শিগগিরই দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা হবে: খালেদা জিয়া

কথা বলছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, “খুব শিগগিরই আমরা বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত দেখতে পাব–এই হোক শহীদ জিয়ার শাহাদাৎ বার্ষিকীতে আমাদের অঙ্গীকার।”
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বৃহস্পতিবার রাজধানীর আইইবি মিলনায়তনে দলের আলোচনা সভায় ভিডিও কলে যুক্ত হয়ে এই বক্তব্য দেন খালেদা জিয়া।
তিনি বলেন, “যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা আর সার্বভৌমত্ব রক্ষার লড়াইয়ে তিনি (জিয়াউর রহমান) শাহাদাৎ বরণ করেছেন সেই গণতন্ত্রের নিরবচ্ছিন্ন যাত্রা আজো বাধাগ্রস্ত হচ্ছে প্রতি পদে পদে।”
‘গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার’ এই যাত্রায় ‘সুশৃঙ্খলভাবে এগিয়ে চলতে বিএনপির সকল পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান দলের চেয়ারপারসন।
তিনি বলেন, “মনে রাখবেন, সবার জন্য গণতন্ত্র ও উন্নয়নের মাধ্যমে সকল সমস্যার সমাধানের যে রাজনীতি শহীদ জিয়া রেখে গেছেন, তা বাস্তবায়নের মাধ্যমে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে হবে। আমরা তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।”
১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে একদল সেনা সদস্য। এরপর সেনাপ্রধান হন জিয়াউর রহমান।
ওই বছরের ৭ নভেম্বর ‘সিপাহি-জনতার বিপ্লবের’ পর রাষ্ট্রপতি বিচারপতি এএসএম সায়েমের নেতৃত্বে উপ-প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক এবং ১৯৭৭ সালের ২১ এপ্রিল প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক হিসেবে জিয়া ক্ষমতা গ্রহণ করেন। রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন ১৯৭৮ সালের ২১ এপ্রিল।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রকে আরও তুলা, তেল ও গ্যাস কেনার প্রস্তাব দিলো বাংলাদেশ
১৯৮১ সালের ৩০ মে রাষ্ট্রপতি থাকা অবস্থায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে এক দল সৈন্যের গুলিতে নিহত হন প্রেসিডেন্ট জিয়া।
সেদিনের ঘটনা স্মরণ করে জিয়ার স্ত্রী খালেদা বলেন, “প্রতি বছর মে মাসের এই দিনটি আমাদের পরিবারে আসে এক বেদনা বিধুর স্মৃতি নিয়ে। এদিনে শুধু আমাদের পরিবার নয়, বরং সমগ্র দেশই হয়ে উঠেছিলো বেদনার্ত ও অভিভাবকহীন।
“আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের জন্মের সাথে জড়িয়ে থাকা এক অবিচ্ছেদ্য নাম শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। যে চট্টগ্রাম থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা করে তিনি এদেশের সাথে তার নাম অবিচ্ছেদ্য করেছিলেন, সেই চট্টগ্রামে এক সফল, সৎ, দূরদর্শী প্রকৃত দেশপ্রেমিক প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন।”
খালেদা জিয়া বলেন, “এদেশে গণতন্ত্র, স্বাধীনতা, সংবাদপত্র ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, স্বনির্ভরতা, উন্নয়ন এবং নিজস্ব জাতীয়তাবাদ সৃষ্টির অন্যন্য রূপকার শহীদ জিয়া।”
জিয়াউর রহমানের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকীর এই আলোচনা সভা হয় রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে।গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা’ থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন সভার প্রধান অতিথি খালেদা জিয়া।
এর আগে সবশেষ তিনি জিয়ার মৃত্যুবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কারাগারে যাওয়ার আগে, ২০১৭ সালে।
লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ার তারেক রহমান। তিনি ছিলেন সভার প্রধান আলোচক। আর সভাপতিত্ব করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডের ব্যাংককে অবস্থানরত ফখরুলও সেখান থেকে ভিডিও কলে সভায় যুক্ত হন।
দলের প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আবদুল মঈন খান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান বক্তব্য দেন।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এনডি