যুদ্ধ চাই না, আমরা শান্তিপূর্ণ একটি পৃথিবী দেখতে চাই। আমরা সবার সঙ্গে বন্ধুত্বে বিশ্বাস করি।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়