ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় প্লান্ট স্থাপন করবে সরকার

ছবি: সংগৃহীত
দেশে পুরনো ল্যাপটপ, কম্পিউটার ঢোকার পথ বন্ধ হচ্ছে। কারণ এগুলো ইলেক্ট্রনিক হ্যাজার্ড তৈরি হচ্ছে। চীনের সহায়তায় দেশের কোনও হাইটেক পার্কে ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্ল্যান্ট তৈরির কথা ভাবা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যব। দুপুরে রাজধানীতে শুরু হওয়া বিপিও সস্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা জানান।
তিনি বলেছেন, দেশে শিগগিরই স্ট্রাইপ আসছে। গুগল পে চালুর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আলি পে একটি কৌশলগত অবস্থানে থেকে দেশে চালু আছে। তবে এখনই কথা দিতে পারছি না পেপাল কবে আসবে। তবে আমরা পেপালকে আনার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তাদের জুম প্ল্যাটফর্ম আছে। সেটা দিয়েও কাজ করা যাবে।
শনিবার (২১ জুন) ঢাকার ইসিবি চত্ত্বরের কাছে সেনাপ্রাঙ্গণে শুরু হয়েছে আউটসোর্সিং শিল্প-ভিত্তিক আয়োজন বিপিও সামিট বাংলাদেশ ২০২৫। বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অফ কন্ট্যাক্ট সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং (বাক্কো)-এর আয়োজনে, ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে বিজনেস প্রোমোশন কাউন্সিল-এর সহযোগিতায় আয়োজিত হচ্ছে এই সামিট যা শেষ হবে আগামী ২২ জুন।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী পর্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাক্কোর সভাপতি তানভীর ইব্রাহীম। তিনি বলেন, বিপিও সামিট কেবল একটি ইন্ডাস্ট্রি সম্মেলন নয়, এটি আমাদের আত্মবিশ্বাস, সক্ষমতা ও ভবিষ্যত প্রত্যাশার সম্মিলিত ঘোষণা। আমরা বিশ্বাস করি, এই আয়োজন দেশের তরুণদের প্রযুক্তিভিত্তিক কর্মসংস্থান ও উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
আরও পড়ুন: সরকার কি মোবাইল অপারেটরদের ভয় পায়?
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শিল্প মন্ত্রণালয় এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান। তিনি বলেন, বিপিও খাত এখন কেবল আউটসোর্সিং নয়, এটি মানবসম্পদ ও অর্থনৈতিক রূপান্তরের প্রতীক। এই শিল্পের বিকাশে সরকার সর্বাত্মক সহযোগিতা করে যাবে।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী। তিনি বলেন, আমরা প্রযুক্তিকে কেবল খাত হিসেবে দেখি না, এটি আমাদের উন্নয়ন দর্শনের কেন্দ্রবিন্দু। এই সামিট ভবিষ্যতের অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রযুক্তি অর্থনীতির ভিত্তি গড়ে তুলবে।
সম্মানিত অতিথি হিসেবে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যব বলেন, বিপিওতে যদি জেনারেটিভ এআইকে আপনি অ্যাকোমোডেট করতে না পারেন, তাহলে আগামী ২ বছরের মধ্যে আপনি বিজনেস থেকে সরে যাবেন। আপনি আজ যেখানে আছেন সেখানে যদি স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন তাহলে আপনার ব্যবসায়ে আপনি থাকতে পারবেন না।
তাই আমাদের দাঁড়িয়ে না থেকে দেখতে হবে যে, চায়না কি করছে, ভারত কি করছে, ভিয়েতনাম, ফিলিপাইন কি করছে। আপনারা যদি তা করেন তাহলে সরকারের সাথে আপনারা যখন আলোচনায় আসবেন তখন আপনারা সরকারকে সঠিক পলিসির জন্য চাপ দিতে পারবেন বা আদায় করে নিতে পারবেন।
তিনি বলেন, আমি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে বলে দিয়েছি যে দেশে গতানুগতিক রিফার্বিশ ল্যাপটপ বা পিসি ঢুকছে সেটা বন্ধ করে দিন। আপনারা বরং জিপিইউ বা সিপিইউ নিয়ে আসেন।
পলিসির বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা এআই পলিসি নিয়ে কাজ করছি। খুব দ্রুতই টেলিকমের নতুন পলিসি চলে আসবে।রফতানিতে প্রণোদনা বাড়ানোর জন্য তিনি পদ্ধতিগত কৌশলের খোঁজে আছেন বলে জানিয়েছেন।
ধন্যবাদ জ্ঞাপন পর্বে বাক্কোর সাধারণ সম্পাদক ফয়সল আলিম বলেন, ফ্রিল্যান্সার, উদ্যোক্তা ও তরুণদের দক্ষতা বিকাশে সামিটে আয়োজিত সেমিনার ও পলিসি সংলাপ ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় গুরুত্বপূর্ণ দিক নির্দেশনা দেবে। তিনি অনুষ্ঠানে আগত সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
উদ্বোধনী পর্বের পর দিনব্যাপী চলে সেমিনার ও ওয়ার্কশপ, যেখানে বিভিন্ন দেশের প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ, উদ্যোক্তা ও কূটনৈতিক প্রতিনিধিগণ অংশ নেন। এতে আলোচনা হয় বৈশ্বিক বিপিও চাহিদা, বাংলাদেশের অবস্থান, এবং তরুণদের ভবিষ্যৎ প্রস্তুতি নিয়ে।
উল্লেখ্য, অনুষ্ঠানে স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপ হিসেবে থাকছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এবং সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে থাকছে বাংলাদেশ আইসিটি জার্নালিস্ট ফোরাম (বিআইজেএফ) ও টেকনোলজি মিডিয়া গিল্ড বাংলাদেশ (টিএমজিবি)।
নিউজবাংলাদেশ.কম/এমএএইচ/এনডি