News Bangladesh

নিউজ ডেস্ক || নিউজবাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১৯:২৮, ২৭ মে ২০২৫

নির্বাচনের রোডম্যাপ না থাকায় হতাশ বিএনপি

নির্বাচনের রোডম্যাপ না থাকায় হতাশ বিএনপি

ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সুস্পষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা না আসায় গভীর হতাশা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। 

একইসঙ্গে চলমান অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রম ও অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলে দলটি জানিয়েছে, ডিসেম্বর ২০২৫-এর মধ্যে একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ছাড়া সরকারের প্রতি সহযোগিতা বজায় রাখা তাদের পক্ষে কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।

মঙ্গলবার (২৭ মে) বিকেলে রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন লিখিত বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

ড. মোশাররফ জানান, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের আহ্বানে গত ২৪ মে বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে। একই দিনে আরও দুটি দল এবং পরদিন অন্তত ২০টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তিনি বৈঠক করেন। এসব আলোচনার পর সরকারের পক্ষ থেকে প্রেস সচিবের মাধ্যমে যে বক্তব্য প্রকাশ করা হয়, তাতে নির্বাচন নিয়ে কোনো রোডম্যাপ না থাকায় বিএনপি হতাশ।

মোশাররফ বলেন, আমরা প্রত্যাশা করেছিলাম একটি নির্দিষ্ট পরিকল্পনা, একটি আশ্বাস। কিন্তু সরকার এমন কোনো বার্তা দেয়নি যা জনআস্থার প্রতীক হতে পারে।

বিএনপি নেতা বলেন, আমরা বরাবরই সরকারকে সহযোগিতা করেছি, এখনো করছি। কিন্তু সরকার যদি জনগণের দাবি অগ্রাহ্য করে, তাহলে আমাদের সহানুভূতিশীল অবস্থান ধরে রাখা কঠিন হবে। 

তিনি উল্লেখ করেন, স্বচ্ছ নির্বাচনের পথ প্রশস্ত না হলে সরকার যে ‘পরাজিত শক্তি ও বিদেশি ষড়যন্ত্রে’ আক্রান্ত বলে দাবি করছে, তা বরং আরও উসকে উঠবে। 

আরও পড়ুন: আমরা ভুলের ঊর্ধ্বে দাবি করি না, নিঃশর্ত মাফ চাই: জামায়াত আমির

বিএনপির মতে, রাজনৈতিক সংস্কার, নির্বাচন ও বিচার—এই তিনটি প্রক্রিয়া একসঙ্গে চালিয়ে যাওয়া সম্ভব এবং প্রয়োজনীয়। 

খন্দকার মোশাররফ বলেন, পতিত ফ্যাসিবাদী শক্তি এবং মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্তদের বিচার চলমান থাকবে, তাতে নির্বাচন বিঘ্নিত হওয়ার কথা নয়।

তিনি অভিযোগ করেন, সরকারের কিছু উপদেষ্টা নিরপেক্ষতা হারিয়ে ফেলেছেন এবং তাদের বিতর্কিত ভূমিকার কারণে জনগণের আস্থা ক্ষুণ্ন হচ্ছে। এসব উপদেষ্টার অপসারণের মাধ্যমে সরকার নিজের গ্রহণযোগ্যতা পুনঃস্থাপন করতে পারে।

মোশাররফ বলেন, সম্প্রতি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের সভা শেষে উপদেষ্টা পরিষদের যে বিবৃতি এসেছে তা অস্পষ্ট, বিভ্রান্তিকর এবং দায়িত্বহীন। 

সরকারের নিজের ব্যর্থতাকে ‘পরাজিত শক্তি’র ষড়যন্ত্র বলে চালানো অনাকাঙ্ক্ষিত বলে জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির নেতারা ফ্যাসিবাদবিরোধী বৃহত্তর জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানিয়ে বলেন, জুলাই ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানের চেতনা ধারণ করে এখনই সময় গণতান্ত্রিক রূপান্তরকে ত্বরান্বিত করার। 

তারা উল্লেখ করেন, একটি নির্বাচিত সরকার ছাড়া জনআস্থা ফিরবে না এবং অর্থনীতি, আইনশৃঙ্খলা ও রাষ্ট্রের কার্যকারিতা দীর্ঘমেয়াদে হুমকির মুখে পড়বে।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে আদালতের রায় অনুযায়ী গেজেট প্রকাশিত হলেও বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের শপথ না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। দলটি আশা প্রকাশ করেছে, সরকার কালবিলম্ব না করে তার শপথগ্রহণ নিশ্চিত করবে।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমেদ, বেগম সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়