বাংলাদেশকে ম্যানুফ্যাকচারিং হাবে উন্নীত করতে চীনের প্রতি আহ্বান

ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশকে একটি আঞ্চলিক ম্যানুফ্যাকচারিং হাবে রূপান্তর করতে চীনা বিনিয়োগকারীদের প্রতি বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
রবিবার (১ জুন) রাজধানীর মাল্টিপারপাস হলে আয়োজিত দিনব্যাপী চীন-বাংলাদেশ ব্যবসা ও বিনিয়োগ সম্মেলন–এর উদ্বোধনী অধিবেশনে এ আহ্বান জানান তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ হচ্ছে তরুণ ও কর্মক্ষম জনশক্তির দেশ। আমাদের মোট জনশক্তির প্রায় অর্ধেকের বয়স ২৬ বছরের নিচে। এ বিশাল জনশক্তিকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে বিপ্লব ঘটাতে পারে।
চীন ও বাংলাদেশের সরকারের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েনতাও, বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েনসহ দুই দেশের ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগ সংশ্লিষ্ট নীতিনির্ধারকরা।
ড. ইউনূস চীনা বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে বলেন, তৈরি পোশাক, কৃষি, জ্বালানি, তথ্যপ্রযুক্তি এবং বিশেষভাবে পাট খাতে বাংলাদেশে রয়েছে অপার সম্ভাবনা। বাংলাদেশে বিনিয়োগের মাধ্যমে শুধু আপনাদের ব্যবসার প্রসার ঘটবে না, বরং এই দেশের অর্থনীতিতেও আসবে নতুন গতি।
আরও পড়ুন: চাকরি অধ্যাদেশে অপপ্রয়োগের আশঙ্কা, বাতিলের দাবি
তিনি বিশেষভাবে পাট শিল্পের সম্ভাবনা তুলে ধরে বলেন, পাট বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী একটি প্রাকৃতিক সম্পদ। অথচ বিশ্বব্যাপী পরিবেশবান্ধব উপকরণের চাহিদা বাড়লেও আমরা এখনো একে কেবল বস্তা তৈরির কাঁচামাল হিসেবে দেখে থাকি। সময় এসেছে পাটকে আধুনিক শিল্পপণ্য তৈরিতে ব্যবহারের।
অধ্যাপক ইউনূস তার বক্তব্যে ঢাকাই মসলিন ও জামদানির মতো ঐতিহ্যবাহী শিল্পের কথাও স্মরণ করে বলেন, আমাদের ঐতিহ্য ও দক্ষতা একত্র করে আমরা এমন এক শিল্পভিত্তিক অর্থনীতি গড়ে তুলতে পারি, যা পরিবেশবান্ধব ও দীর্ঘস্থায়ী উন্নয়নের পথে আমাদের এগিয়ে নিয়ে যাবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এবারের সম্মেলনে চীনের প্রায় ১০০টি কোম্পানি থেকে ২৫০ জনের অধিক বিনিয়োগকারী ও উদ্যোক্তা অংশগ্রহণ করেন। সম্মেলনে তারা বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতের বাজার সম্ভাবনা, নীতিনির্ধারণী সহায়তা ও অবকাঠামোগত সুবিধা নিয়ে মতবিনিময় করেন।
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ বিনিয়োগ অংশীদারে পরিণত হয়েছে। বিদ্যুৎ, অবকাঠামো, বন্দর উন্নয়ন এবং শিল্প নগরী গঠনে চীনা বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বাড়ছে। তবে এবার সরকার বিশেষভাবে শ্রমনির্ভর উৎপাদন খাতে আরও বেশি চীনা বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে চায়, যাতে দেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়ানো যায়।
নিউজবাংলাদেশ.কম/পলি