News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১০:২০, ২৮ মে ২০২৫

১৩ বছর পর কারামুক্ত আজহারুল ইসলাম

১৩ বছর পর কারামুক্ত আজহারুল ইসলাম

ছবি: সংগৃহীত

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতা এটিএম আজহারুল ইসলাম প্রায় ১৩ বছর কারাভোগ শেষে অবশেষে মুক্তি পেয়েছেন। 

বুধবার (২৮ মে) সকাল ৯টা ২৫ মিনিটে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) প্রিজন সেল থেকে তিনি মুক্তি পান।

এর আগে মঙ্গলবার (২৭ মে) আপিল বিভাগ এক ঐতিহাসিক রায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ২০১৪ সালের দেওয়া মৃত্যুদণ্ড বাতিল করে তাকে খালাস দেন। প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ সর্বসম্মতভাবে রায় প্রদান করেন। 

আদালতের রায়ে বলা হয়, আপিলকারীর দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পেছনে ছিল ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থার মৌলিক নীতিমালার স্পষ্ট লঙ্ঘন, যা ন্যায়বিচারকে ব্যাহত করেছে। পুঙ্খানুপুঙ্খ পুনর্মূল্যায়নের পর আদালত মনে করে, তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের প্রমাণ যথাযথভাবে মূল্যায়ন হয়নি।

রাতেই রায়ের সংক্ষিপ্ত অনুলিপি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার হয়ে বিএসএমএমইউ-তে পাঠানো হয়। কারা কর্তৃপক্ষের যাচাই-বাছাই শেষে বুধবার সকালে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়। 

নিরাপত্তাজনিত কারণে রাতেই মুক্তি না দিয়ে সকালে তার মুক্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানান ঢাকা বিভাগের কারা উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজন্স) মো. জাহাঙ্গীর কবির। 

আরও পড়ুন: মানবতাবিরোধী মামলায় খালাস পেলেন জামায়াত নেতা আজহার

মুক্তির সময় হাসপাতালের বাইরে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা আবদুল হালিম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নেতা ডা. আবদুল মান্নান, ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল নুরুল ইসলাম সাদ্দামসহ দলটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। তারা আজহারুলকে ফুলেল শুভেচ্ছায় বরণ করে নেন।

মুক্তি পাওয়ার পর তিনি সরাসরি শাহবাগে জামায়াতে ইসলামীর আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

২০১২ সালের ২২ আগস্ট ঢাকার মগবাজারের নিজ বাসা থেকে গ্রেপ্তার হন তৎকালীন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলাম। এরপর থেকে তিনি কারাবন্দি ছিলেন। ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তাকে রংপুর অঞ্চলে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য মৃত্যুদণ্ড দেন। 

অভিযোগে বলা হয়, তিনি ১২৫৬ জনকে হত্যা বা গণহত্যা, ১৭ জনকে অপহরণ, একজনকে ধর্ষণ, ১৩ জনকে নির্যাতনসহ শত শত বাড়িতে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগে অংশ নিয়েছিলেন। নয় ধরনের অভিযোগের মধ্যে পাঁচটিতে তাকে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।

২০১৫ সালের ২৮ জানুয়ারি তিনি ৯০ পৃষ্ঠার মূল আপিলসহ ২৩৪০ পৃষ্ঠার দলিল যুক্ত করে খালাস চেয়ে আপিল করেন। ২০১৯ সালে আপিল বিভাগ প্রথম দফায় ট্রাইব্যুনালের রায় বহাল রাখলেও পরবর্তীতে রিভিউ আবেদনের পর ২০২4 সালের আগস্টে সরকার পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে দ্বিতীয় দফায় আপিলের সুযোগ পান তিনি। এই মামলায় রিভিউ পরবর্তী আপিলে খালাস পাওয়া এটিই প্রথম ঘটনা।

এই মামলাকে জামায়াতে ইসলামী দীর্ঘদিন ধরে ‘প্রহসনের রায়’ বলে আখ্যায়িত করে আসছিল। দলটির দাবি ছিল, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এই মামলা দায়ের ও রায় প্রদান করা হয়েছে।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়